Advertisement
E-Paper

বিনোদন দুনিয়ায় শুটিং ফুরোলেই সম্পর্ক শেষ, মৌসুমীদির সঙ্গে সেটা কিছুতেই আমার হবে না: যশ

“মেঘাদি মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়কে আমাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে বলেছিলেন, মাকে তোমাদের হাতে ছেড়ে গেলাম। নিজেদের মা মনে করে যত্ন নিও।”

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৪৬
বাস্তবেও মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে হয়ে উঠেছেন যশ দাশগুপ্ত।

বাস্তবেও মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে হয়ে উঠেছেন যশ দাশগুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।

‘বালিকা বধূ’ আবার বাংলা ছবিতে। বাঙালি দর্শকদের যেন আহ্লাদের সীমা নেই! কত বছর পরে ফিরলেন তিনি? ‘আড়ি’ ছবি দেখতে দেখতে সেই হিসাব কষার ফাঁকেই অনুরাগীদের কৌতূহল, যশ দাশগুপ্তের সঙ্গে মৌসুমীর সমীকরণ কেমন তৈরি হল? নিছক দুই প্রজন্মের দুই অভিনেতা তাঁরা? না কি সে সব পেরিয়ে পর্দার মতো বাস্তবেও মা-ছেলের সম্পর্কে বাঁধা পড়লেন? মৌসুমী যেমন বড় মেয়ে পায়েলকে হারিয়েছেন, যশও তো মাতৃহারা।

এই প্রশ্ন নিয়ে নায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার ডট কম। সম্পর্ক যে তৈরি হয়েছে সে কথা অস্বীকার করেননি যশ। বলেছেন, “বিনোদন দুনিয়ার রীতি, শুটিং শেষ সম্পর্ক শেষ। যে যার মতো ফিরে যাই নিজের দুনিয়ায়। মৌসুমীদির ক্ষেত্রে বিষয়টি বোধহয় অন্য রকম হতে চলেছে। আমাদের সম্পর্কটা মনে হচ্ছে এখানেই ফুরিয়ে যাওয়ার নয়।” যশের উপলব্ধি, তিনি কোনও দিন মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াত কন্যা পায়েলের জায়গা নিতে পারবেন না। অভিনেত্রীও পারবেন না তাঁর মায়ের জায়গা নিতে। তবু যেন অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে বাঁধা পড়েছেন উভয়েই।

বলতে বলতে যশ ফিরে গিয়েছেন শুটিং শুরুর দিনগুলোয়। জানালেন, একটু ভয়ে ভয়েই গিয়েছিলেন ষাট-সত্তরের দশকের সাড়া জাগানো বাংলা-হিন্দি ছবির নায়িকার কাছে। দ্বিধায় ছিলেন তিনি, মৌসুমী রাজি হবেন তো?

অভিনেতার কথায়, “আমরা ওঁর কাছে মায়ের চরিত্র নিয়ে গিয়েছিলাম। উনিও একজন মায়ের চোখ দিয়ে চরিত্রটিকে বিচার করেছেন। চিত্রনাট্য শুনেছেন। তার পর এক কথায় রাজি হয়ে গিয়েছেন। অভিনেত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কিছুই করেননি।” সেই থেকে কলকাতায় বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর অভিভাবক যশ! অভিনেত্রীর ছোট মেয়ে শহরে মাকে ছাড়তে এসেছিলেন। তিনি যশের হাত ধরে বলে গিয়েছিলেন, “মাকে তোমাদের জিম্মায় ছেড়ে যাচ্ছি। নিজেদের মা মনে করে যত্ন নিও। সামলে রেখো। কাজ ফুরোলে আবার মাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিও।”

যশের দাবি, সে দিন থেকে তিনি মৌসুমীর ছেলে, অভিনেত্রী তাঁর মা। “কাঁধে গুরু দায়িত্ব এসে পড়ল। বর্ষীয়ান অভিনেত্রীকে নয়, একজন মাকে সুস্থ ভাবে তাঁর সন্তানের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে”, বললেন তিনি।

তাই সেটে এবং সেটের বাইরে যশ মৌসুমীর ২৪ ঘণ্টার ‘স্থানীয় অভিভাবক’। সেটেই রান্না হয়েছে শুক্তো থেকে মাছে ঝোল। মৌসুমী তৃপ্তি করে খেতেন। “একবার তালের বড়া খাওয়ার বায়না করলেন মৌসুমীদি। আমাদের সেটের ঠাকুর তাল এনে, চেঁছে, বড়া ভেজে খাওয়ালেন। খেয়ে দেয়ে ছেলেমানুষের মতো খুশি!” আবার বেগতিক দেখলে ‘মা’কে শাসনও করেছেন। যাতে শরীরখারাপ না হয়। শনিবার ফের মুম্বই উড়ে গেলেন মৌসুমী। পর্দার ছেলে-ছেলের বৌ কলকাতা বিমানবন্দরে ছাড়তে এসেছিলেন তাঁকে। মনখারাপ? “তা তো একটু হবেই”, জবাব অভিনেতার।

পর ক্ষণেই ঝলমলে কণ্ঠস্বর তাঁর, “জানেন, মৌসুমীদিকে দেখবেন বলে ওঁর সমসাময়িকেরা ‘আড়ি’ দেখতে আসছেন। এটা আমাদের কম পাওনা?”

ইদানীং বাংলা ছবিতে পুরনো দিনের অভিনেতাদের রমরমা। মিঠুন চক্রবর্তী থেকে ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ে শর্মিলা ঠাকুর, রাখি গুলজ়ার, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়। এই প্রজন্মের অভিনেতারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে যশ বলেন, “বিষয়টি আমি এ ভাবে দেখি না। এক, অভিনেতাদের অবসর বলে কিছু নেই। যে কোনও বয়সে তাঁরা অভিনয় করতে পারেন। দুই, ওঁরা ফিরছেন বলে ওঁদের সময়ের দর্শকেরা হলে ফিরছেন। এই শ্রেণির দর্শকেরা মাঝে কিন্তু বাংলা ছবি দেখা ছেড়ে দিয়েছিলেন।”

পাল্টা প্রশ্ন যশও রেখেছেন, “এ বার বলুন, পুরনো দিনের অভিনেতারা ফিরলে ইন্ডাস্ট্রির লাভ না লোকসান?”

Aari Moushumi Chatterjee Yash Dasgupta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy