Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Rii Sen

বাংলাদেশে ছবি করে বিপাকে অভিনেত্রী ঋ, বকেয়া পারিশ্রমিক উদ্ধারে সাহায্যের আর্জি নায়িকার

অগণিত বার ফোন করেছেন ছবির পরিচালক তথা প্রযোজককে। উত্তর মেলেনি। বাংলাদেশে কাজ করতে গিয়ে কী এমন ঘটল ঋ-এর সঙ্গে?

Actress Rituparna Sen aka Rii sen shares her horrible experience working in bangladeshi movie

অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা ওরফে ঋ সেন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৪:১৮
Share: Save:

গিয়েছিলেন বাংলাদেশে একটি সিনেমার শুটিংয়ে। গত জানুয়ারি মাসে শুটিং শেষ করে ভাল ভাবেই কলকাতায় ফিরেছেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা ওরফে ঋ সেন। কিন্তু তার পর থেকে বাধল গন্ডগোল। শুটিং শেষ করে ফিরে এলেও বকেয়া পারিশ্রমিক পাননি অভিনেত্রী। অপেক্ষা করেছেন প্রায় দেড় মাস। অগণিত বার ফোন করেছেন ছবির পরিচালক তথা প্রযোজককে। উত্তর মেলেনি। তিনি ঋতুপর্ণার ফোনই ধরেননি। শেষমেশ ধৈর্যচ্যুতি ঘটে অভিনেত্রীর। বাংলাদেশের ওই প্রযোজকের প্রতি হেনস্থার অভিযোগ এনে ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দেন। তবে ঠিক কী ঘটেছে তাঁর সঙ্গে, আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন অভিনেত্রী।

শুটিং শেষ করে দেশে ফিরেছেন, তা-ও মাস দুয়েক হতে চলল। কিন্তু টাকা পাননি ঋ। অভিনেত্রী বলেন, ‘‘প্রায় তিন লাখ টাকা পাই। আমার কাছে এটা অনেকটা বড় অঙ্ক। আমি অনেক দিন ধরে বসে আছি। গত দেড় মাস ধরে ক্রমাগত পরিচালককে ফোন করে যাচ্ছি। তিনি ফোন তুলছেন না, যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ। আমার উদ্বেগ হচ্ছে, টাকা পাব তো! শেষমেশ বাধ্য হয়ে ফেসবুকে লিখি। আমি বৃহস্পতিবার যখন প্রোডাকশনের লোকেদের সঙ্গে কথা বলি, খুব খারাপ ব্যবহার করা হয়। কেন আমি টাকা চাইছি, সেটাই আপত্তির জায়গা। সেটা আমার খারাপ লাগায় ফেসবুকে লিখি। নয়তো আমি তেমন মানুষ নই যে, ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত জীবন তুলে ধরব। ’’

তবে ফেসবুকে লেখার পরই নাকি নড়েচড়ে বসেছেন প্রযোজক। টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ঋ-এর ঢাকার বন্ধুবান্ধব এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু কী কারণে এমন টালবাহনা? ঋ-এর কথায়, ‘‘ আসলে টাকা পাঠানো নিয়ে সমস্যা। আমি এই মুহূর্তে বুঝে উঠতে পারছি না, কী সমস্যা হচ্ছে। এর আগে শ্রীলঙ্কায় কাজ করেছি, কোনও সমস্যা হয়নি। এই প্রথম বার বাংলাদেশে কাজ করতে গিয়ে এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হল যে, বুঝতে পারছি না, কী করণীয়। তবে একটা শিক্ষা হয়েছে। ভবিষ্যতে ডলারে কাজ করব। আর টাকায় যাতে কোনও আর্থিক আদান-প্রদান না হয়, সেটা খেয়াল রাখব।’’

এ দেশের অভিনেত্রীরা বাংলাদেশে কাজ করতে গিয়ে বার বার বিভিন্ন ভাবে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। অন্য দিকে, বাংলাদেশের অভিনেত্রীরা তুলনায় টলিউডে অনেক গোছানো পরিবেশ পেয়েছেন বলেই দাবি করেছেন। তফাতটা ঠিক কোথায় ঢালিউড ও টলিউডে? ঋ বললেন, ‘‘ওখানে খুবই অতিথিপরায়ণ সকলে। অ্যাপায়ন পেয়েছি খুব ভাল। আমার জুতো থেকে ব্যাগ বয়ে দেওয়ার পর্যন্ত লোক ছিল। অন্য দিকে, টলিউডে জুতো তো কোন ছার, ব্যাগ বইতে বললে মুখ বেঁকায়। দু'জায়গারই ভাল-খারাপ দিক রয়েছে। সবই ঠিক ছিল। কিন্তু, টাকাপয়সা নিয়ে কেন এমন হল, বুঝলাম না। তবে ওঁরা কথা দিয়েছেন, টাকাটা যত দ্রুত সম্ভব দিয়ে দেবেন। টাকাটা পাওয়া অবধি অপেক্ষা করব।’’

সম্প্রতি বাংলাদেশে কাজ করতে গিয়ে সমস্যার পড়েছিলেন টলিপাড়ার অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার অভিযোগ তুললেন ঋ। গত বছর টলিপাড়ার ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী পরিচালিত ‘মায়ার জঞ্জাল’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন বাংলাদেশের অভিনেতা সোহেল মণ্ডল। তিনি বিষয়টিকে ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা হিসেবেই দেখতে চাইছেন। আনন্দবাজার অনলাইনকে সোহেল বললেন, ‘‘কার সঙ্গে কী চুক্তির ভিত্তিতে কাজ হচ্ছে বা পারিশ্রমিক কখন কী ভাবে দেওয়া হবে, সেটা সেই দু’পক্ষ ভাল বলতে পারবেন।’’ বিষয়টাকে দুই দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় বা অন্য কোনও নীতিগত সমস্যা হিসেবে দেখতে চাইছেন না সোহেল। তবে টলিপাড়া থেকে ঢালিউডে কাজ করা প্রসঙ্গে পরামর্শও দিলেন অভিনেতা। সোহেলের কথায়, ‘‘একটু ভাল করে চুক্তিপত্র দেখে নিলে বা যাঁদের সঙ্গে কাজ করছেন তাঁদের সম্পর্কে একটু ভাল করে খোঁজখবর করে নিতে পারলে মনে হয় না আর কোনও সমস্যা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE