‘মেহের আলি’ ছবিতে হিরণ।
এত দিন হিরণকে অভিনেতা হিসেবে চিনতেন দর্শক। এ বার কাঁধে বাড়তি দায়িত্ব। অভিনেতার পাশাপাশি তিনি প্রযোজক। গল্প তো বটেই চিত্রনাট্যও তাঁর। সৌজন্যে হিরণের সদ্যমুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘মেহের আলি’। দর্শকদের ভালবাসায় আপ্লুত তাঁর অভিনয় সত্ত্বা। কিন্তু প্রযোজক হিসেবে এখনও চিন্তার ভাঁজ কপালে। কেন? শেয়ার করলেন হিরণ।
প্রেশার কমলো?
না, এখনও চলছে।
আপনার ‘সন্তান’ ‘মেহের আলি’র তো পরীক্ষা চলছে। টেনশন হচ্ছে নাকি?
ঠিকই বলেছেন। ‘সন্তান’ই বটে। সকলে বলছেন ভাল গল্প। শেষ দৃশ্য দেখে তো প্রত্যেকে কেঁদে ফেলেছেন। প্রিমিয়ারেও দেখেছিলাম এই কান্নাটা। সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ মালদহ তো কেউ বসিরহাট থেকে লিখে জানাচ্ছেন ভাল লাগার কথা। এটাই হয়তো অ্যাচিভমেন্ট। এক জন অভিনেতা হিসেবে, লেখক হিসেবে আমি সত্যিই খুশি। যেটা চেষ্টা ছিল সেটা সফল হয়েছে বলেই মনে হয়।
আর প্রযোজক হিসেবে?
নিজের প্রোডাকশনের প্রথম কাজ ভাল তো লাগছেই। কিন্তু, কতটা ব্যবসা করল ছবিটা সেটা বুঝতে এখনও দু’সপ্তাহ তো লাগবেই।
প্রযোজনা, গল্প ভাবা, চিত্রনাট্য লেখা— সবটা একার হাতে করতে হল কেন?
সত্যি কথা বললে বলব, ‘কস্ট কাটিং’। এতে অনেকের টাকা বেঁচে যায়। যেটা হয়তো প্রোমোশনে কাজে লাগাতে পারি। আর তা ছাড়া বাঙালি তো কাঁকড়ার জাত। সে জন্যই আমরা পিছিয়ে পড়ে আছি আজও। কলকাতায় এখন যাঁরা ব্যবসা করছেন হাতে গোনা কয়েক জন বাঙালি ছাড়া বাকি অন্য প্রদেশের মানুষেরাই ডমিনেট করছেন। কোনও একটা রেভোলিউশন না হলে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির খুব মুশকিল।
আরও পড়ুন, ‘বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ডাকলেও যে লেজ উঠিয়ে যেতে হবে, তার কোনও মানে নেই’
যুদ্ধের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে মনে হচ্ছে।
(হেসে) একেবারেই না। ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে তো রাখতেই হবে। আমি খুব আশাবাদী। আর সত্যিটা তো বলেই দিলাম। কস্ট কাটিং।
‘মেহের আলি’ ছবিটা কোথায় আলাদা?
যে কোনও ধর্মের থেকে মানুষ যে অনেক বড়, সেই মেসেজটাই রয়েছে ছবিতে। একটা নিটোল বাঙালি গল্প। মেহের আলিকে নিজের ভাই, দাদা, বয়ফ্রেন্ড বা ছেলে হিসেবে মানুষ কানেক্ট করতে পারছেন। ছবির গানও অসাধারণ। আমি সব কিছু দিয়ে চেষ্টা করেছি। আরও একটা নতুনত্ব রয়েছে।
‘মেহের আলি’ ছবির একটি দৃশ্য।
কী সেটা?
এই ছবিতে একদম নতুন হিরণকে দেখছেন দর্শক। যে মারলে ভিলেন ১০ তলা থেকে পড়ে যায় না। যে নায়িকার সঙ্গে বিদেশে গিয়ে নাচে না। চেহারায় কোনও প্যাকস্ বা মাসলস্ নেই। আমি নিজেই এখন দেখে ভাবছি ওহ মাই গড! কী করে এত কষ্ট করলাম! আর বোধহয় করতে পারব না।
প্রযোজনা তো হল। পরিচালনায় আসছেন কবে?
আমার প্রোডাকশনের পরের ছবিটা আমি পরিচালনা করব। ওটাতেই আমার পরিচালক হিসেবে ডেবিউ হবে।
কনগ্র্যাচুলেশন। ছবির নাম কী? কাস্ট ঠিক করেছেন?
স্টোরি রেডি, কাস্ট রেডি। মুম্বইয়ের দু’তিন জন থাকবেন। নামটা এখনও ঠিক করিনি। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকেই শুটিং শুরু করে দেব। এর থেকে বেশি এখনই জানতে চাইবেন না প্লিজ।
আরও পড়ুন, ‘রণবীরের বাবা তো হতে পারিনি, সে দুঃখ রয়েছে’
নিজের প্রোডাকশন ছাড়া বাইরের কাজ করছেন না?
দেখুন কেরিয়ারের শুরু থেকেই আমি খুব বেছে কাজ করি। বছরে একটা করেই ছবি করি। মানুষ সেটা মনে রেখেছেন। বছরে ৫০ টা করে ছবি করলেও এই ক’টা ভাল ছবির নামই মনে রাখতেন দর্শক। ফলে প্ল্যানিং ছাড়া ছবি করার কোনও মানে হয় না। বরং সেই সময়টা নষ্ট না করে কবিতা লিখব, গল্প লিখব।
আপনার ছবিতে ‘ধর্ম’ খুব গুরুত্ব পেয়েছে। জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে যা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি নিজেও একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত। আপনার দলের কেউ ছবিটা নিয়ে কিছু বলেছেন?
আমি শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য তৃণমূল করি। মমতাদিকে দেখেই কলেজে পড়তে ছাত্র পরিষদ করতাম। এখনও তাই। ফলে দলে তিনিই আমার কাছে একমাত্র এবং শেষ কথা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি ‘মেহের আলি’ দেখলেন?
রাজনীতির বাইরে মমতাদির সঙ্গে একটা কথাও বলি না আমি। কারণ আমার অভিনয় জীবনটা আলাদা। রাজনৈতিক জীবনটা আলাদা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy