রুক্মিণী মৈত্রের সঙ্গে ‘নটী বিনোদিনী’ ছবিতে ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। রুক্মিণী মুগ্ধ ফিরদৌসি বসুর অভিনয়ে। তখনই তিনি নজরে পড়েছিলেন প্রযোজক দেবের। ডাক পান ‘রঘু ডাকাত’ ছবিতে। সেই খবর ফিরদৌসি প্রথম জানিয়েছিলেন আনন্দবাজার ডট কমকে। সম্প্রতি, ছবির শুটিং শেষ হয়েছে। টানা পাঁচ দিন দেব, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, ইধিকা পাল-সহ তারকা অভিনেতাদের সঙ্গে ওঠাবসা, শুটিং। কেমন সেই অভিজ্ঞতা?
জানতে অভিনেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। ফিরদৌসি পর্দার পাশাপাশি মঞ্চেও অভিনয় করেন। সেখানেই হাত ভেঙে ফেলেছেন! যদিও তাঁর কণ্ঠে ব্যথার লেশমাত্র নেই। ‘রঘু ডাকাত’-এর কথা উঠতেই উল্টে গলায় উচ্ছ্বাস। ফিরদৌসি বললেন, “আমার সঙ্গে সোহিনী সরকারের অনেকেই মিল খুঁজে পান। ‘নটী বিনোদিনী’র প্রিমিয়ারে অনেকে পিছন থেকে দেখে সোহিনীদি বলে ডেকেওছিলেন। দেবদার প্রযোজনা সংস্থাও একই কথা বলেছে!”
শুধু তাই নয়, ছবিতে তাঁর নিজের চরিত্রের পাশাপাশি সোহিনীর ‘ডামি’ হয়ে একদিনের শট দেওয়ার জন্যও ডেকেছিল তাঁকে! বলতে বলতে মৃদু হাসি তাঁর। ফিরদৌসি বললেন, “আমি করতে পারিনি। বাইরে অন্য কাজে চলে গিয়েছিলাম। তবে করতে পারলে বেশ হত।” দেব, রূপা, সোহিনীর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছেন। অভিজ্ঞতার ঝুলি অনেকটাই তাই পূর্ণ, বক্তব্য অভিনেত্রীর।

ফিরদৌসি বসু আর ‘ডাকাত মা’ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
তার পরেই ফিরে এসেছেন নিজের অভিনীত চরিত্র প্রসঙ্গে। পর্দায় রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ‘ডাকাত মা’। তাঁর অধীনে অনেক ডাকাত মেয়ে। ফিরদৌসি সেই ডাকাত মেয়েদের অন্যতম এক জন। স্বাভাবিক ভাবেই রূপার সঙ্গে তাঁর বেশ কিছু দৃশ্য ছিল। “‘ডাকাত মেয়ে’ হতে গিয়ে লাঠি খেলা শিখতে হয়েছে। অ্যাকশনে অংশ নিয়েছি। ধুতির মতো করে শাড়ি পরেছি। চুল সাঁওতালি ছাঁদে বাঁধা। সঙ্গে রুপোর মোটা গয়না। কাজ করে খুব ভাল লেগেছে”, ফিরদৌসির সংযোজন। আর দেব? তাঁর সঙ্গে পর্দা ভাগ করবেন না? করেছেন তিনি, প্রশ্ন শুনেই আগে আশ্বস্ত করেছেন। অভিনেত্রীর কথায়, “আমার সমস্ত দৃশ্যই দেবদার সঙ্গে। ওঁর প্রথম ছবি ‘অগ্নিশপথ’-এর পরিচালক প্রবীর নন্দী আমার দাদু। সে কথা জানাতেই দেবদা অবাক। তার পর খুশিতে ফেটে পড়লেন।”
‘রঘু ডাকাত’ হয়ে উঠতে গিয়ে দেবকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে... কথাশেষের আগেই মুখের কথা কেড়ে নিয়েছেন অভিনেত্রী। তাঁর দাবি, “পরিশ্রম তো করেইছেন, প্রত্যেকটি ছবিতে নিজেকে দেবদা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এই উন্নতি ওঁর প্রতিটি কাজে ছাপ ফেলছে।” পাঁচ দিনের টানা শুটিংয়ে এক দিনের জন্য তাই প্রযোজক-অভিনেতাকে বসতে দেখেননি। আড্ডা দিতে দেখেননি। খাওয়া, ঘুম— সবই নাকি প্রায় ভুলতে বসেছিলেন অভিনেতা! প্রযোজকের মতোই পরিচালক ধ্রব বন্দ্যোপাধ্যায়ও ‘মাটির মানুষ’। শক্ত দৃশ্য শুটিংয়ের আগে বারে বারে মহড়া দিইয়ে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
যাঁর সঙ্গে এত মিল সেই সোহিনীর সঙ্গে ফিরদৌসির বন্ধুত্ব হল? “হ্যাঁ হল। সোহিনীদি শোনে আর হেসে গড়িয়ে পড়ে!” ছবিতে তিনি আর ইধিকা নায়কের দুই নায়িকা। রূপার সঙ্গেও তাঁর স্মৃতি মনে রাখার মতো। ফোনে আড্ডা দিতে দিতে জানালেন, শুটিংয়ের শুরুতে রূপার সঙ্গে ছবি তোলার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ফিরদৌসি। সে সময় রূপা জানিয়েছিলেন, শেষ দিনে ছবি তুলবেন। কারণ, ‘ডাকাত মা’-এর সাজে ছবি তোলা অনুচিত। ফিরদৌসি ভেবেছিলেন, ভুলে যাবেন রূপা। সেটা কিন্তু হয়নি...।
ফিরদৌসির কথায়, “আমার শুটিং শেষ হতেই রূপাদি ডেকে পাঠালেন। বললেন, ‘ছবি তুলবে না? বলেছিলে যে!’” অভিনেত্রীর কণ্ঠে তৃপ্তির আভাস, এই কাজ না করলে জানতেই পারতেন না, তারকারাও রুপোলি পর্দা ছেড়ে মাটিতে নেমে আসেন। আগলে, ভালবেসে সামনের দিকে এগিয়ে দেন তাঁদের উত্তরসূরিদের।