Advertisement
E-Paper

চেহারার মিল নয়, চরিত্র হয়ে উঠতে প্রয়োজন অনেক কিছু, পর্দার মৃণাল প্রসঙ্গে বললেন চঞ্চল

১৪ মে মৃণাল সেনের জন্মদিন। ‘পদাতিক’-এ মৃণাল সেন হয়ে ওঠার নেপথ্যের গল্প শোনালেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৪ ২০:১২
Bangladeshi actor Chanchal Chowdhury speaks about his journey for Mrinal Sen’s biopic Padatik

মঙ্গলবার নন্দন চত্বরে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার বিকেলে নন্দন চত্বরে স্বাভাবিক ভিড়। নন্দনের মূল ভবনের বাইরে মানুষটি দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। পরনে সাদা পাজামা-পঞ্জাবি। বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী যেন ‘তারকা’ হয়েও ওই ভিড়েরই একজন। অনুরাগীদের মধ্যে কেউ কেউ চিনতে পেরে এগিয়ে এসে তাঁর ‘কারাগার’ ওয়েব সিরিজ় বা ‘আয়নাবাজি’ ছবির প্রশংসা করলেন। কেউ আবার ছবি তুললেন। এক ফাঁকে চঞ্চল কথা বললেন আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে।

মঙ্গলবার নন্দনে চঞ্চলের উপস্থিত থাকার নেপথ্যে বিশেষ কারণ ছিল। ১৪ মে মৃণাল সেনের জন্মদিন। সেই উপলক্ষে নন্দনে প্রকাশ্যে এল সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত মৃণাল সেনের বায়োপিক ‘পদাতিক’-এর টিজ়ার। প্রয়াত পরিচালকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল। ছবির ঘোষণাপর্ব থেকে যে সফর শুরু হয়েছে, তা একপ্রকার পূর্ণতা পেল মঙ্গলবার। নন্দনে বড় পর্দায় নিজেকে মৃণাল সেনের চরিত্রে দেখে কী মনে হল চঞ্চলের? অভিনেতা বললেন, ‘‘স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছিল। কাজটা যখন শুরু করি, তখন মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছিল। কিন্তু ডাবিং করা পর্যন্ত টেনশনে ছিলাম।’’ চঞ্চল জানালেন, লুক সেটের ছবি দেখে প্রথমে তাঁর একটু মনের জোর বাড়ে। কিন্তু তার পরেও একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, মৃণাল সেনকে নিজের মধ্যে ধারণ করা। চঞ্চল বললেন, ‘‘এত বড় এক জন ব্যক্তিত্ব! পরিচালনা ছাড়াও তাঁর ব্যক্তিগত জীবন এবং রাজনৈতিক সত্তাকে ধারণ করতে না পারলে তো চরিত্রটাই অপূর্ণ রয়ে যাবে!’’

পর্দায় মৃণাল হয়ে উঠতে তাই নিজের মতো প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেন চঞ্চল। কারণ তাঁর কথায়, ‘‘শুধু চেহারার মিল থাকলেই হয় না। আরও অনেক কিছু লাগে।’’ জানালেন, নতুন করে মৃণাল সেনের ছবিও তিনি দেখেছিলেন। চঞ্চল বললেন, ‘‘কলেজজীবনে ওঁর ছবি দেখেছি দর্শক হিসেবে। কিন্তু ওঁর চরিত্রে অভিনয় করব বলে যখন ছবিগুলো আবার দেখলাম, তখন মানুষটাকে নতুন ভাবে চিনতে পারলাম।’’

কোনও দিন স্বপ্নেও ভাবেননি, মৃণাল সেনের চরিত্রে অভিনয় করবেন। পুরো ভাবনা এবং তা বাস্তবায়নের কৃতিত্ব কিন্তু চঞ্চল সৃজিতের ঝুলিতেই তুলে দিতে চাইলেন। চঞ্চল বললেন, ‘‘কারণ, সে সময় আমি বাবাকে হারাই। অভিনয় করার মতো মানসিক অবস্থাই ছিল না। সৃজিতদা সাহায্য না করলে কাজটা করতে পারতাম না।’’

সম্প্রতি মৃণাল সেনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে অঞ্জন দত্ত পরিচালিত ‘চালচিত্র এখন’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। বিষয়টা নিয়ে চঞ্চলের কী মত? অভিনেতা বললেন, ‘‘অঞ্জনদার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কিন্তু কাজের ব্যস্ততায় এখনও দেখার সময় পাইনি। ওটিটিতে ছবিটা রয়েছে। দেশে ফিরলেই দেখে নেব।’’ ছবির ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশেও সতীর্থদের থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন চঞ্চল। তাঁর কথায়, ‘‘প্রচুর মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। প্রথমত, সৃজিতদার সঙ্গে আমার প্রথম কাজ। দ্বিতীয়ত, মৃণাল সেন নিজেও বাংলাদেশের মানুষ। সেই চরিত্রে বাংলাদেশেরই এক জন অভিনেতা অভিনয় করছেন, এটা অনেকেরই খুব ভাল লেগেছিল।’’

দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে ছবি দেখার অভ্যাসকে হারিয়ে যেতে দেন না। বাংলাদেশেও দর্শক বাংলা ছবি দেখেন। টলিপাড়ায় এখনও বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানানো হয়। চঞ্চল বললেন, ‘‘সময়টা বদলে গিয়েছে। আমরা যদি ভাল ছবি তৈরি করে দর্শককে হলে আনতে না পারি, সেটা আমাদের ব্যর্থতা।’’ তবে বাংলাদেশেও পরিস্থিতি যে খুব ভাল, তা মানতে চাইলেন না চঞ্চল। পার্থক্যটাকে তিনি ‘উনিশ আর বিশ’ বলে উল্লেখ করলেন। চঞ্চল বললেন, ‘‘সময়টাই কঠিন। মাধ্যমগুলোই তো বদলে গিয়েছে! ওটিটিতে ছবি দেখছেন মানুষ। দর্শককে হলে যেতে বাধ্য করবে, এমন বাংলা ছবি তৈরি করতে হবে।’’

Chanchal Chowdhury mrinal sen biopic Bangladeshi Actor Nandan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy