Advertisement
E-Paper

রানি কার, নাড়ি টিপেই বুঝতে চাইছেন ডাক্তার

তিনি হৃদ্-বিশেষজ্ঞ। এত দিন নাড়ি টিপে, স্টেথো লাগিয়ে, ব্লাড প্রেশারের বেলুন টিপে দেখেছেন স্বাস্থ্য। এ বার ইভিএমের বোতাম টেপার পালা জনতার।

সুজাউদ্দিন

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৬ ০২:১৯

তিনি হৃদ্-বিশেষজ্ঞ।

এত দিন নাড়ি টিপে, স্টেথো লাগিয়ে, ব্লাড প্রেশারের বেলুন টিপে দেখেছেন স্বাস্থ্য। এ বার ইভিএমের বোতাম টেপার পালা জনতার।

লালবাগ হাসপাতালের সদ্য প্রাক্তন চিকিৎসক হুমায়ুন কবীর এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। মানুষের মনের কথা বুঝতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেম্বার ছেড়ে তাঁকে নামতে হয়েছে মাঠে। দলনেত্রী প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পরে তিনি চরকি-পাক খেয়েছেন বিধানসভা কেন্দ্রের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। কিন্তু হৃদয়ের মাপ নিতে গিয়ে তাঁকে পা ফেলতে হয়েছে মেপে।

হওয়ারই কথা। একে তো প্রার্থী ‘বহিরাগত’ ধুয়ো তুলে তৃণমূলের বড় একটা অংশ ময়দানে নামেনি। তার উপরে প্রতিপক্ষ বাম-কংগ্রেস জোট। গত দুই ভোটের হিসেব বলছে, অন্তত ৭৫ শতাংশ ভোট যাদের হাতে ধরা।

জোটপ্রার্থী, শিক্ষিকা ফিরোজা বেগম গত বিধানসভা ভোটে রানিনগরের হৃদয় জয় করেছিলেন। কিন্তু বামেরা কান ঘেঁষে ছিল। মুখোমুখি লড়াই হলে এ বার তাঁর চাপে পড়ার আশঙ্কা ছিল। জোটের দৌলতে অবশ্য গায়ে হাওয়া দিয়ে ঘুরেছেন তিনি। প্রচারের ফাঁকে স্কুল চত্বরে খাতা-কলম হাতে নিয়ে করে এসেছেন ক্লাসও।

ভৈরবের পাড়ে এই বিধানসভা কেন্দ্রটি সবে পাঁচ বছরে পা রাখল। ২০১০ সালে লালবাগ এবং জলঙ্গি বিধানসভার কিছু অংশ জুড়ে এই কেন্দ্রের জন্ম হয়। প্রথম বার, ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে কেন্দ্রটি দখল করে কংগ্রেস। কিন্তু এলাকার মানুষের একটা বড় অংশের অভিযোগ, উন্নয়নের ছিঁটে- ফোঁটাও পায়নি তারা। তা কার্যত মেনে নিয়ে ফিরোজা বলছেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল জোটে সরকার গড়লেও বঞ্চনা করা হয়েছে এই এলাকাকে। আমার সামান্য ক্ষমতায় যতটুকু সম্ভব করেছি।’’

‘বহিরাগত’ হলেও চিকিৎসক হিসেবেও ইসলামপুরে ভাল পরিচিতি আছে হুমায়ুনের। টানা বিশ বছর মুর্শিদাবাদ জেলায় চাকরির সুবাদে বেশ কিছুদিন রানিনগর এলাকারই ইসলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে ছিলেন তিনি। তার পরেও ইসলামপুরে চেম্বার থাকার দৌলতে তাঁর একটা পরিচিতি আছে।

হুমায়ুনের দাবি, ‘‘দীর্ঘদিন এই এলাকার মানুষের সঙ্গে আছি। তাঁদের সেবা করার মধ্যে দিয়ে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ। ফলে আমার এখানে প্রার্থী হওয়ার একটা বাড়তি সুবিধে আছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘আগের বিধায়ক এই এলাকার কোনও রকম উন্নয়ন করেননি। ফলে মানুষ এ বার বিকল্প চাইছে।’’ ফিরোজা বেগমের পাল্টা দাবি, ‘‘বিধায়ক হিসেবে পাঁচ বছরে বারবার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। মানুষ ফেরাবেন না।’’

এলাকায় কান পাতলে অবশ্য আক্ষেপ শোনা যাচ্ছে। যেমন সার্কিট টুরিজম প্রকল্পে প্রায় কোটি টাকা খরচ করা হলেও ভৈরবের পাড়ে শৌচাগার সমেত পার্কের বেহাল অবস্থা। হারুডাঙা চরে একটি ওয়াচ টাওয়ার সমেত পর্যটনের বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। তা-ও বিশ বাঁও জলে। এই এলাকার খাদি ও রেশম শিল্পের খ্যাতি জগৎজোড়া। অথচ সরকারি উদাসীনতা এবং নকল রেশমের দাপটে শিল্পীরা অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।

ডাক্তার বলছেন, তাঁকে এক বার সুযোগ দিলে ভৈরব দিয়ে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দেবেন। শুনে হাসছেন ফিরোজা। বলছেন, ‘‘পোক্ত জোট হয়েছে। বামেদের সমর্থন পাচ্ছি। জয়ের ব্যবধান কত হবে, তা ছাড়া কিছু ভাবছি না।’’

assembly election 2016 tmc cpm congress bjp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy