কখনও গায়ের রং নিয়ে, কখনও মফস্সলের মেয়ে হওয়ার কারণে শ্রুতি দাস কটাক্ষের শিকার। এরই সঙ্গে জুড়ে যায় বয়সে অনেক বড় পরিচালককে বিয়ে করার খোঁটা। নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘আমার বস্’ ছবিতে অভিনয় কি কটাক্ষকারীদের মুখে ঝামা ঘষতে পারবেন? আনন্দবাজার ডট কমকে জবাব দিলেন অভিনেত্রী।
প্রশ্ন: ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দায় পা রাখার স্বপ্ন সফল হল?
শ্রুতি: হ্যাঁ, অনেক দিন ধরে এই স্বপ্নটাই দেখছিলাম। অবশেষে পূরণ হল।
প্রশ্ন: পূরণ হল এমন একটা প্রযোজনা সংস্থার মাধ্যমে যেখানে কাজ করার ইচ্ছে কমবেশি প্রায় সকলেরই...
শ্রুতি: একদমই তাই। আমার মা-বাবা পর্যন্ত বলতেন, কী রে! নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে কবে অভিনয় করবি? কী জানেন তো, মেগাতে অভিনয়ের সময়ে আমাদের উপরে প্রচণ্ড চাপ থাকে। ফলে, ইচ্ছা থাকলেও বড় বড় প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে অনেক সময় যোগাযোগ করে উঠতে পারিনি। কিন্তু মনের কোণে সুপ্ত বাসনা ছিলই। কেবল বলে উঠতে পারিনি।
প্রশ্ন: যাত্রা সহজ ছিল?
শ্রুতি: পুরোটাই অপ্রত্যাশিত ছিল। ছোট পর্দায় আমার শেষ কাজ ২০২৩-এ, ধারাবাহিক ‘রাঙাবৌ’তে। তার চার-পাঁচ দিনের মাথায় হঠাৎ ডাক পাই উইন্ডোজ় প্রযোজনা সংস্থা থেকে। একটু আগেই বলছিলাম না, এই প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজের তীব্র বাসনা ছিলই। এখন মনে হচ্ছে সুপ্ত অবস্থাতেই বাসনা এতই তীব্র ছিল যে নন্দিতাদি-শিবুদা ডাক পাঠালেন। ১০ দিনের মাথায় নির্বাচিত!
প্রশ্ন: পরীক্ষা দিয়েছিলেন?
শ্রুতি: কোনও পরীক্ষা দিতে হয়নি।
প্রশ্ন: সে কী!
শ্রুতি: হ্যাঁ, সাধারণত চিত্রনাট্য পাঠিয়ে যে ভাবে অডিশন হয়, সে ভাবে আমার হয়নি। মনে হয়, ওঁরা হয়তো আমার তিনটি ধারাবাহিক ‘ত্রিনয়নী’, ‘দেশের মাটি’, ‘রাঙাবৌ’ দেখেছেন। সেখান থেকেই আমায় বেছে নেওয়া। আমিও খুব অবাক হয়েছিলাম। প্রথম দিন প্রযোজনা সংস্থার অফিসে গিয়ে যা ঘটল তাতে আরও অবাক!
প্রশ্ন: কী ঘটেছিল?
শ্রুতি: আমি যে দিন প্রথম যাই সে দিন সঙ্গে বাবা ছিলেন। ছোট থেকে এখনও প্রথম কোনও জায়গায় গেলে বাবা সঙ্গে থাকেন। মা ঘরের দিক সামলান বলে। ধারাবাহিক বা সিরিজ়ের ক্ষেত্রেও তাই-ই হয়েছে।
প্রশ্ন: বাবা আপনার ‘লাকি চার্ম’?
শ্রুতি: (মৃদু হেসে) বলতে পারেন। অফিসে ঢুকে দেখি, নন্দিতা-শিবুদা পাশাপাশি বসে। নানা বিষয় নিয়ে কথা হল। তার পর জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের ছবির নায়িকা কে জানেন? আমি রাখি গুলজ়ারের নাম নিলাম। ওঁরা তখন আমার চরিত্র সম্বন্ধে বললেন। কী করতে হবে, জানালেন। কথাবার্তা শেষে বেরিয়ে যাচ্ছি। দরজা খোলার আগে হঠাৎ কী মনে হল, শিবুদাকে বললাম, স্যর, আমি কি আদৌ সুযোগ পেয়েছি? শিবুদা উত্তর দিলেন, “আপনাকে যখন ফোন করা হয়েছে তখনই তো আপনি সিলেক্টেড!” শিবুদা তখনও আপনি-আজ্ঞে করছেন। শুনে আরও অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, আমায় পরীক্ষা দিতে হবে না? তিনি হেসে জানালেন, সে সবের প্রয়োজন নেই। তবে সমস্ত অভিনেতাকে নিয়ে মহড়া দেওয়া হবে। সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে। এতে আমার আরও চাপ বেড়ে গেল।
প্রশ্ন: কেন?
শ্রুতি: বুঝলাম, এঁরা অনেকটা ভরসা নিয়ে আমায় বেছেছেন। সেই ভরসাটা আমায় রাখতে হবে। সে দিন থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল আমার। তার পর দু’দিন ওয়ার্কশপ, লুক সেট হয়ে শুটিং শুরু। ১০ দিনের মধ্যে সব হয়ে গেল। গাড়িতে উঠে বাবাকে বলেছিলাম, আমার ইচ্ছেপূরণ হয়ে গেল! বাবা বলল, “হ্যাঁ, সেটাই তো দেখছি। এ বার মনে দিয়ে কাজ কর।”
প্রশ্ন: ‘আমার বস্’ ছবিতে শ্রুতি কোন চরিত্রে?
শ্রুতি: আমি শিবুদার প্রকাশনা সংস্থার সহকর্মী, সম্পাদক। নাম অদিতি। আমার মতো একই পদে দেখা যাবে গৌরবদাকেও (চট্টোপাধ্যায়) । বসের শাসনে আমরা তটস্থ।
প্রশ্ন: সাংবাদিকদের চাপ বুঝতে পারছেন?
শ্রুতি: (জোরে হাসি) ভীষণ ভাবে। অফিসের বাইরেও আমাদের একটা জীবন রয়েছে, পরিবার রয়েছে— সেটা কিছুতেই বুঝতে চান না কর্তৃপক্ষ। ফলে, আমাদের ছুটি দিতে চান না। বসের মা শুভ্রা দেবী না এলে হয়তো আমাদের পেশাজীবন ততটাও মসৃণ হত না।
প্রশ্ন: রাখি গুলজ়ারের সঙ্গে অভিনয়...
শ্রুতি: ওটা তো আলাদাই। এমনিতে আমার অভিনয়জীবন খুবই ছোট। বেশি কাজ করিনি। তার পরেও কাজ করতে গিয়ে বুঝলাম, আমি অল্প জলে বেশি ফড়ফড় করি! রাখি গুলজ়ার নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান, ব্র্যান্ড। সে সমস্ত নিজের মধ্যে আত্মস্থ করে সকলের সঙ্গে মিশে যান। কখনও নিজেকে জাহির করেন না। কিংবন্তিরা মনে হয় এ রকমই হন। একই কথা বলব নন্দিতাদি-শিবুদার ক্ষেত্রেও। ওঁরাও ভীষণ মাটিতে পা রেখে চলেন। প্রত্যেককে সম্মান দিয়ে, সকলকে কাছে নিয়ে কাজ করেন। ওঁরা আছেন বলেই রাখি গুলজ়ার পর্যন্ত পৌঁছোতে পারলাম। বাংলায় এই দুই পরিচালক দৃষ্টান্ত।
প্রশ্ন: পরিচালনার পাশাপাশি শিবপ্রসাদের নায়কের ভূমিকায় অভিনয়। প্রথম ছবিতেই ওঁর দুটো সত্তা দেখলেন। কোনটা কেমন?
শ্রুতি: শিবুদাকে নিয়ে কথা শুরু করলে শেষ হবে না! আমার পরিচালক স্বামী স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার পর্যন্ত বলেন, নন্দিতাদি-শিবুদা অনেক পরিশ্রম করে এই জায়গা অর্জন করেছেন। ফলে, চাইলেও ওঁরা মাটি থেকে পা সরাতে পারবেন না। পা ওঁদের মাটিতেই থাকবে। ‘বহুরূপী’ ছবির কথাই ভাবুন। তার আগেও শিবুদা অনেক অভিনয় করেছেন। কিন্তু এই ছবির পর শিবুদা জনপ্রিয়তার শীর্ষে। তার পরেও দাদা কিন্তু একটুও বদলাননি। পর্দায় ওঁর সঙ্গে আমার দৃশ্য রয়েছে। চরিত্রের খাতিরে অনেক কড়া কথা বলতে হয়েছে, বলেছিও। নন্দিতাদি ‘কাট’ বললে হুঁশ ফিরত। মনে হয়, এই ক’টা দিন যেন স্বপ্নের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে।
প্রশ্ন: শিবপ্রসাদের নেপথ্য শক্তি জ়িনিয়া সেন কতটা ছাড় দেন, কতটা ধরে রাখেন?
শ্রুতি: ওটা ওঁদের ব্যক্তিগত সমীকরণ। আমি কী করে বলি?
প্রশ্ন: সেটে কী দেখলেন?
শ্রুতি: আমিও তো পরিচালকের স্ত্রী, সেই জায়গা থেকে বুঝলাম জ়িনিয়াদি কাজের দুনিয়ায় দাদাকে যথেষ্ট জায়গা ছেড়ে দেন। এটা শিখলাম ওঁর থেকে। এটা খুব ভাল লেগেছে।
প্রশ্ন: ছবির নায়িকা শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের খোলা পিঠে যখন শিবপ্রসাদ কবিতা লিখলেন, তখনও?
শ্রুতি: ওই দিন আমরা কেউ ছিলাম না। ওই দৃশ্যগ্রহণ পরে হয়েছে।
একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন শ্রুতি দাস। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
প্রশ্ন: কাটোয়ার মেয়ে, গায়ের রং নিয়ে অনেক তাচ্ছিল্য সয়েছেন। ছোট পর্দা, পাড়ার লোক, কটাক্ষকারীরা কী বলছেন?
শ্রুতি: মা-বাবা ছাড়া আমার জীবনে বাকিদের কোনও অস্তিত্বই নেই। যাঁরা অনেক কথা বলেছিলেন তাঁদের কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ বার শুধু আমি বলি?
প্রশ্ন: মা-বাবা আনন্দে মেঘমুলুকে ভাসছেন?
শ্রুতি: একটাই কথা বলব, ওঁরা যেটার যোগ্য এত দিনে সেটা পাচ্ছেন। সবটাই ওঁদের জন্য। আমার শক্তি ওঁরা। আমি কেবল হাল ছাড়তে শিখিনি। চেষ্টা করতে জানি। আমার যা পাওনা সেটা পুরোটাই মা-বাবার কর্মফল। আমার কোনও কৃতিত্ব নেই।
প্রশ্ন: এই খ্যাতি, এই প্রচার, এই জনপ্রিয়তার পর শ্রুতি কি আর ছোট পর্দায় ফিরে যাবেন?
শ্রুতি: ছোট পর্দা আমার সব। ওখান থেকেই শুরু আমার। ফলে, ছোট পর্দাকেও কোনও ভাবেই অবহেলা করতে পারব না। আমার মতো চরিত্র যখন কেউ লিখবেন তখন অবশ্যই করব। সে রকম কেউ লেখেননি এখনও পর্যন্ত। অনেকেই অনেক চরিত্রে আমায় ভেবেছেন। আমার মনে হয়েছে, আমি সে গুলোর যোগ্য নই। তাই আমি তাই মুখিয়ে আছি। ছোট পর্দা, ধারাবাহিকে অভিনয়ই আমার শিকড়। আপনাদের মাধ্যমে অনুরাগীদেরও বলছি, আমায় ফেরালেই আমি ফিরব।
প্রশ্ন: ছোট পর্দায় অভিনয় এখন চাকরি করার মতো, উপার্জনের স্থিরতা রয়েছে...
