Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
bollywood

ফিল্ম তো বটেই, কার্টুনিস্ট হিসাবে কেরিয়ার শুরু করা বাসু অমর হয়ে থাকবেন মাইলস্টোন দুই সিরিয়ালের জন্যও

মধ্যবিত্ত পরিবার এবং তাদের সুখ দুঃখ শুধু প্রেক্ষাপট নয়, হয়ে উঠেছিল তাঁর ছবির অন্যতম চরিত্র। তথাকথিত তারকাদের বদলে গ্ল্যামারবৃত্তের বাইরে থাকা মুখগুলিই ছিল তাঁর ছবির কুশীলব।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২০ ১৬:১৪
Share: Save:
০১ ২০
আরবসাগরের নোনা বাতাসে যে বাঙালিরা তাঁদের নৌকার পাল উড়িয়ে রাখতে পেরেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম বাসু চট্টোপাধ্যায়। কেরিয়ার শুরু করেছিলেন কার্টুনিস্ট হিসেবে। তার পর পা রাখেন বলিউডে। পরিচালক হিসেবে। তার পর বলিউড শাসন করেছেন বহু দিন। আজ শেষ হল সেই অধ্যায়ের।

আরবসাগরের নোনা বাতাসে যে বাঙালিরা তাঁদের নৌকার পাল উড়িয়ে রাখতে পেরেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম বাসু চট্টোপাধ্যায়। কেরিয়ার শুরু করেছিলেন কার্টুনিস্ট হিসেবে। তার পর পা রাখেন বলিউডে। পরিচালক হিসেবে। তার পর বলিউড শাসন করেছেন বহু দিন। আজ শেষ হল সেই অধ্যায়ের।

০২ ২০
জন্ম ১৯২৭ সালের ১০ জানুয়ারি। রাজস্থানের অজমের শহরে। জীবনভর প্রবাসী এই বাঙালির পরিচালনায় হিন্দি ছবিতে রাজত্ব করেছিল বাঙালি আমেজ।

জন্ম ১৯২৭ সালের ১০ জানুয়ারি। রাজস্থানের অজমের শহরে। জীবনভর প্রবাসী এই বাঙালির পরিচালনায় হিন্দি ছবিতে রাজত্ব করেছিল বাঙালি আমেজ।

০৩ ২০
আজকের মুম্বই, সাবেক বম্বে থেকে প্রকাশিত ব্লিৎজ পত্রিকায় কার্টুনশিল্পী হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন বাসু চট্টোপাধ্যায়। কাজ করেছিলেন দীর্ঘ ১৮ বছর।

আজকের মুম্বই, সাবেক বম্বে থেকে প্রকাশিত ব্লিৎজ পত্রিকায় কার্টুনশিল্পী হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন বাসু চট্টোপাধ্যায়। কাজ করেছিলেন দীর্ঘ ১৮ বছর।

০৪ ২০
পরিচালনায় হাতেখড়ি বাসু ভট্টাচার্যের অধীনে। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পাওয়া রাজ কপূর-ওয়াহিদা রহমানের ‘তিসরি কসম’ ছবিতে বাসু চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সহকারী পরিচালক।

পরিচালনায় হাতেখড়ি বাসু ভট্টাচার্যের অধীনে। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পাওয়া রাজ কপূর-ওয়াহিদা রহমানের ‘তিসরি কসম’ ছবিতে বাসু চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সহকারী পরিচালক।

০৫ ২০
১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় বাসু চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় প্রথম ছবি, ‘সারা আকাশ’। ‘পিয়া কা ঘর’, ‘উস পার’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘ছোটি সি বাত’, ‘চিতচোর’, ‘স্বামী’, ‘খট্টা মিঠা’, ‘প্রিয়াত্মা’, ‘সফেদ ঝুট’, ‘বাতোঁ বাতোঁ মেঁ’-সহ অসংখ্য ছবির সাহায্যে বলিউডে নিজস্ব ঘরানা তৈরি করেন বাসু।

১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় বাসু চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় প্রথম ছবি, ‘সারা আকাশ’। ‘পিয়া কা ঘর’, ‘উস পার’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘ছোটি সি বাত’, ‘চিতচোর’, ‘স্বামী’, ‘খট্টা মিঠা’, ‘প্রিয়াত্মা’, ‘সফেদ ঝুট’, ‘বাতোঁ বাতোঁ মেঁ’-সহ অসংখ্য ছবির সাহায্যে বলিউডে নিজস্ব ঘরানা তৈরি করেন বাসু।

০৬ ২০
মধ্যবিত্ত পরিবার এবং তাদের সুখ দুঃখ শুধু প্রেক্ষাপট নয়, হয়ে উঠেছিল তাঁর ছবির অন্যতম চরিত্র। তথাকথিত তারকাদের বদলে গ্ল্যামারবৃত্তের বাইরে থাকা মুখগুলিই ছিল তাঁর ছবির কুশীলব।

মধ্যবিত্ত পরিবার এবং তাদের সুখ দুঃখ শুধু প্রেক্ষাপট নয়, হয়ে উঠেছিল তাঁর ছবির অন্যতম চরিত্র। তথাকথিত তারকাদের বদলে গ্ল্যামারবৃত্তের বাইরে থাকা মুখগুলিই ছিল তাঁর ছবির কুশীলব।

০৭ ২০
অমল পালেকর, বিদ্যা সিনহা, বিন্দিয়া গোস্বামী, দেবেন বর্মা, পার্ল পদমজির মতো অভিনেতাদের দিয়েই দর্শকমহলে বাজিমাত করতেন বাসু চট্টোপাধ্যায়।

অমল পালেকর, বিদ্যা সিনহা, বিন্দিয়া গোস্বামী, দেবেন বর্মা, পার্ল পদমজির মতো অভিনেতাদের দিয়েই দর্শকমহলে বাজিমাত করতেন বাসু চট্টোপাধ্যায়।

০৮ ২০
বড় বাজেটের ব্লকবাস্টার ছবির পাশাপাশি তাঁর ছবির নিভৃত ও স্নিগ্ধ পরিসরও ছিল সর্বভারতীয় বিনোদনের জগতে পছন্দের জায়গা।

বড় বাজেটের ব্লকবাস্টার ছবির পাশাপাশি তাঁর ছবির নিভৃত ও স্নিগ্ধ পরিসরও ছিল সর্বভারতীয় বিনোদনের জগতে পছন্দের জায়গা।

০৯ ২০
তাঁর নির্মাণে নারীচরিত্রের ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তারা সবাই আটপৌরে সাজের মধ্যবিত্ত পরিবারে মেয়ে বা গৃহিণী। কিন্তু চিত্রনাট্যে তাঁদের ভূমিকা ছিল ছবির সাফল্যের তুরুপের তাস।

তাঁর নির্মাণে নারীচরিত্রের ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তারা সবাই আটপৌরে সাজের মধ্যবিত্ত পরিবারে মেয়ে বা গৃহিণী। কিন্তু চিত্রনাট্যে তাঁদের ভূমিকা ছিল ছবির সাফল্যের তুরুপের তাস।

১০ ২০
রাজেশ খন্নাকে নিয়ে তাঁর ‘চক্রব্যূহ’ এবং অমিতাভ বচ্চনকে নায়কের ভূমিকায় রেখে ‘মঞ্জিল’ ছবি দু’টি বক্স অফিসে সফল হয়নি। কিন্তু সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হয় দু’টি ছবিই।

রাজেশ খন্নাকে নিয়ে তাঁর ‘চক্রব্যূহ’ এবং অমিতাভ বচ্চনকে নায়কের ভূমিকায় রেখে ‘মঞ্জিল’ ছবি দু’টি বক্স অফিসে সফল হয়নি। কিন্তু সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হয় দু’টি ছবিই।

১১ ২০
তাঁর পরিচালনায় ‘শওকিন’ ছবিতে চেনা রূপের বাইরে সম্পূর্ণ অন্য ভূমিকায় দেখা যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে। বিপরীতে নায়িকা ছিলেন রতি অগ্নিহোত্রী।

তাঁর পরিচালনায় ‘শওকিন’ ছবিতে চেনা রূপের বাইরে সম্পূর্ণ অন্য ভূমিকায় দেখা যায় মিঠুন চক্রবর্তীকে। বিপরীতে নায়িকা ছিলেন রতি অগ্নিহোত্রী।

১২ ২০
বাসু চট্টোপাধ্যায় পরিচালনা করেছিলেন বাংলা ছবিও। তাঁর পরিচালিত বাংলা ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘হঠাৎ বৃষ্টি’, ‘টক ঝাল মিষ্টি’ এবং ‘হচ্ছেটা কি’।

বাসু চট্টোপাধ্যায় পরিচালনা করেছিলেন বাংলা ছবিও। তাঁর পরিচালিত বাংলা ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘হঠাৎ বৃষ্টি’, ‘টক ঝাল মিষ্টি’ এবং ‘হচ্ছেটা কি’।

১৩ ২০
শেষের দিকে কাজ করা কমিয়ে দিয়েছিলেন বলিউডে। তখনকার ছবিগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতার দৌড়ে কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েছিল তাঁর পরিচালিত ছবিগুলি।

শেষের দিকে কাজ করা কমিয়ে দিয়েছিলেন বলিউডে। তখনকার ছবিগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতার দৌড়ে কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েছিল তাঁর পরিচালিত ছবিগুলি।

১৪ ২০
বলিউডে তাঁর পরিচালিত ছবিগুলির মধ্যে শেষ বার বক্স অফিসে সফল হয়েছিল ১৯৮৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘চামেলি কি শাদি’ ছবিটি।

বলিউডে তাঁর পরিচালিত ছবিগুলির মধ্যে শেষ বার বক্স অফিসে সফল হয়েছিল ১৯৮৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘চামেলি কি শাদি’ ছবিটি।

১৫ ২০
১৯৯৭ সালে মুক্তি পায় বাসু চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘গুদগুদি’ ছবিটি। এর পর আর কোনও হিন্দি ছবি তৈরি করেননি তিনি।

১৯৯৭ সালে মুক্তি পায় বাসু চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘গুদগুদি’ ছবিটি। এর পর আর কোনও হিন্দি ছবি তৈরি করেননি তিনি।

১৬ ২০
দূরদর্শনের জন্য দু’টি ধারাবাহিক পরিচালনা করেছিলেন বাসু চট্টোপাধ্যায়। দুটোই দূরদর্শনের ইতিহাসে আইকনিক বা মাইলফলক বলে স্বীকৃত।

দূরদর্শনের জন্য দু’টি ধারাবাহিক পরিচালনা করেছিলেন বাসু চট্টোপাধ্যায়। দুটোই দূরদর্শনের ইতিহাসে আইকনিক বা মাইলফলক বলে স্বীকৃত।

১৭ ২০
আশির দশকে দূরদর্শনে সম্প্রচারিত হত তাঁর পরিচালিত ‘রজনী’। মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন প্রিয়া তেন্ডুলকর। সে সময়ে জনপ্রিয়তার প্রথম সারিতে ছিল এই ধারাবাহিকটি।

আশির দশকে দূরদর্শনে সম্প্রচারিত হত তাঁর পরিচালিত ‘রজনী’। মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন প্রিয়া তেন্ডুলকর। সে সময়ে জনপ্রিয়তার প্রথম সারিতে ছিল এই ধারাবাহিকটি।

১৮ ২০
নব্বইয়ের দশকে তিনি ছোট পর্দায় ফিরে আসেন ব্যোমকেশ বক্সীকে নিয়ে। রজিত কপূর ছিলেন সত্যান্বেষীর ভূমিকায়। সহকারী অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন কে কে রায়না। চূড়ান্ত জনপ্রিয় হয়েছিল এই সিরিজ। বহু বাঙালি পাঠকের মনে ব্যোমকেশ বললে এখনও শুধু রজিত কপূরের মুখই ভেসে ওঠে।

নব্বইয়ের দশকে তিনি ছোট পর্দায় ফিরে আসেন ব্যোমকেশ বক্সীকে নিয়ে। রজিত কপূর ছিলেন সত্যান্বেষীর ভূমিকায়। সহকারী অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন কে কে রায়না। চূড়ান্ত জনপ্রিয় হয়েছিল এই সিরিজ। বহু বাঙালি পাঠকের মনে ব্যোমকেশ বললে এখনও শুধু রজিত কপূরের মুখই ভেসে ওঠে।

১৯ ২০
বাসু চট্টোপাধ্যায়ের দুই মেয়ে। সোনালি ভট্টাচার্য ও রূপালি গুহ। তাঁদের মধ্যে রূপালি এক জন পরিচালক। ছবির পাশাপাশি তিনি পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু টিভি সিরিয়াল।

বাসু চট্টোপাধ্যায়ের দুই মেয়ে। সোনালি ভট্টাচার্য ও রূপালি গুহ। তাঁদের মধ্যে রূপালি এক জন পরিচালক। ছবির পাশাপাশি তিনি পরিচালনা করেছেন বেশ কিছু টিভি সিরিয়াল।

২০ ২০
শেষ জীবনে মুম্বইয়ের গৃহকোণই ছিল পরিচালকের নিশ্চিন্ত পরিসর। বার্ধক্যজনিত কারণে কিছুটা স্মৃতিভ্রংশের শিকারও হয়েছিলেন। নিজের করা ছবির পোস্টারও চিনতে পারতেন না মাঝে মাঝে। ইন্ডাস্ট্রিও যেন ভুলে গিয়েছিল তাঁকে। বিস্মৃতির অন্তরালে থাকতে থাকতেই চলে গেলেন নবতিপর পরিচালক। রয়ে গেল তাঁর রেখে যাওয়া ‘রজনীগন্ধা’-র সুগন্ধ।

শেষ জীবনে মুম্বইয়ের গৃহকোণই ছিল পরিচালকের নিশ্চিন্ত পরিসর। বার্ধক্যজনিত কারণে কিছুটা স্মৃতিভ্রংশের শিকারও হয়েছিলেন। নিজের করা ছবির পোস্টারও চিনতে পারতেন না মাঝে মাঝে। ইন্ডাস্ট্রিও যেন ভুলে গিয়েছিল তাঁকে। বিস্মৃতির অন্তরালে থাকতে থাকতেই চলে গেলেন নবতিপর পরিচালক। রয়ে গেল তাঁর রেখে যাওয়া ‘রজনীগন্ধা’-র সুগন্ধ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE