দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই গাড়ি। ছবি সমাজমাধ্যম থেকে
‘কার গাড়িতে ধাক্কা মারলি রে? শেষে কি না, সেলিব্রিটির গাড়িতেই...’!
মঙ্গলবার রাত তখন প্রায় ১২.৩০টা। সাঁকরাইল থানা এলাকায় জাতীয় সড়কে গাড়ি দুর্ঘটনার পর মদ্যপ লরি চালকের সঙ্গে জাতীয় সড়কে নজরদারির দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীর এমন কথোপকথনে চমকে গিয়েছেন অভিনেতা অঙ্কুশ। দুর্ঘটনার পর কোনওক্রমে কলকাতায় ফিরে, বুধবার সকালে তাঁর ‘টিম’-এর সদস্যদের উলুবেড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পাঠিয়েছিলেন অভিনেতা। কিন্তু অভিযোগ, থানায় পৌঁছলে পুলিশের তরফে দুর্ঘটনার প্রমাণ চাওয়া হয়। কিন্তু তা ‘টিম’-এর সদস্যদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। ফলে অভিযোগও নেয়নি উলুবেড়িয়া থানা।
অভিনেতা জানাচ্ছেন, কোলাঘাট থেকে ধুলাগড় টোলপ্লাজার মধ্যবর্তী জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় পড়েন তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, জাতীয় সড়কের ওই অংশটির মধ্যে বাগনান, বাউরিয়া, পাঁচলা, সাঁকরাইল এবং উলুবেড়িয়া— এই পাঁচটি থানা পড়ে। যদিও বুধবার এই প্রতিটি থানাই দায় এড়িয়ে গিয়েছে। উলুবেড়িয়া থানার তরফেও জানানো হয় যে, মঙ্গলবার রাতে ওই এলাকায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি এবং বুধবার দুর্ঘটনার কোনও অভিযোগও জমা পড়েনি। এখানেই উঠছে প্রশ্ন! অভিনেতা অঙ্কুশকেও যদি ‘দায় এড়ানো’ খেলার শিকার হতে হয়, তাহলে কোনও সাধারণ মানুষ জাতীয় সড়কে বিপদে পড়লে কী হবে? যিনি দুর্ঘটনার কবলে পড়বেন, তাঁকেই প্রমাণ জোগাড় করতে হবে! এই প্রসঙ্গে অঙ্কুশ বলছিলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে যা বুঝলাম, খালি হাতে অসহায় ভাবে ফিরে আসা ছাড়া সাধারণ মানুষের আর কিছু করার নেই!’’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরের সিপাইবাজারে ‘দেবী স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন’এর সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনে গিয়েছিলেন অভিনেতা। অনুষ্ঠান শেষে নৈশভোজ সেরে কলকাতা ফেরার পথে ধুলাগড়ের টোল প্লাজার কাছে দুর্ঘটনায় পড়েন অভিনেতা। অঙ্কুশের কথায়, ‘‘আমার গাড়িটা একটা লরির পিছনে ছিল। আমার ড্রাইভার হর্ন দেওয়ায় লরি ড্রাইভার একটি লেন ছেড়ে দেওয়ায়, আমার গাড়ি লরিটিকে ওভারটেক করতে শুরু করে। সেই সময় হঠাৎই লরিটি আবার পুরনো লেনে ফিরে আসে। লরির ধাক্কায় আমার গাড়িটা পুরোপুরি ঘুরে যায়। এসইউভি ছিল বলে গাড়িটা উল্টে যায়নি। তাই প্রাণে বেঁচে গিয়েছি। আর সেটা হলে বেঁচে ফিরতাম কি না ভগবান জানেন!’’
অভিনেতা অবশ্য জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই পুলিশের নজরদারি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল। তার পরই পুলিশের স্বগতোক্তি, ‘শেষে কি না, সেলিব্রিটির গাড়িতেই’! ঘটনার বিবরণ ও পুলিশের মন্তব্য সমাজমাধ্যম দিয়েছেন অঙ্কুশ। সঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া এসইউভির ছবি। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘মদ্যপ লরি চালকের সঙ্গে পুলিশের হাল্কা কথাবার্তা শুনে অবাক হয়েছি। দুর্ঘটনার পর পরিস্থিতি সামলাবো, এলাকাটি কোন থানার মধ্যে পড়ে তা খোঁজ নেব না দুর্ঘটনার পর নিজস্বী তুলে প্রমাণ দেব!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy