Advertisement
E-Paper

এখনও লোকনাথ ব্রহ্মচারীর জন্ম বা তিরোধান দিবসে ডাক পাই, ওঁকে ভাঙিয়ে কখনও খাইনি: ভাস্বর

“টানা পাঁচ দিন হাড়কাঁপানো শীতে জলে ভিজে, খালি গায়ে শুটিং করেছি। জ্বর দূরের কথা, একটা হাঁচি পর্যন্ত হয়নি”, বললেন ভাস্বর।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫ ১৩:৫২
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর সাজে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়।

লোকনাথ ব্রহ্মচারীর সাজে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

ছোট পর্দায় লোকনাথ ব্রহ্মচারীর জীবন নিয়ে ধারাবাহিক হবে। ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় মুখ্য চরিত্রে। তখনও তিনি মহাপুরুষের জীবন সম্পর্কে সবিস্তার জানেন না। তাই তাঁরও মনে দ্বন্দ্ব, তিনি নিখুঁত ভাবে লোকনাথ ব্রহ্মচারীকে পর্দায় ফোটাতে পারবেন তো! কারণ, চেহারার দিক থেকেও উভয়ের কোনও মিল নেই। যে ভয় পেয়েছিলেন অভিনেতা সেটাই বাস্তব হল। ধারাবাহিক মাত্র তিন দিন সম্প্রচার হয়েছে। সমাজমাধ্যম ছয়লাপ, “লোকনাথ বাবার চরিত্রে ভাস্বরকে একটুও মানায়নি। ওঁকে বাছা মস্ত ভুল।”

এ সব মন্তব্য যত কানে আসছে ততই ভেঙে পড়ছেন অভিনেতা। তার পর?

মঙ্গলবার, লোকনাথ বাবার তিরোধান দিবস উপলক্ষে ভাস্বরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। তাঁর কথায়, “প্রত্যেক দিন দুরুদুরু বুকে স্টুডিয়োয় পা রাখতাম। আর লোকনাথ বাবাকে ডাকতাম, তোমার পায়ে নিজেকে সঁপে দিলাম। এ বার তুমি রক্ষা করো।” চার দিন পরে বাংলাদেশের বারডি গ্রাম থেকে একটি ফোন এসেছিল অভিনেতার কাছে। বারডিবাসীদের প্রতিনিধিস্বরূপ এক ব্যক্তি অভিনেতাকে ফোন করে বলেছিলেন, “আপনিই নিখুঁত লোকনাথ ব্রহ্মচারী। চেহারা, অভিনয় সব দিক থেকে।” শুনে আনন্দে চোখে জল এসে গিয়েছিল অভিনেতার। এই ঘটনা জানিয়ে বললেন, “ওই গ্রামে বাবার পা পড়েছিল। সেখান থেকে যখন ছাড়পত্র পেলাম, মনে হল এ বারের মতো উতরে গেলাম।”

‘বাবা লোকনাথ’-এর শুটিংয়ে সকলের সঙ্গে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়।

‘বাবা লোকনাথ’-এর শুটিংয়ে সকলের সঙ্গে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

মহাপুরুষের চরিত্রে অভিনয় করতে করতেই ভাস্বর মন থেকে বিশ্বাস করেন তাঁকে। বাড়িতে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেছেন। জন্মদিন, তিরোধান দিবস পালন করেন। এই দুটো দিন নিরামিষ খান। “ধারাবাহিক যে দিন শেষ হল সে দিন চাকলা ধাম থেকে ফোন। আমরা বাবাকে দেখিনি। আপনিই আমাদের কাছে জীবন্ত লোকনাথ ব্রহ্মচারী”, ভাস্বরের গলা আবেগে কাঁপছে। “এখনও ব্রহ্মচারীর বিশেষ দিনে নানা জায়গা থেকে ডাক পাই। ওঁর প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত থাকার জন্য। আমি সাড়া দিই না। লোকনাথ ব্রহ্মচারীকে ভাঙিয়ে খাব! সে স্পর্ধাই আমার নেই।”

ধারাবাহিক চলাকালীন ভাস্বর উপলব্ধি করেছিলেন মহাপুরুষের বাণী, “রণে-বনে-জলে-জঙ্গলে যেখানে বিপদে পড়িবে আমাকে স্মরণ করিবে, আমি রক্ষা করিব— কতটা সত্যি। সে সময়ে আত্মসমর্পণ করেছিলাম বলেই টানা অতগুলো দিন ধরে মহাপুরুষের চরিত্রে অভিনয় করতে পেরেছি।” মনে করেন তিনি। শুধু এই একটি ঘটনাই নয়, যত ধারাবাহিক এগিয়েছে ততই নানা ঘটনা ঘটেছে অভিনেতার সামনে। যেমন, হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় খালি গায়ে জলে ভিজে টানা পাঁচ দিন শুটিং করতে হয়েছিল তাঁকে। লোকনাথ বাবার তপস্যারত অবস্থার দৃশ্যের শুটিং চলছিল।

“প্রত্যেক দিন ভাবতাম, আজকেই শেষ। বাড়ি ফিরে আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারব না। জ্বর আসা দূরের কথা, একটা হাঁচি পর্যন্ত হয়নি!” তখন করোনাকাল। মহাপুরুষের জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই ভাস্বর ত্রাণ বিলি করতেন পথে। এক এক দিন কোনও সুরক্ষা ছাড়াই তিনি ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে যেতেন অনেক অপরিচ্ছন্ন স্থানে। “আমার কিন্তু কোভিড হয়নি! রোজ বাবাকে নিয়ে খুব ভয় পেতাম। আমি হয়তো অজান্তে জীবাণু বহন করছি। বাবার যদি কিছু হয়! কিচ্ছু হয়নি বাবার।”

Bhaswar Chatterjee Loknath baba
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy