পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে সৌমী চট্টোপাধ্যায় ও সৌনক রায়। ছবি: সংগৃহীত
‘কাজললতা’, ‘বেদেনী মলুয়া’, ‘দুগ্গা দুগ্গা’ প্রভৃতি ধারাবাহিকের পর লম্বা গ্যাপ। আবার টেলিভিশনে প্রযোজক হিসেবে কাজ শুরু করলেন রাজ চক্রবর্তী। তাঁর প্রযোজনায় আসছে নতুন ধারাবাহিক ‘কপালকুণ্ডলা’। সঙ্গে প্রযোজনা সহযোগী থাকছেন শ্যাম আগরওয়াল। বঙ্কিমচন্দ্র’র উপন্যাস কেন বাছলেন?
রাজ চক্রবর্তী বললেন, “কারণ বঙ্কিমচন্দ্রের গল্পের থেকে ভাল গল্প আর হতেই পারে না, এত ড্রামাটিক। আর ‘কপালকুণ্ডলা’ অসাধারণ একটা গল্প, একটা কালজয়ী গল্প।”
উপন্যাসে কপালকুণ্ডলাকে যে সব লোকেশনে দেখা গিয়েছে সিরিয়ালেও কি সেগুলো দেখা যাবে? রাজ বললেন, “চেষ্টা করছি অ্যাচিভ করার। টেলিভিশনের ইনফ্রাস্ট্রাকচারে যতটা সম্ভব সেটা মাথায় রেখে চেষ্টা করছি।”
কপালকুণ্ডলাকে সাগর থেকে কুড়িয়ে পায় কাপালিক। কাপালিকের নরবলি দেখতে দেখতেই বড় হয়ে ওঠে সে। সমাজ, সংসারের সঙ্গে, সামাজিক অনুভূতিগুলোর সঙ্গে তার যোগ প্রায় নেই বললেই চলে। নরবলিও তার কাছে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। কিন্তু জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলা নবকুমার সম্পর্কে নতুন অনুভূতি হতে থাকে তার। নবকুমারকে নরবলির হাত থেকে বাঁচায় সে। এই তিন চরিত্রের টানাপড়েন নিয়েই এগিয়ে চলে গল্প।
উপন্যাসের গল্প সিরিয়ালে ঠিক কী ভাবে দেখব? ধারাবাহিকের চিত্র্যনাট্যকার ঋতম ঘোষাল বলছেন, “বইয়ের শব্দ যখন চিত্রে পরিস্ফুটিত হয় তখন তার ভাষা আলাদা হয়ে যায়। আমাদেরও ঘটনা বা চরিত্র সংযোজন করতে হয়েছে। তবে এমন ভাবার কারণ নেই যে উপন্যাসের গল্প নষ্ট করছি। দেখলেই বোঝা যাবে সংযোজনগুলোও প্রয়োজনীয়।”
সিরিয়ালের পরিচালক অমিত সেনগুপ্ত আগে বঙ্কিমের উপন্যাস-নির্ভর ধারাবাহিক ‘দেবী চৌধুরানী’ পরিচালনা করেছেন। এই অভিজ্ঞতা কি ‘কপালকুণ্ডলা’ পরিচালনায় সাহায্য করছে? তিনি বললেন, “অবশ্যই। ওটা টাফ গল্প ছিল। এটাও টাফ গল্প। কিন্তু আগের অভিজ্ঞতার জন্য বেশি সুবিধা হয়েছে।”
কপালকুণ্ডলার চরিত্রে সৌমী চট্টোপাধ্যায় ও নবকুমারের চরিত্রে সৌনক রায়। ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন: সিনেমায় প্রায় নেই, বিজ্ঞাপনেও দেখা যায় না সে ভাবে, তাও এত বিলাসবহুল জীবন কী ভাবে কাটান রেখা?
কপালকুণ্ডলার ভূমিকায় সৌমী চট্টোপাধ্যায়। ২০১৭-য় ‘ফুলি’ ধারাবাহিকে ফুলি চরিত্র দিয়ে শুরু হয় তাঁর যাত্রা। তিনি শহরের মেয়ে আর কপালকুণ্ডলা থাকেন জঙ্গল ও সমুদ্রের আবহে। কেমন লাগছে? তিনি উচ্ছ্বসিত, “আমার প্রচণ্ড ভাল লাগছে। সমুদ্র, ঝিনুক, গাছপালা, পশুপাখি আমার ভীষণ ভাললাগে।”
পরিচালক অমিত যোগ করলেন, “সৌমী খুব ইনোসেন্ট। এই বিষয়টার সঙ্গে এবং ওর বয়সের সঙ্গে কপালকুণ্ডলার বয়সের সিমিলারিটি আছে। তাতে আমার কাজ করতে খুব সুবিধা হয়েছে। নবকুমারের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে... ও একটু ম্যাচিওরড, চরিত্রটার মতোই। তাই অসুবিধা হয়নি।”
‘রাণী রাসমণি’-র ক্যাপ্টেন স্মিথ হিসেবে কাজ করেছেন। ‘ঠাকুরমার ঝুলি’, ‘মঙ্গলচণ্ডী’ প্রভৃতি ধারাবাহিকেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। এ বার নবকুমারের চরিত্রে সৌনক রায় বলেন, “একটা ভাস্ট এক্সপিরিয়েন্স। আমি আগে মাইথোলজিক্যাল বা পিরিয়ডিক্যাল চরিত্রে কাজ করেছি। সেই জঁর-এ নবকুমার পড়ে। কিন্তু যেহেতু নবকুমার মূল চরিত্র, সে কারণে প্রচণ্ড এক্সাইটেড। চরিত্রটা যদিও পুরনো, কিন্তু আজকের কিছু কিছু অনুভূতি এই চরিত্রটাতেও আছে। যেমন প্রথম দেখাতেই সে কপালকুণ্ডলার প্রেমে পড়ে। লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট... এখনও আছে। সে জন্য রিলেট করতে পারছি কিছুটা হলেও।”
রাজ চক্রবর্তী কী বললেন? সৌমী শেয়ার করলেন, “যখন অডিশন দিতে গিয়েছিলাম, উনি ছিলেন। বললেন, ‘ভরসা করছি তোর ওপর।’ উনি আমাকে প্রচণ্ড ভালবাসেন, স্নেহ করেন।”
সৌনক যোগ করলেন, “আমার যখনই কোনও প্রবলেম হয়েছে রাজদা প্রচণ্ড হেল্প করেছেন। ভীষণ হেল্পফুল। আমাদের টিমের প্রত্যেকেই খুব হেল্প করে।”
আরও পডু়ন: প্রসেনজিৎ-জয়া দু’জনেই বলে চেষ্টা করছি, বলে না সব করে ফেলব: অতনু ঘোষ
চরিত্রাভিনেতাদের সম্পর্কে রাজ বললেন, “এরা প্রত্যেকেই খুব ভাল করছে, ভীষণ ট্যালেন্টেড। বিশেষ করে কপালকুণ্ডলার রোলটা যে করছে সৌমী, ভীষণ ভাল, কপালকুণ্ডলা চরিত্রর জন্য একেবারে আইডিয়াল। আমার এত ভাল লেগেছে ওকে। আমি খুবই হ্যাপি। আমার বিশ্বাস অডিয়েন্সেরও ভাল লাগবে।”
কাপালিকের ভূমিকায় দেখা যাবে দেবজ্যোতি রায়চৌধুরীকে। ধারাবাহিকটি শুরু হচ্ছে আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে। সোম থেকে শনি, রোজ রাত সাড়ে ৮টায় দেখা যাবে স্টার জলসায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy