কলেজ জীবন মানেই মুক্তির স্বাদ! কখনও ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ক্যান্টিনে আড্ডা বা দল বেঁধে হৈহৈ করে সিনেমা দেখতে যাওয়া। বন্ধুদের সঙ্গে অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠা,সমস্ত কলেজ পড়ুয়ারই ভীষণ প্রিয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই পারিবারিক আর্থিক অবস্থার জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করতে হয় পড়ুয়াদের। অনেকে আবার নিজেদের কেরিয়ারের জন্যও এই সময়কে যথাযথ ভাবে কাজে লাগাতে চান। সে ক্ষেত্রে কলেজে ক্লাস করার পর আংশিক সময়ের কাজের খোঁজে থাকেন তাঁরা। সে রকমই কিছু চাকরির খোঁজখবর রইল এই প্রতিবেদনে—
১। কনটেন্ট রাইটিং:
যে সমস্ত পড়ুয়া বাংলা বা ইংরেজি ভাষায় লেখালেখি করতে পছন্দ করেন, তাঁরা ‘কনটেন্ট রাইটিং’-এর কাজের খোঁজ করতে পারেন। নিজস্ব দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে লিখতে পারেন নানা ধরনের ‘কনটেন্ট’। বহু বেসরকারি সংস্থাই যখন খুশি কাজ বা ‘ফ্রিল্যান্স’ কনটেন্ট রাইটারের খোঁজে থাকে। পড়াশুনোর ফাঁকেই করা যায় এই কাজ। লেখা যায় নানা বিষয়ের উপর ব্লগ, স্ক্রিপ্ট, ব্র্যান্ড কপি বা খবর। এই কাজে মাসে ৫,০০০ থেকে ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করার সুযোগ থাকে। শুধু অর্থ উপার্জন নয়, পড়ুয়াদের লেখালিখির দক্ষতাও বৃদ্ধি পায় এর মাধ্যমে।
২। ডেটা এন্ট্রি অপারেটার:
দ্বাদশ পাশ করেই পড়ুয়ারা ডেটা এন্ট্রি অপারেটার হিসাবে বিভিন্ন সংস্থায় আংশিক সময়ের জন্য কাজ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সংস্থার নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ডেটা বা তথ্য বের করে কম্পিউটারের ডেটাশিট-এ ঠিক করে সাজানোর কাজ করতে হয়। এই কাজ করেও পড়ুয়ার মাসে ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা অনায়াসে উপার্জন করতে পারেন।
আরও পড়ুন:
৩। কল সেন্টার কর্মী বা গ্রাহক সেবা কার্যনির্বাহক:
কলেজে পড়াশুনোর পাশাপাশি কল সেন্টার কর্মী বা গ্রাহক সেবা কার্যনির্বাহক হিসাবেও আংশিক সময়ের জন্য কাজ করা যায়। এ জন্য ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্থার গ্রাহকদের পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্যা শুনে সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করতে হয়। আবার কোম্পানির নানা পরিষেবার সম্পর্কে খুঁটিনাটি বোঝাতে হয় গ্রাহকদের। এ জন্য শুধু প্রয়োজন ইংরেজি ভাষার উপর দখল ও কথোপকথনের পারদর্শিতা। এই কাজ থেকেও মাসে ৮,০০০ থেকে ১৯,০০০ টাকা আয়ের সুযোগ থাকে।
৪। গিগ ওয়ার্কার:
বর্তমানে নানা অ্যাপের মাধ্যমে বাড়িতে চটজলদি খাওয়ার থেকে শাকসবজি আনিয়ে নেওয়া যায়। বিভিন্ন ফুড ডেলিভারি সংস্থায় এ জন্য আংশিক বা পূর্ণ সময়ের জন্য কর্মী নিয়োগ করা হয়। এই কাজও করতে পারেন কলেজ পড়ুয়ারা। দিনের মধ্যে কয়েক ঘণ্টা এই কাজের জন্য বরাদ্দ করলেই মাসিক উপার্জন করা সম্ভব। আয়ের পরিমাণ হতে পারে মাসে ৮,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা পর্যন্ত।
৫। গৃহশিক্ষক বা অনলাইন শিক্ষক:
যাঁরা নিজে কোনও বিষয় বুঝে অন্যদের সহজেই বুঝিয়ে ফেলতে পারেন, তাঁরা অনলাইন বা অফলাইনে গৃহশিক্ষকতা করতে পারেন। ভবিষ্যতে শিক্ষকতাকে পেশা হিসাবে বেছে নিতে চাইলেও এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। অতিমারির পর থেকে কোচিং সেন্টার, নিজের বাড়ি ছাড়াও অনলাইনে শিক্ষকদের চাহিদা প্রচুর। তাই পড়ুয়ারা পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যদের পড়িয়েও বেশ কিছু অর্থ উপাৰ্জন করতে পারেন। অনেকের ক্ষেত্রে এই আয়ের পরিমাণ সর্বাধিক ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে!
এ ছাড়াও পড়ুয়ারা আংশিক সময়ের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং, সেলস এগ্জ়িকিউটিভ, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার, ভিডিয়ো এডিটরের মতো নানা কাজ করতে পারেন।