Women Watch X-Rated Videos More Than Men, Adult Site Reveals Shocking Country Rankings dgtl
X-Rated Video Consumption
ছেলেদের ছাপিয়ে ‘দুষ্টু’ ভিডিয়ো দেখায় এগিয়ে মেয়েরা! ‘নীল ছবি’র নেশায় বুঁদ কোন দেশের নারী? তালিকার কোথায় ভারত?
ছেলেদের চেয়ে ঢের বেশি ‘এক্স রেটেড’ ভিডিয়ো দেখছে মেয়েরা। বার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্টে এ বার সেই তথ্য প্রকাশ করল কানাডার প্রাপ্তবয়স্কদের বহুজাতিক ওয়েবসাইট।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:৩৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
যৌনতা নিয়ে কোনও ছুতমার্গ নয়। মেয়েদের মধ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ‘এক্স রেটেড’ ভিডিয়ো দেখার প্রবণতা। বছরের শেষে কানাডার বহুজাতিক পর্ন ওয়েবসাইটের এ-হেন বিস্ফোরক রিপোর্ট ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র তথা দুনিয়া জুড়ে পড়ে গিয়েছে হইচই। কট্টরপন্থীরা নাক সিঁটকোলেও এতে ‘দোষের কিছু নেই’ বলে পাল্টা মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে উদারপন্থীদের।
০২২০
সম্প্রতি ‘বার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্ট’ প্রকাশ করে কানাডার পর্নোগ্রাফিক বহুজাতিক ওয়েবসাইট ‘পর্নহাব’। পরে সেটি প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক পোস্ট নামের গণমাধ্যম। সংশ্লিষ্ট রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ বছর রেকর্ড পরিমাণে মহিলারা ‘এক্স রেটেড’ ভিডিয়ো দেখেছেন। এর সূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রয়েছে।
০৩২০
ওই ওয়েবসাইটের ‘বার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্ট’ অনুযায়ী, এ বছর তাদের ওয়েবসাইটের মোট দর্শকের মধ্যে ৩৮ শতাংশ ছিলেন মহিলা। অর্থাৎ, ২০১৫ সালের চেয়ে পর্নোগ্রাফি ভিডিয়ো দেখা নারীর সংখ্যা বেড়েছে ১৪ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে সংস্থার তরফে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত কয়েক দশক ধরেই পর্নহাবের পরিসংখ্যানবিদেরা মহিলা দর্শকের অনুপাতের দিকে নজর রাখছেন। ফলে কেবলমাত্র পুরুষেরাই ‘এক্স রেটেড’ ভিডিয়ো দেখতে পছন্দ করেন এই ধারণা মিথ্যা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।
০৪২০
কানাডার পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, দক্ষিণ আমেরিকার কলম্বিয়া ও আর্জেন্টিনা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ফিলিপিন্সে ‘এক্স রেডেট’ ভিডিয়োর বেশির ভাগ দর্শকই মহিলা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী মেক্সিকোয় পর্ন দেখার ব্যাপারে নারী-পুরুষের মধ্যে ‘কাঁটে কা টক্কর’ দেখা গিয়েছে। সেখানকার মোট দর্শকের ৪৮ শতাংশ মহিলা বলে বার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্টে উঠে এসেছে।
০৫২০
পর্নোগ্রাফিক ভিডিয়োর দর্শকের সংখ্যার নিরিখে দেশভিত্তিক একটি তালিকাও ‘বার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্টে’ প্রকাশ করেছে পর্নহাব। সেটি হুবহু তুলে দিয়েছে নিউ ইয়র্ক পোস্ট। ওই তালিকা অনুযায়ী, প্রথম তিনটি স্থানে রয়েছে ফিলিপিন্স, কলম্বিয়া এবং আর্জেন্টিনা। এর মধ্যে ম্যানিলার মোট দর্শকের ৬৪ শতাংশ মহিলা। বাকি দু’টি দেশের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ৫৬ শতাংশ। অর্থাৎ, এই সমস্ত রাষ্ট্রে পুরুষদের তুলনায় নারীরা অনেক বেশি ‘এক্স রেটেড’ ভিডিয়ো দেখে থাকেন।
০৬২০
সংশ্লিষ্ট তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে মেক্সিকো। পাঁচ, ছয় এবং সাত নম্বরে থাকা তিনটি দেশ হল চিলি, ইউক্রেন এবং পেরু। যুদ্ধবিধ্বস্ত কিভের মোট পর্ন দর্শকের ৪৬ শতাংশ মহিলা। চিলি ও পেরুর ক্ষেত্রে সংখ্যাটা যথাক্রমে ৪৬ এবং ৪৪ শতাংশ। ব্রাজ়িল, পোল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া আছে অষ্টম, নবম এবং দশম স্থানে। এই তিন দেশের ‘এক্স রেটেড’ ভিডিয়োর মোট দর্শকের যথাক্রমে ৩৮, ৩২ এবং ৩১ শতাংশ নারী বলে জানিয়েছে পর্নহাব।
০৭২০
তালিকায় ১৫ নম্বর স্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম। আমেরিকার আগের চারটি দেশ হল স্পেন, জাপান, ফ্রান্স এবং মিশর। অঙ্কের হিসাবে সেখানকার মহিলাদের পর্নহাব দেখার সংখ্যা যথাক্রমে ৩১ (স্পেন ও জাপান), ৩০ এবং ২৯ শতাংশ। তালিকায় ১৬ থেকে ২০-র মধ্যে রয়েছে কানাডা, ইটালি, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি এবং ব্রিটেন।
০৮২০
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল আমেরিকার চিত্রটা কিন্তু এর চেয়ে বেশ আলাদা। যুক্তরাষ্ট্রের পুরুষদের মধ্যেই পর্ন ভিডিয়ো দেখার প্রবণতা বেশি। পর্নহাবের মোট মার্কিন দর্শনার্থীর মাত্র এক চতুর্থাংশ মহিলা। শতাংশের বিচারে যেটা মাত্র ২৮। তবে সেখানকার যৌনকর্মীদের মধ্যে ‘এক্স রেটেড’ ভিডিয়ো দেখার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
০৯২০
পর্বহাবের রিপোর্ট তুলে ধরে নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, ২০২৫ সালে সংশ্লিষ্ট ভিডিয়োগুলি খুঁজে পেতে আমেরিকার দর্শকের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুসন্ধান শব্দ ছিল ‘ল্যাটিনা’। এ বছর ‘ভারতীয়’ সংক্রান্ত ভিডিয়োগুলির জনপ্রিয়তা অনেকটাই বেড়েছে। মার্কিন রাজ্যগুলির মধ্যে আলাস্কাবাসীরা সর্বাধিক ‘এক্স রেটেড’ ভিডিয়ো পছন্দ করেন বলে জানিয়েছে পর্নহাব।
১০২০
১৮৬৭ সালে রাশিয়ার থেকে জলের দরে কিনে নেওয়া আলাস্কার পরিচয় ‘দ্য লাস্ট ফ্রন্টিয়ার’। কানাডার বহুজাতিক পর্ন ওয়েবসাইটটি জানিয়েছে, সেখানকার বাসিন্দারা ‘এক্স রেটেড’ ভিডিয়ো দেখতে গড়ে ১১ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে থাকেন। সবচেয়ে কম সময় ধরে পর্ন ভিডিয়ো দেখেন লুইজ়িয়ানার মার্কিন বাসিন্দারা। তাঁরা এর জন্য গড়ে সময় দেন মাত্র ৮ মিনিট ৫২ সেকেন্ড।
১১২০
বর্তমানে ফ্লরিডা ও টেক্সাস-সহ একাধিক রাজ্যে পর্নহাবকে নিষিদ্ধ করে রেখেছে মার্কিন সরকার। কিন্তু তার পরেও এর জনপ্রিয়তায় এতটুকু টোল খায়নি। উল্টে চোরাপথে ওই রাজ্যগুলিতেও দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কানাডার ওই বহুজাতিক পর্ন ওয়েবসাইট।
১২২০
পর্নহাবের দর্শকসংখ্যার নিরিখে প্রথম ২০-তে নাম নেই ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, চিন, ইজ়রায়েল, দুই কোরিয়া বা কোনও উপসাগরীয় আরব দেশের। এ বছরের জুলাইয়ে অহেতুক যৌনতা, হিংসা, আপত্তিকর বিষয়বস্তুর বাড়াবাড়ি বন্ধ করতে ২৪টি অ্যাপ এবং ওয়েব প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক।
১৩২০
এ দেশে নিষিদ্ধ হওয়া অ্যাপ ও ওয়েব প্ল্যাটফর্মগুলির তালিকায় নাম রয়েছে ‘অল্ট’, ‘উল্লু’, ‘বিগ শটস অ্যাপ’, ‘দেশি ফ্লিক্স’, ‘বুমেক্স’, ‘নবরস লাইট’ এবং ‘গুলাব’-এর। এদের বিরুদ্ধে ‘সফট পর্ন কনটেন্ট’ দেখানো এবং তা প্রচারের অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০০০ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইন (বিশেষ করে ধারা ৬৭ এবং ৬৭এ), ২০২৩ সালের ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ২৯৪ এবং ১৯৮৬ সালের অশ্লীল ভাবে নারীশরীর প্রদর্শন (নিষেধ) আইনের ধারা ৪-এর নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে ওই সমস্ত ওয়েব প্ল্যাটফর্ম।
১৪২০
ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারা ৬৭ এবং ৬৭এ অনুযায়ী বৈদ্যুতিন মাধ্যমে কোনও ভাবে অশ্লীল বা যৌন উত্তেজক কোনও কিছু দেখানো যায় না। একই ভাবে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ২৯৪ অনুযায়ী গানের দৃশ্যে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিও নিষিদ্ধ। আবার ১৯৮৬ সালের আইন অনুযায়ী, কোনও মাধ্যমেই নারীকে অশ্লীল ভাবে উপস্থাপন করা যায় না। দফতরের দেওয়া তালিকায় উল্লিখিত ওয়েব প্ল্যাটফর্মগুলি এই সব ক’টি আইন লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
১৫২০
গত বছরের (পড়ুন ২০২৪) ডিসেম্বরে ‘নীল ছবি’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মস্কোর কর্তাব্যক্তিদের দাবি, মাদকের মতোই এর ভয়ঙ্কর নেশায় ধীরে ধীরে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে কৈশোর-যৌবন। শুধু তা-ই নয়, পর্নোগ্রাফি ধ্বংস করছে সামাজিক মূল্যবোধকেও। আর তাই যুবসমাজকে দ্রুত এই নেশা থেকে বার করে আনতে ‘প্রতিষেধক’ খোঁজার নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন।
১৬২০
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মস্কোয় ‘ডিরেক্ট লাইন’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। সেখানেই পর্নোগ্রাফির বিকল্প কেমন হবে, তারও একটি রূপরেখা দেন তিনি। ‘নীল ছবি’র বদলি হিসাবে আরও আকর্ষণীয় কিছু আমজনতার সামনে আনার কথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। তাঁর ওই মন্তব্যের পর রাশিয়ায় পর্নোগ্রাফি পুরোপুরি নিষিদ্ধ হতে পারে বলে জল্পনা ছড়ায়। যদিও এখনও সেই সিদ্ধান্ত নেয়নি ক্রেমলিন।
১৭২০
সমীক্ষক সংস্থা ‘স্ট্যাটিস্টা’র সমীক্ষা অনুযায়ী, বর্তমানে পর্ন সাইটগুলির দর্শকসংখ্যা কয়েকশো কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত বছরের মে পর্যন্ত প্রতি মাসে পর্নহাব সাইটে চোখ রেখেছেন ৫৪৯ কোটি জন। আর এক্স ভিডিয়োর দর্শকসংখ্যা ছিল ৪০২ কোটি। ইন্টারনেট সার্চিংয়ের ক্ষেত্রেও প্রাপ্তবয়স্কদের ভিডিয়ো সর্বাধিক খোঁজার তালিকায় রয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৮২০
পর্নোগ্রাফি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের আইন রয়েছে। চিনে নীল ছবি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এটিকে আংশিক ভাবে বন্ধ রেখেছে ইজ়রায়েল। সেখানে পর্নোগ্রাফি দেখতে হলে সরকারের কাছে আবেদন করতে হয়। আবেদনকারীর বয়স এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিবেচনা করে তবেই এর অনুমতি দিয়ে থাকে বিশ্বের একমাত্র ইহুদি দেশের সরকার।
১৯২০
গত বছরের সেপ্টেম্বরে পর্নোগ্রাফি নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ রায় দেয় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। শিশু পর্নোগ্রাফি দেখা এবং ডাউনলোড করে রাখা— দুই-ই শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে উল্লেখ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের দেওয়া ওই রায়কে ‘মাইলফলক’ বলে মনে করেন আইনজ্ঞেরা। এতে ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার কথাও বলেছে আদালত।
২০২০
তবে ভারতের আইন অনুযায়ী, ব্যক্তিগত পরিসরে পর্ন ছবি বা ভিডিয়ো দেখা মোটেই শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়। এ ক্ষেত্রে কেউ বিরক্ত বা অস্বস্তি অনুভব করছেন কি না, তা গুরুত্বপূর্ণ। প্রকাশ্যে পর্নোগ্রাফি দেখা নিয়ে কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। আবার এ ব্যাপারে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করার অধিকার রয়েছে পুলিশের।