Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Suvendu Adhikari

Bengal polls: হলদিয়াতেও ভোটার শুভেন্দু, নন্দীগ্রাম থেকে নাম কাটার আর্জি নিয়ে কমিশনে তৃণমূল 

ভোটার তালিকায় কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন এবং মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শুভেন্দু ‘মিথ্যা তথ্য’ দিয়েছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২১ ১৫:২৯
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনোনয়নে ত্রুটির অভিযোগ এনেছিল বিজেপি। আরও নির্দিষ্ট করে বললে সেই অভিযোগ এনেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এ বার সেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধেও নির্বাচন কমিশনকে ‘ভুল ও মিথ্যা’ তথ্য দেওয়ার অভিযোগ তুলল তৃণমূল। নন্দীগ্রাম এবং হলদিয়া— দুই বিধানসভা কেন্দ্রেই শুভেন্দুর নাম রয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বুধবার কমিশনে নালিশ ঠুকলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোটার তালিকায় কেন্দ্র পরিবর্তন এবং মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা তথ্য’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে। যদিও বিজেপি নেতৃত্ব বা শুভেন্দু নিজে এ নিয়ে দুপুর পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।

নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে প্রার্থীর মনোনয়নপত্রে শুভেন্দু ঘোষণা করেছেন, তিনি ২১০ নম্বর নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার। যার সিরিয়াল নম্বর ৬৬৯। পার্ট নম্বর ৭৬। তৃণমূলের অভিযোগ, শুধু নন্দীগ্রাম নন। শুভেন্দু হলদিয়া বিধানসভা কেন্দ্রেরও ভোটার (সিরিয়াল নম্বর ৩০৫)। ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধি আইনের ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার প্রমাণ মিললে এক বছরের কারাদণ্ড পর্যন্ত শাস্তির বিধান রয়েছে। সেই বিষয়টি উল্লেখ করে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে অভিযোগপত্রে।

শুভেন্দু হলদিয়া কেন্দ্রের ভোটার ছিলেন। এ বছরই সেখান থেকে নিজের নাম পরিবর্তন (ট্রান্সফার) করে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে আনার জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদনমতোই তাঁর নাম নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় চলে আসে। কিন্তু একইসঙ্গে হলদিয়া কেন্দ্রেও নাম থেকেই যায়। সেই নাম কাটা পড়েনি বলেই অভিযোগ তৃণমূলের।

অন্য দিকে, ভোটার তালিকায় নাম পরিবর্তনের জন্য ৬ নম্বর ফর্মে যে আবেদন করেছিলেন শুভেন্দু, তাতেও ‘মিথ্যা তথ্য’ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যা তুলনায় গুরুতর। ওই আবেদনপত্রে শুভেন্দু তাঁর স্থায়ী ঠিকানা দিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের নন্দনায়েকবাড় গ্রামের মৃণাল বেরার বাড়ি। তৃমমূলের বক্তব্য, আইন অনুযায়ী কোনও এলাকার ভোটার হতে গেলে অন্তত ছ’মাস ওই এলাকায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে হয়। আবেদনের পর ব্লক লেভেল অফিসার (বিএলও) ঠিকানা খতিয়ে দেখেন। সব ঠিক থাকলে আগের কেন্দ্র থেকে নাম বাতিল করে নতুন কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করা হয়।

তৃণমূল অভিযোগ তুলেছে, কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদনপত্রেও ‘মিথ্যা তথ্য’ দিয়েছেন শুভেন্দু। প্রমাণ হিসেবে বিএলও বিজলি গিরিরায়ের সরেজমিন পরিদর্শনের রিপোর্টের কপি অভিযোগপত্রের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে তৃণমূল। তাতে বিএলও লিখেছেন, ‘আবেদনকারী (এ ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারী) নন্দনায়েকবাড় গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা নন। তিনি গত ছ’মাসে শুভেন্দুকে মৃণাল বেরার বাড়িতে কোনও দিন দেখেননি। তাই তিনি এই এলাকার ভোটার হিসেবে গণ্য নন। ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য প্রয়োজনীয় দু’টি সরকারি নথিও নেই বলে রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন বিজলি’।

মনোনয়ন ও ভোটার তালিকায় কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদনপত্রে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার জন্য শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনার আর্জি রয়েছে তৃণমূলের অভিযোগপত্রে। স্বাভাবিক নিয়মে এক কেন্দ্র থেকে অন্য কেন্দ্রে নাম পরিবর্তন করলে পুরনো কেন্দ্রের ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটা পড়ার কথা। এ ক্ষেত্রে তা হয়নি বলেই অভিযোগ। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বিএলও তাঁর রিপোর্টে শুভেন্দুর ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন খারিজ করার পর অনলাইনে আবেদন করেন তিনি। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই তাঁর নাম নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অনলাইনে এই সব আবেদন খতিয়ে দেখে ফের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE