ববিতা ও গীতা-র সঙ্গে আমির খান
মেয়ের জন্য লেহেঙ্গা কিনছেন!
রোজ ফোনে কথা বলছেন ডেকরেটরের সঙ্গে!
অতিথিদের আপ্যায়নে যাতে কোনও ত্রুটি না হয় নজর রাখছেন সে দিকেও!
নিজের ‘বড় মেয়ের’ বিয়ে বলে কথা। ব্যস্ত বাবার যে এখন দম ফেলারও সময় নেই। এই তিনি কথা বলছেন পাত্রপক্ষর সঙ্গে, তো পর মুহূর্তেই লোক পাঠাচ্ছেন ব্যাঙ্কে। অর্থ সঙ্কটের সময় সব দিক ঠিকঠাক রাখতে হবে তো। দু’দিন পরই যে বাড়িতে বিয়ে!
গত কয়েক দিন ধরে হরিয়ানার বালালি, ভিওয়ানি, চরকি দাদরি গ্রামের অলি-গলিতে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে একটাই নাম।
আমির খান।
ঠিকই পড়লেন। বিগত কয়েক দিন, গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে ফোন করে ‘বড় মেয়ে’ গীতা ফোগতের বিয়ের নিমন্ত্রণ করেছেন আমির স্বয়ং। বলেছেন, ‘‘আমার মেয়ের বিয়েতে আপনাদের আসা চাই।’’ আর সেই নিয়েই এখন প্রবল কৌতূহল গ্রাম জুড়ে।
রবিবার চরকি দাদরির একটি রিসর্টে কুস্তিগির পবনের সঙ্গে বিয়ে কমনওয়েলথ গেমসের সোনাজয়ী কুস্তিগির গীতার।
পবন
একে তিনি মহাবীর সিংহ ফোগতের মেয়ে, তার ওপর ভারতীয় ক্রীড়া জগতের অন্যতম পরিচিত মুখ। তাঁর বিয়ে নিয়ে উৎসাহ থাকাটা স্বাভাবিক, কিন্তু এখন সে সব ছাপিয়ে ফোকাসে এসে গেছেন আমির। ডিসেম্বরের ২৩ তারিখ মুক্তি পাচ্ছে তাঁর ছবি ‘দঙ্গল’। গীতা-ববিতা ও মহাবীরের জীবন নিয়ে তৈরি এই ছবি ঘিরে ইতিমধ্যেই উৎসাহ তুঙ্গে, এবং সেই কারণেই বাস্তবের গীতার বিয়ের আয়োজনে কোনও ত্রুটি রাখতে চান না আমির। হোক না গীতার আসল বাবার নাম মহাবীর, কিন্তু তাঁর বিয়ের সব দায়িত্বই যে নিজের কাঁধে নিয়েছেন বলিউডের সুপারস্টার। শুক্রবার রাতেই স্ত্রী কিরণ ও ছেলে আজাদকে নিয়ে গীতাদের বালালি গ্রামে পৌঁছে যাচ্ছেন আমির। ‘‘বিয়ের লেহেঙ্গাটাও আমিরজি-ই কিনেছেন। বলেছেন যে, গীতা যেহেতু তাঁরও বড় মেয়ে, তাই বিয়ের দিন সব আচার অনুষ্ঠান মানবেন তিনিও। এমনকী সারাদিন উপোসও থাকবেন,’’ আনন্দplusকে বলছিলেন গীতার ভাই রাহুল।
ইতিমধ্যেই মুম্বই থেকে নিজের প্রোডাকশন ইউনিটের কয়েকজনকে পাঠিয়েছেন বালালি গ্রামে, যাতে বিয়ের আয়োজনে ফোগত পরিবারের কোনও সমস্যা না হয়। ‘‘মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে, আমিরজি না থাকলে এত বড় আয়োজন করা সম্ভবই হতো না হয়তো। সেটে উনি যেমন পারফেকশনিস্ট, বিয়ের ব্যাপারেও প্রতিটা বিষয়েই তাঁর তীক্ষ্ণ নজর,’’ বলছিলেন রাহুল। বিয়ের স্টেজ ডিজাইন থেকে শুরু করে মেনু—সবই নিজের হাতে ঠিক করেছেন আমির ও কিরণ। নিমন্ত্রিতদের কী ভাবে আতিথেয়তা জানানো হবে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অতিথিরা কোথায় থাকবেন, সেই ব্যবস্থাও করছেন আমির।
দিল্লি থেকে চরকি দাদরির দূরত্ব ঘন্টা চারেক, এবং থাকার জন্য রয়েছে মাত্র তিনটে হোটেল। গীতার বিয়ের জন্য সব হোটেলই বুকড। ‘‘দিন কয়েক আগে, আমির খানের ইউনিট থেকে ফোন করে জানানো হয় যে শনিবার ও রবিবার হোটেলের সব ঘর তাঁদের চাই। গ্রামের বাকি হোটেলেও কোনও ঘর নেই,’’ বলছিলেন চরকি দাদরির এক হোটেলের ম্যানেজার সুমিত শেওরান।
অবশ্য শুধু বলিউড বা ক্রীড়া জগৎ নয়, বিয়েতে আমন্ত্রণ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও। ‘‘গেস্ট লিস্টও তৈরি করেছেন আমিরজি। হোটেল বুকিং থেকে শুরু করে গাড়ির ব্যবস্থা—সবই তিনি সামলাচ্ছেন। আমি গীতার বাবা হতে পারি, কিন্তু আমিরজি প্রমাণ করেছেন, উনি গীতাকে আমার চেয়েও বেশি ভালোবাসেন,’’ হেসে বলছিলেন গীতার বাস্তবের ‘বাপু’ মহাবীর।
যদিও এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন আমির স্বয়ং। মুম্বই থেকে তাঁর মুখপাত্র জানালেন গীতার বিয়ের লেহেঙ্গা ইতিমধ্যেই তৈরি। ‘‘বাবা হিসেবে আমিরই ওটা তুলে দেবেন গীতার হাতে,’’ মুখপাত্র বলছিলেন।
নিজের ছবির প্রোমোশন নিয়ে বরাবরই খুঁতখুঁতে আমির। ‘দঙ্গল’এর আগে তাই গীতার বিয়েতেও আসল স্টার সেই তিনি। তবু বিয়ের দিন দুই আগে, এক অন্য আমিরের খোঁজ পেয়েছে ফোগত পরিবার, যিনি নিজের ইমেজ ভেঙে মেয়েদের জন্য সব কিছু করতে পারেন।
সাধে কী আর গীতা-ববিতারা বলছেন, বাপু হো তো অ্যায়সা!
আনাচে কানাচে
সিনেমার মতো: কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত-র ছবি ‘টোপ’য়ের স্ক্রিনিংয়ে পাওলি। ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy