Advertisement
০২ মে ২০২৪
Bollywood Controversy

‘উনি পাগলের প্রলাপ বকছেন’, নাসিরুদ্দিনকে একহাত নিলেন ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র বাঙালি পরিচালক

প্ররোচনামূলক ছবি হিসাবে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্‌স’, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’কে দাগিয়ে দিয়েছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ। ছবির সমালোচনা করার জন্য অভিনেতার প্রতি রীতিমতো আক্রমণাত্মক পরিচালক সুদীপ্ত সেন।

Naseeruddin Shah and Sudipto Sen.

(বাঁ দিকে) নাসিরুদ্দিন শাহ। সুদীপ্ত সেন (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
মুম্বই শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:২৪
Share: Save:

গত বছর বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্‌স’। চলতি বছরে বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেনের ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। দুই বছরের দুই বহুলচর্চিত ছবি। ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্‌স’কে ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত গোড়া থেকেই। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিতাড়িত করার ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবি মুক্তি পাওয়ার পরেও কম জলঘোলা হয়নি। ছবির সমালোচনায় মুখ খুলেছেন বহু নামজাদা ব্যক্তিত্ব। যদিও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি ছবির বক্স অফিস ব্যবসায়। বরং, বক্স অফিসে রমরমিয়ে ব্যবসা করেছে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্‌স’। চলতি বছরে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র পথচলাও প্রায় একই রকম। একের পর এক বিতর্ক, এমনকি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ব্যবসায়িক ভাবে সফল এই ছবি। ছবিটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও প্ররোচনামূলক বলে মতপ্রকাশ করেছেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে অন্যতম বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। এক সাক্ষাৎকারে নাসিরউদ্দিন জানান, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র মতো ছবির বক্স অফিস সাফল্য আদতে ভবিষ্যতের পক্ষে ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত। নাসিরের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এ বার মুখ খুললেন ছবির বাঙালি পরিচালক।

সম্প্রতি ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবি ঘিরে নাসিরের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বর্ষীয়ান অভিনেতার বিষয়ে সুদীপ্ত বলেন, ‘‘এক জন একটা ছবি না দেখেই তা নিয়ে যা খুশি তাই বলে যাচ্ছেন, এটা তো পাগলের কারবার! আমি ওঁকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করি, কিন্তু দায়িত্ববান নাগরিকের মতো কাজ তো করতে হবে ওঁকে!’’ সুদীপ্তর দাবি, ‘‘আমি ১০ বছর ধরে ছবিটা নিয়ে কাজ করেছি। সেন্সর বোর্ড দু’মাস ধরে সব খুঁটিয়ে দেখার পর ছবিকে ছাড়পত্র দিয়েছে। যদি তিনি ছবিটা না দেখেই এমন দায়সারা মন্তব্য করেন, তা হলে সেটাই বরং ভবিষ্যতে এই দেশের জন্য একটা অশনি সঙ্কেত। উনি যা খুশি মন্তব্য করতেই পারেন, সেই অধিকার ওঁর আছে। কিন্তু এই পুরো ব্যাপারটাই ভীষণ কাঁচা খেলা। তিনি নিজে এত অভিজ্ঞ এক জন শিল্পী, এমন মন্তব্য করে তো তিনি নিজের যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্নচিহ্ন রেখে দিচ্ছেন।’’ নাসিরের মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলেছেন ছবির অভিনেত্রী অদা শর্মাও। অদা বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে মতের পার্থক্য হলেও আমি বরাবর গুরুজনদের শ্রদ্ধা করার শিক্ষাই পেয়ে এসেছি। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ বক্স অফিসে এত সফল, দর্শকের কাছে এত ভালবাসা পেয়েছে... আমি খুবই কৃতজ্ঞ। খুব ভাল লাগত, যদি আমাদের সমাজের সবাই ছবিটি দেখে তার পর তা নিয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করতেন। মিস্টার শাহের মতামতও আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বার বার এটাই উপলব্ধি করি যে, আমি এমন এক দেশের নাগরিক, যেখানে সবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে।’’

‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্‌স’, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’-র মতো ছবির প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নাসির বলেন, ‘‘আজকাল নানা অছিলায় কিছু মুসলিমবিরোধী ভাবনাচিন্তা ও ধ্যানধারণা আমাদের মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সামাজিক জীবনেও তারই প্রতিফলন ঘটছে প্রতিনিয়ত। মুসলিম-বিদ্বেষ তো আজকাল একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়ে গিয়েছে!’’ নাসিরের মতে, হিটলারের সময়ে নাৎসি জার্মানিতেও নাকি ঠিক এ রকম ভাবেই ছবি তৈরির রীতি চালু করা হয়েছিল। সরকারের প্রশস্তি করে ছবি বানানোর নিদান দেওয়ার ফলে বহু জার্মান ছবিনির্মাতা নাকি সেই সময় দেশ ছাড়তেও বাধ্য হয়েছিলেন। নাসিরের দাবি, এ দেশেও এখন ঠিক তা-ই হচ্ছে। ‘ভীড়’, ‘ফরাজ়’, ‘অফওয়া’র মতো ছবি মুক্তি পাওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই হারিয়ে যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE