Advertisement
E-Paper

ক্লাইম্যাক্সের জন্য পোক্ত জমি প্রস্তুত

প্রোফেসর ওরফে সের্জিও ওরফে সালভা স্পেনের রয়্যাল মিন্ট লুটের জন্য টিম তৈরি করে। প্রতিটি সদস্যের কোনও না কোনও এক্স-ফ্যাক্টর আছে।

দীপান্বিতা  মুখোপাধ্যায় ঘোষ     

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২০ ০০:১০

দিস ইজ় ওয়র, অ্যাক্ট অ্যাকর্ডিংলি... প্রোফেসরের এই অমোঘবাণী কাকতালীয় নাকি সমাপতন? সিরিজ়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে কথাগুলো যেন এই সময়ের প্রেক্ষিতে তাৎপর্যপূর্ণ, প্রাসঙ্গিকও বটে। মানি হাইস্টের যুদ্ধ কি শুধুই বহির্শত্রুর সঙ্গে? নিজের সঙ্গেও তো! ডাকাতিকে ঘিরে চারটে সিজ়ন জুড়ে চলা এই সিরিজ় বন্ধুতা, শত্রুতা, মানসিক টানাপড়েনের হাজারও পরত তুলে ধরে। অ্যান্টিহিরো-সাগাকে চিত্তাকর্ষক করে তুলতে যে যে উপাদানগুলো দরকার, এই সিরিজ়ে সব ক’টাই আছে। প্রোফেসর আর তার টিমের সদস্যদের প্রতিরোধ ভেঙে গেলে দর্শকের চিন্তা হয়, কেউ মারা গেলে চোখের জল বাঁধ মানে না... চতুর্থ সিজ়ন বুঝিয়ে দেয়, খেলা আরও বাকি আছে। তবে এই সিজ়নের সমালোচনার পর্বে যাওয়ার আগে, বাকি পর্বগুলোর রিক্যাপ প্রয়োজন।

প্রোফেসর ওরফে সের্জিও ওরফে সালভা স্পেনের রয়্যাল মিন্ট লুটের জন্য টিম তৈরি করে। প্রতিটি সদস্যের কোনও না কোনও এক্স-ফ্যাক্টর আছে। অচেনা একটা টিম ক্রমশ পরিবার হয়ে ওঠে। কেউ কারও আসল নাম-পরিচয় জানে না। টোকিও, রিও, নাইরোবি, ডেনভার, হেলসিঙ্কি, অসলো, বার্লিন... শহরের নামেই তাদের পরিচিতি। তবুও তারা বিপদে কাঁধে কাঁধ মেলায়। আবার প্রয়োজনে একে অপরের দিকে বন্দুক তাক করতেও দ্বিধা করে না। প্রতিটি সিজ়নে মানসিক দ্বন্দ্ব আর সূক্ষ্ম অনুভূতির এক আশ্চর্য মিশেল। যে প্রোফেসর প্রেম না করার পরামর্শ দেয়, সেই জড়িয়ে পড়ে হাইস্টের তদন্তকারী ইন্সপেক্টরের সঙ্গে।

তৃতীয় সিজ়ন শেষ হয়েছিল মোক্ষম জায়গায়। সেখান থেকেই সুতো ছড়িয়েছে চতুর্থ সিজ়ন। ব্যাঙ্ক অব স্পেনের অন্দরে হাইস্ট টিমের সদস্যরা কাণ্ড ঘটাচ্ছে। এ দিকে বাইরে মানসিক ভাবে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় প্রোফেসর ও লিসবন। প্রাক্তন পুলিশ ইন্সপেক্টরকে বর্তমান তদন্তকারী দল সত্যিই এগজ়িকিউট করেছে কি না, তা জানে না কেউ। আগের পর্বগুলোর মতো চোর-পুলিশের চাপানউতোর এখানেও। প্রোফেসরের সিমপ্যাথি-ট্রাম্পকার্ড তাকে একগুচ্ছ ভক্ত জুটিয়ে দিয়েছে। সেই হুজুগেরা ব্যাঙ্কের বাইরে সালভাদোর দালির মুখোশ পরে হাইস্টকে সমর্থন জানাচ্ছে। কিন্তু এ সব তো নগণ্য ফিকির। দাবার চালে একবার সাদা এগোয় তো একবার কালো। সিজ়নের এপিসোড ব্রেকেও টানটান উত্তেজনা। গুলি খেয়ে ছিটকে পড়া নাইরোবির কী হল? প্রোফেসর কি উদ্ধার করতে পারল লিসবনকে? এ লেখায় সে সূত্র থাকা বাঞ্ছনীয় নয়।

মানি হাইস্ট-সিজ়ন ফোর
(ওয়েব সিরিজ়)
ক্রিয়েটার: অ্যালেক্স পিনা
অভিনয়: আলভেরো, উর্সুলা,অ্যালবা, ইতজ়িয়ার, নাজওয়া
৭.৫/১০

প্রতিটি সিজ়নেই মুখ্য চরিত্রদের টক্কর দিয়েছে কোনও না কোনও পার্শ্বচরিত্র। এখানে সেই জায়গাটা পুরোপুরি নিয়েছে তদন্তকারী অফিসার অ্যালিসিয়া (নাজওয়া নিম্রি) কী দাপট, কী দাপট! সোজা বলে দেয়, ‘‘আগে গুলি মারো, তার পর প্রশ্ন করবে।’’ সেই আবার হাইস্ট সদস্যের কফিনবন্দি দেহ দেখে উঠে দাঁড়ায়।

দাবার বোড়ে যে কখন উজিরকেও কোণঠাসা করে দেবে, কেউ জানে না। যেমন গান্ডিয়ার (জোসে ম্যানুয়েল) চরিত্রটা তুমুল সাসপেন্স তৈরি করেছে।

সিরিজ়টি যে ভাবে এগোচ্ছে, তাতে পঞ্চম সিজ়নে সমাপ্তি হলেও হতে পারে। চতুর্থ সিজ়নের শেষ এপিসোড ক্লাইম্যাক্সের জমি একেবারে তৈরি করে দিয়েছে। ‘মানি হাইস্ট’ শেষ হয়ে গেলেও এর চরিত্রেরা থেকে যাবে। সিরিজ়ের ন্যারেটার টোকিয়ো (উর্সুলা কোরবেরো), নাইরোবি (অ্যালবা ফ্লোরেস), লিসবন বা রাকেল (ইতজ়িয়ার ইতুনো) এবং প্রোফেসর (আলভেরো মর্তে) প্রত্যেকেই এত জীবন্ত যে, চরিত্র ছাড়া আর কিছু মনে হয় না তাঁদের। বার্লিনের (পেড্রো আলোন্সো) চরিত্রটিকে দর্শক নিঃসন্দেহে মিস করবেন। তবে এই সিজ়নে ফ্ল্যাশব্যাক জুড়ে তার উপস্থিতি রয়েছে।

‘মানি হাইস্ট’ সিরিজ়ের স্প্যানিশ নাম ‘লা কাসা দে পাপেল’। যার মানে ‘দ্য হাউস অব পেপার’। এমন বাড়ি আর তার বাসিন্দারা তো স্বপ্নের চরিত্রই হয়। তাদের নিয়ে তৈরি সেই কাল্পনিক কাহিনিতে ফাঁকফোকরও আছে। কিন্তু থ্রিলারে গতি আর অভিনেতাদের মুনশিয়ানায় সে সব চোখে লাগে না। কাল্পনিক দুনিয়াতেও লজিক দেখতে হবে না কি! এখন ‘বেলা চাও’-এর সুর গুনগুনিয়ে পরবর্তী সিজ়নের অপেক্ষা…

Money Heist Netflix Spain
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy