অবশেষে ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে বাম আমলের আইনকেই মান্যতা দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ফের সংশোধন করল। ২০১০ সালের আগের আইনকেই স্বীকৃতি দিল এসএসসি।
২০১০-এর আগের আইনে ৬৬টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। এর মধ্যে অমুসলিম জনগোষ্ঠী ছিল ৫৪টি এবং মুসলিম ১২টি। আদালতের সেই নির্দেশকেই মান্যতা দিয়ে এ বার ২০২৫-এ এসএলএসটি (স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট) প্রক্রিয়ায় সংরক্ষিত আসনে আবেদন করতে পারবেন আবেদনকারীরা।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের এক কর্তার বক্তব্য, আপাতত নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০২৪-র ২২ মে হাই কোর্ট থেকে দেওয়া আইনকেই মান্যতা দেওয়া হল। বিষয়টি বিচারাধীন। যদি কোনও পরিবর্তন হয় পরবর্তীকালে সেই মতো নির্দেশিকা পরিবর্তন করা হবে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘এর থেকে প্রমাণিত হল যে বাম আমলে যে সব নিয়মকানুন তৈরি হত তা আটঘাট বেঁধেই হতো। কেউ আইন বা সংবিধানের ঊর্দ্ধে নন। সংখ্যাদ্ধিকের জোরে খেয়ালখুশি অনুযায়ী কাজ করতে গেলে তার পরিনাম এরকমই হয়। এতে সমাজের যে অংশকে প্রলুব্ধ করেছিল সরকার তাদেরই তো সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হল।’’
প্রসঙ্গত, চলতি বছর ২২ থেকে ২৪ জুনের সন্ধ্যা পর্যন্ত আবেদন প্রক্রিয়ার পোর্টাল বন্ধ রাখা হয়েছিল। ২৪ জুন সংশোধন করে পোর্টাল পুনরায় খোলা হয়। সেখানে দেখা যায়, ওবিসি (অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি) প্রার্থীদের জন্য সেখানে আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা রাখা হয়নি। জেনারেল প্রার্থীদের মতোই তাঁদের (ওবিসি প্রার্থীদের) চাকরির জন্য আবেদন করতে হবে। এসএসসির তরফে জানানো হয়েছিল, আদালতে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলে তখনই আবেদনপত্রে ওবিসি তালিকভুক্ত প্রার্থীরা ‘জাতি’ জানিয়ে আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন:
ওই বিজ্ঞপ্তিতে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের জন্য এসএসসির চাকরির পরীক্ষার আবেদনপত্রের দাম ২০০ টাকা ধার্য করা হয়েছিল। জেনারেল প্রার্থীদের পোর্টালে গিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করতে হলে দিতে হবে ৫০০ টাকা। তখন ওবিসিদেরও ওই একই টাকা দিতে হয়। এসএসসি তখন জানিয়েছিল, তাঁদের আবেদনপত্রের মূল্যে ছাড় দেওয়া হয়নি। ওবিসি মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়ার পর এসএসসি ফের আবেদনপত্রের নতুন ‘উইন্ডো’ চালু করা হবে। সেখানে গিয়ে ওবিসি প্রার্থীদের নিজেদের জাতির ক্যাটেগরি পূরণ করতে হবে। যাঁরা ইতিমধ্যে জাতি উল্লেখ করে আবেদন করে ফেলেছেন, পরবর্তী কালে হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বার হলে তা সংশোধন করে দেওয়া হবে।
যদিও এই বিজ্ঞপ্তি জারি করার ১০ দিনের মধ্যেই পুনরায় পরিবর্তন আনল এসএসসি। এ প্রসঙ্গে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের নেতা মেহেবুব মণ্ডল বলেন, ‘‘আদালতের রায় পরস্পর বিরোধী। যখন সংরক্ষণ নিয়ে এত জটিলতা রয়েছে তখন এসএসসি তড়িঘড়ি নিয়োগের আবেদন গ্রহণ করছে কেন! ২০১০-র পর যে সমস্ত প্রার্থী সংরক্ষিত আসনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল তাদের কী হবে। তার জবাব কে দেবে।’’