শ্রুতি: আমার ক্ষেত্রে এই দিকটি অবশ্যই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমি প্রচণ্ড আত্মনির্ভরশীল। প্রায় দেড় বছর আমার সে রকম কোনও উপার্জন নেই। অথচ, আমি-মা-বাবা— তিন জনের খরচ চালানোর দায়িত্ব আমার উপর।
প্রশ্ন: তা হলে তো এটা আপনার উপরে বড় চাপ?
শ্রুতি: খুবই স্ট্রাগলিং পিরিয়ডের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। ‘আমার বস্’ দেড় বছর আগের একটি শুটিং। তার পর হইচই ওয়েব প্ল্যাটফর্মের জন্য ‘ডাইনি’ করেছি। এখন আর কিন্তু কাজ নেই। কিছু পেতে গিয়ে কিছু তো ছাড়তেই হবে। প্রথম দিনই সাহানা দত্ত আমায় নায়িকা বানিয়ে দিয়েছিলেন। তখনও আমায় লাইন দিয়ে অডিশন দিতে হয়নি। প্রায় বাড়ি বসে, এক কথায় কাজটা পেয়ে গিয়েছিলাম। তাই মনে হয়, এই স্ট্রাগলটা আমার দরকার। বড় পর্দায়, সিরিজ়ে নিজেকে প্রমাণিত করতে গেলে এই লড়াই করতে হবে। আক্ষেপ একটাই...
প্রশ্ন: কী সেটা?
শ্রুতি: আমার যাঁরা ভাল চেয়েছিলেন তাঁদের সকলে এই উত্থান দেখে যেতে পারলেন না। আমার দিদুন যেমন। দিদুন প্রথম ছোট পর্দায় অভিনয়ের উৎসাহ দিয়েছিলেন। বলতেন, “তুমি ওমুকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারো। তমুককে ফোন করতে পারো।” দিদুন মনে হয় আগাম বুঝতে পেরেছিলেন, আমি অভিনয় পারব। ওঁর উৎসাহেই প্রথম ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ ধারাবাহিকের নায়ক রাজদীপ গুপ্তদার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। কাকতালীয় ভাবে ওই ধারাবাহিকের পরিচালকও স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার!
প্রশ্ন: তার পর?
শ্রুতি: রাজদীপদাকে যোগাযোগ করে বলেছিলাম, আমি তোমার বড় অনুরাগিনী। রোজ ধারাবাহিক দেখি। আমার দিদুন মনে করেন, আমিও অভিনয় পারব। আমার জন্য একটু দেখো। যদি কাজের সুযোগ করে দিতে পারো। আমি তখন কাটোয়ায় থেকে মডেলিং করি। রাজদীপদা এখনও দেখা হলে বলে, “সেই শ্রুতি এখন স্বর্ণদার বৌ!”
প্রশ্ন: মানে, শ্রুতি স্বর্ণেন্দুরই হবেন— এটাই পূর্বনির্দিষ্ট?
শ্রুতি: আমিও সেটাই ভাবি। শুধুই কাজের ক্ষেত্রে নয়, আমরা পড়শিও। আমি কাটোয়ার মেয়ে। স্বর্ণ গুপ্তিপাড়ার ছেলে। রোজ হাওড়া-কাটোয়া লোকাল ধরে কলকাতায় শুটিং করতে আসত। এখন ও-ও বলে, একই রুটের কোনও মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হবে, ভাবতে পারিনি।
প্রশ্ন: বড় পর্দা বা সিরিজ়ে নিয়মিত কাজ করতে গেলে বাকিদের মতো আপনাকেও ছিপছিপে হতে হবে— এমন কথা বলেছেন কেউ?
শ্রুতি: আমি ভাগ্যবতী। ছবির পরিচালক জুটি নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বা সিরিজ়ের পরিচালক নির্ঝর মিত্র— কেউই এ কথা আমায় বলেননি। উল্টে তাঁরা বলে এসেছেন, আমি যেমন সে ভাবেই ওঁরা আমাকে পেতে চান। আমি যেন নিজেকে না বদলাই। এমনকি, গায়ের রং ফর্সা দেখাতে বাড়তি রূপটান দিতেও নিষেধ করেছিলেন তাঁরা। শুনে আনন্দে চোখে জল এসে গিয়েছিল। তার পরেও বলব, অবশ্যই নিজের মতো করে নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করছি। কারও কথা শুনে নয়। তেমনই, চরিত্রের প্রয়োজনে নিজেকে বদলাতে রাজি।
নন্দিতাদি-শিবুদার আগামী কোনও ছবিতে যদি আবার সুযোগ পাই এবং দুই পরিচালক যদি রোগা হতে বলেন, আমি ‘জ়িরো ফিগার’ হব। বা সঞ্জয় লীলা ভন্সালী যদি ন্যাড়া হতে বলেন, এক ঢাল চুল হাসতে হাসতে কেটে ফেলব।
প্রশ্ন: বলিউডে চেষ্টা করছেন?
শ্রুতি: ওখানে থেকে অডিশন দিতে গেলেও যা খরচ এখনও আমি সেটা উপার্জন করি না। ফলে, ইচ্ছা থাকলেও সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া, আমাকেও অনেক ঘষামাজা করতে হবে। নিজেকে সব দিক থেকে গুছিয়ে অবশ্যই বলিউডে কাজ করার চেষ্টা করব। সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর পরিচালনায় কাজ করার স্বপ্ন দেখি।
পেশাজীবন নিয়ে জানালেন শ্রুতি দাস। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
প্রশ্ন: শ্রুতি খুব ভাল গান গাইতে পারেন, পুরনো দিনের মতো গায়িকা-নায়িকা হবেন?
শ্রুতি: গায়িকা-নায়িকা-নৃত্যশিল্পীও! গানের প্রথাগত তালিম নেই, নাচ শিখেছি। এ ক্ষেত্রেও সাহানাদি আর সুরকার উপালি চট্টোপাধ্যায়-দিকে ধন্যবাদ জানাব। আমার এই সত্তা দিদিই ‘ত্রিনয়নী’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে আবিষ্কার করেছিলেন। ধারাবাহিকের অনেক গান আমার গাওয়া। ব্যস্ততার কারণে ওঁদের সঙ্গে আগের মতো যোগাযোগ নেই। মাঝেমাঝে মনে হয়, ওঁদের হাত মাথার উপরে থাকলে আমি হয়তো এত দিনে ছবিতে বা অন্যান্য ধারাবাহিকে নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসাবে অনেক গান গেয়ে ফেলতাম। কখনও না কখনও, কোথাও না কোথাও তো আমি গাইবই।
প্রশ্ন: শেষ প্রশ্ন, প্রথম ছবিতেই বিনা অডিশনে সুযোগ পাওয়ার নেপথ্যে কি পরিচালক স্বামী?
শ্রুতি: ওঁরা স্বর্ণকে চিনতেন না। আমাকেই ঠিকমতো চিনতেন না। শুনেছি, আমার অভিনয়ের কিছু অংশ নন্দিতাদি-শিবুদাকে দেখানো হয়েছিল। ওঁরা সে সব দেখে আমায় নির্বাচন করেন। পরে জানতে পারেন, পরিচালক রবি ওঝার শিষ্য স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার। আমি তাঁর স্ত্রী।
যাঁরা ‘জাজমেন্টাল’ তাঁরা বলেন, স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার আমায় সিরিজ় ‘ডাইনি’তেও সুযোগ করে দিয়েছেন। এই ছবিতেও। কখনও বলিউডে কাজ করলে তখনও বলবেন, ওটাও তাঁর হাতযশ। আমি কিছুই না (হাসি)।