Advertisement
E-Paper

এত দিন কী করছিলেন, দিদিকে প্রশ্ন রাহুলের

প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে নারদ-কাণ্ডের কথা প্রকাশ্যে এলে তিনি ভেবে দেখতেন বলে মন্তব্য করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই পাল্টা তোপ দেগে রাহুল গাঁধী বললেন, জেনেশুনেই দুর্নীতির প্রশ্নে চোখ বুজে ছিলেন তৃণমূল নেত্রী! রাজ্যে বাম ও কংগ্রেসের জোট সরকারই ক্ষমতায় এসে সারদা, নারদ-সহ দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত করবে বলে আশ্বাস দিলেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:২১
কালীগঞ্জের সভায় রাহুল গাঁধী ও অধীর চৌধুরী। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

কালীগঞ্জের সভায় রাহুল গাঁধী ও অধীর চৌধুরী। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে নারদ-কাণ্ডের কথা প্রকাশ্যে এলে তিনি ভেবে দেখতেন বলে মন্তব্য করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই পাল্টা তোপ দেগে রাহুল গাঁধী বললেন, জেনেশুনেই দুর্নীতির প্রশ্নে চোখ বুজে ছিলেন তৃণমূল নেত্রী! রাজ্যে বাম ও কংগ্রেসের জোট সরকারই ক্ষমতায় এসে সারদা, নারদ-সহ দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত করবে বলে আশ্বাস দিলেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি।

রাজ্যে দ্বিতীয় বারের প্রচারে এসে সোমবার মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ, কান্দি ও নদিয়ার কালীগঞ্জে তিনটি সভা করেছেন রাহুল। প্রতিটি সভাতেই ভিড় হয়েছিল বিপুল। জনতার উচ্ছ্বাসের মধ্যে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের দুর্নীতিকে নিশানা করেছেন তিনি। বোঝাতে চেয়েছেন, আগে জানলে ব্যবস্থা নিতাম— এই কথা বলে মমতা আসলে ভোটের সময়ে জনতাকে বোকা বানাতে চাইছেন! রাহুলের কথায়, ‘‘সারদার কারবার যখন রাজ্যে চলছিল, তখন কী করছিলেন? যখন টিভিতে দেখা যাচ্ছে আপনার লোক খুলে আম পয়সা নিচ্ছে, স্টিং অপারেশনে ধরা পড়ল, তখনই আপনার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। যেমন মোদী কোনও কিছুর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি, তেমনই মমতাজিও তৃণমুলের লোক যখন টিভিতে পয়সা নিচ্ছিল, তখন কোনও ব্যবস্থা নেননি!’’

এ বার বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের মূল বিষয়ই হয়ে উঠেছে দুর্নীতি। প্রথমে রাজ্যে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পরে কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দুর্নীতির প্রশ্নে মুখর হয়ে বিষয়টিকে জাতীয় রাজনীতিতেও চর্চায় এনে দিয়েছেন। রাজ্যের কঠোর বাস্তবের কথা বুঝে মোদী রবিবারই সিন্ডিকেট-রাজ হটানোর ডাক দিয়েছিলেন। রাহুলও এ দিন সেই সুরে গলা মিলিয়েছেন। মমতার উদ্দেশে প্রথমে তিনি প্রশ্ন ছুড়েছেন, ‘‘আপনার সাংসদ, বিধায়ক যে টাকা নিয়েছেন, সেটা কি সাদা টাকা? নাকি কালো টাকা?’’ তার পরেই তাঁর প্রতিশ্রুতি, ‘‘রাজ্যে কিছু দিনের মধ্যে সরকার গড়তে চলেছি। তার পরে সিন্ডিকেট-রাজ, সারদা ও নারদ-কাণ্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

কংগ্রেসের চোখা আক্রমণের দিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও দুর্নীতির প্রশ্নে সরাসরি নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। ফেসবুকে লাইভ চ্যাটে জনতার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পরে আলিমুদ্দিনে এ দিন সূর্যবাবুর মন্তব্য, ‘‘উনি (মমতা) সব কিছু জানেন। সব কিছুর মাথায় তো তিনিই। তিনিই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাভোগী!’’ সারদা থেকে নারদ— কোনও ঘটনাতেই মুখ্যমন্ত্রী কেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি, প্রশ্ন তুলেছেন সূর্যবাবুও।

ঘটনা হল, রাহুল যখন এ বার এসে নারদ তথা দুর্নীতি নিয়ে মমতাকে তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছেন, তার আগেই যথেষ্ট বিপর্যস্ত দশা শাসক শিবিরের। স্বয়ং মমতাই কলকাতায় প্রচারে নেমে বলে ফেলেছেন, নারদের কেলেঙ্কারি আগে জানতে পারলে অভিযুক্তদের তিনি প্রার্থী না করার কথা ভাবতেন! যার মধ্যে চাপের মুখে শাসক দলের সর্বোচ্চ নেত্রীর দিশা হারিয়ে ফেলার ইঙ্গিত স্পষ্ট। ভোটের মাঝে এমন কথা বলে ফেলে ভাইদেরই আসলে পথে বসিয়ে দিয়েছেন দিদি। এমতাবস্থায় রাহুলের আক্রমণের পরে আর পাল্টা আক্রমণে যায়ইনি তৃণমূল! মমতার দলের কাছে যা ইদানীং কালে অভাবনীয়! দলের এক প্রথম সারির নেতা অবশ্য বোঝাতে চেয়েছেন, ‘‘রাহুল গাঁধীর কথায় কেউ বিশেষ গুরুত্ব দেয় না! নতুন করে এই নিয়ে আর বলার কিছু নেই।’’

রাহুল অবশ্য তৃণমূল নেত্রীকে কোনও রেয়াতই করেননি। বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভেঙে পড়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, পাঁচ বছর ধরে একটা সেতু তৈরি করতে পারেননি। মমতার দলের এক জনকে ঠিকাদারি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি খারাপ সিমেন্ট, খারাপ মশলা সরবরাহ করেছেন। ভুল পদ্ধতিতে তৈরি উড়ালপুল ভেঙে পড়েছে। রাহুলের প্রশ্ন, ‘‘এখন মমতাজি বলছেন, ‘আমাকে ভোট দাও। ক্ষমতায় এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’ কেন আগে ব্যবস্থা নেননি? কেন দোষীদের বাঁচাতে চেয়েছেন?’’ ভরা মাঠে কংগ্রেস সহ-সভাপতির আহ্বান, ‘‘এই মমতাজি’কে হারাতে হবে আমাদের!’’ রাহুলের প্রচারে এ দিন সঙ্গী ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য।

assembly election 2016 Rahul Gandhi mamata banerjee TMC Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy