মেসির ‘গোট’ কনসার্ট। ১৪ বছর পরে কলকাতায় পা দিলেন লিয়োনেল মেসি। স্বাভাবিক ভাবেই উৎসাহী ছিলাম। আয়োজক শতদ্রু দত্ত আমাকে এই অনুষ্ঠানে গাওয়ার সুযোগ দেন। নির্ধারিত সময়ে যুবভারতীতে পৌঁছে যাই। আমার ‘বন্দে মাতরম’ গাওয়ার কথা। সুন্দর ও সুষ্ঠ ভাবে অনুষ্ঠান শুরু হয়। কিন্তু সাড়ে ১১টা নাগাদ, যুবভারতীতে মেসি ঢুকতেই ধীরে ধীরে বদলাতে থাকে চিত্র। কোথা থেকে যে এত লোকের জমায়েত হয়ে গেল, বুঝতে পারলাম না। চোখের সামনে এক জনের মাথা ফেটে যেতে দেখলাম।
আরও পড়ুন:
আমি গান গাওয়ার পরে একটা তাঁবুতে অপেক্ষা করছিলাম। একঝলক দেখলাম। কথা ছিল উনি আসবেন, সকলের সঙ্গে দেখা করবেন। সেই অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু দেখলাম, মেসি যখন মাঠ প্রদক্ষিণ করছেন, সেই সময় তাঁকে চারপাশ থেকে প্রচুর লোক ঘিরে ধরল। সবাই শুধু ছবি তুলতে চায়। এই একই চিত্র গত বার আইপিএলের সময় দেখেছিলাম। শাহরুখ খান ঢোকার পরেই যেন এক লহমায় লাখখানেক লোকের জমায়েত হয়ে যায়। এ বার মেসির ক্ষেত্রেও সেটাই হল। যে ভাবে লোকে ছবি তুলতে গিয়ে ওঁকে ঘিরে ধরে, উনিও ভয় পেয়ে যান। বিদেশে তো এ সব দেখতে তিনি অভ্যস্ত নন।
আমি, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়— সকলেই ছিলাম মেসির অপেক্ষায়। তবে খারাপ লাগছে এত হাজার হাজার দর্শকের জন্য। তারা এত দাম দিয়ে টিকিট কেটে মেসিকে দেখতে এসেছিল। টিকিটের দাম নেহাত কম তো নয়। সেখানে তাঁকে দেখতে না পেয়ে তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। কারণ, মেসিকে ঘিরে ছিল শুধুই ক্যামেরা। গ্যালারিতে বসে তারকাকে দেখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। মানুষের আবেগ রয়েছে তাঁকে ঘিরে। তাই মেসির মুখটা ঠিক করে দেখতে না পেয়ে এই প্রতিক্রিয়া হয় দর্শকের।
স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনার পরে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তবে আমার মতে রাজ্য সরকার যথেষ্ট পুলিশ মোতায়েন করেছিল। কিন্তু মাঠে র্যাফ পর্যাপ্ত ছিল না। সেটা আর একটু বেশি হলে এমন পরিস্থিতি এড়ানো যেত হয়তো। মনটা খারাপ হয়ে আছে। মুখ্যমন্ত্রী থেকে শাহরুখ, সকলের থাকার কথা ছিল। কিন্তু এত আনন্দ নিমেষে বিষাদে পরিণত হল। আমরাও অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু বিশৃঙ্খলা শুরু হতেই মেসি বেরিয়ে যান। আর কী! আমরাও বেরিয়ে গেলাম।