Advertisement
E-Paper

ভূপেন হাজারিকার গানের ধারা নিশ্চয়ই এখনও, কোথাও না কোথাও আমরা ধরে রেখেছি: শিলাজিৎ

এ বছর ভূপেন হাজারিকার জন্মের শতবর্ষের শুরু। প্রতিবাদের গানেও তো অনন্য ছিলেন শিল্পী। আজও কতটা প্রাসঙ্গিক তিনি? কী মনে করেন শিলাজিৎ?

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:০৪

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫। সঙ্গীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকার জন্মশতবর্ষের সূচনা। শুধু সুরে বুঁদ হওয়া নয়, এত বছর পরেও তাঁর গান বলে মানুষের সংগ্রাম, ভালবাসা আর আশার গল্প। এক সময়, উত্তর-পূর্বের সঙ্গে গোটা ভারতের মেলবন্ধনের অন্যতম প্রধান সেতু হয়ে উঠেছিল তাঁর কণ্ঠ। ভূপেন হাজারিকা আজও কতটা প্রাসঙ্গিক? তাঁর সৃষ্টি সমকালীন শিল্পে কতখানি প্রাসঙ্গিক? কী মনে করেন গায়ক, সুরকার, গীতিকার শিলাজিৎ মজুমদার? শুনল আনন্দবাজার ডট কম।

অসমের মাটির সুর, পাহাড়ি মেজাজ, তার সঙ্গে দেশজ প্রাণ মিশিয়ে ভূপেন হাজারিকা গানে যে নতুন এক ধারা এনেছিলেন, তা কি আমরা বহন করতে পারছি? শিলাজিতের বক্তব্য, “আমার মনে হয়, যে কোনও সাঙ্গীতিক ধারা, কোনও নির্দিষ্ট সময়ের প্রচেষ্টা, কোনও সময়ের অভিব্যক্তি, যা আমাদের কানে আসে, তা আমাদের মধ্যে কোথাও না কোথাও থেকে যায়। আমরা চাই বা না চাই। আমাদের ছোট ছোট ভাললাগাগুলো আমাদের ছুঁয়ে যায়, আমাদের মধ্যে থেকে যায়, ভিতরে ভিতরে লালনপালন করি। কখন যে সেটা কোন জায়গায় বেরিয়ে আসে, আমরা বলতে পারব না। সুতরাং, একটা কথা তো খুব সত্যি, আজ ১০০ বছর পরেও ওঁর কথা বঙ্গবাসী মনে রেখেছেন। ভারতবাসীরও মনে আছে। অবশ্যই বিদেশেও ওঁর খ্যাতি ছিল। এই যে এত দিন বাদেও উনি প্রাসঙ্গিক, এবং ওঁর কথা আমরা আলোচনা করছি, এতেই প্রমাণিত হয় যে ওঁর একটা প্রভাব থেকে গিয়েছে। থাকতে বাধ্য।”

তাঁর কথায়, ছোটবেলায় তো ওঁর গান না শিখেও গুনগুন করেছেন। এখনও সেই গান উপভোগ করেন। “সেই কোন ছোটবেলায় শুনেছি। কিন্তু এখনও সেটা গুনগুন করি। সুতরাং, ওঁর ধারা নিশ্চয়ই এখনও, কোথাও না কোথাও আমরা ধরে রেখেছি। হয়তো চিহ্নিত করা যাবে না, কিন্তু শ্রোতা ও সুরকার-গীতিকার সকলের মধ্যেই কোথাও না কোথাও নিশ্চয়ই ওঁর প্রভাব রয়ে গিয়েছে”, মত শিলাজিতের।

প্রতিবাদের গানেও অনন্য ছিলেন ভূপেনবাবু। কী মনে করেন শিলাজিৎ? শিল্পীর কথায়, “প্রতিবাদের থেকেও আমার মনে হয়েছে ওঁর গানে দীর্ঘ দিন ধরে শোষিত শ্রেণির মানুষের কথা ‘ব্যালাড’-এর মতো করে বেশি উঠে এসেছে। আমার মনে হয়, তৎকালীন সামাজিক পরিস্থিতি ওঁর গানে অনেক জোরালো ভাবে ফুটে উঠেছে। তবে প্রতিবাদী সত্তা গানগুলির মধ্যে নিশ্চয়ই আছে। যেমন, ওঁর ‘দোলা’ বা ‘ও গঙ্গা বইছ কেন?’”

কিন্তু, একই সঙ্গে শিল্পীও এও স্বীকার করে নিচ্ছেন, ছোট থেকে ওঁর গান কেবল ভাল লাগত বলেই শুনেছেন। কখনও গভীরে গিয়ে ভাবেননি। কারণ, সেই বয়সে সম্ভবও ছিল না। তবুও, মনে গেঁথে আছে ভূপেনবাবুর কত কত গান। শিল্পী বলছেন, “ছোটবেলায় যখন ওঁর গান শুনেছি, তখন তো প্রতিবাদ বুঝিনি, আলোচনা বা বিশ্লেষণও করিনি। অথচ, এই গানগুলি এমনই, যে এই কম্পোজ়িশনগুলি আমাদের মনে গেঁথে আছে। আমরা ছোটবেলায় যখন ‘নিশীথ রাত্রির প্রতিধ্বনি শুনি’ শুনেছি, আমাদের স্রেফ ভাল লেগেছে। তখন তো গানের কথার গভীরে গিয়ে বিশ্লেষণ করে বোঝার ক্ষমতা হয়নি। কিন্তু, গানটি ভাল লেগেছে, গুনগুন করেছি। তাই আমার মতে, প্রতিবাদ-সামাজিক বার্তা— এই সব কিছুর বাইরে গিয়েও, একটি গানের যে বিনোদনমূলক উপাদান, কম্পোজ়িশন, কথার যে জোর, শ্রোতাকে তাৎক্ষণিক আনন্দ দেওয়ার যে ক্ষমতা, তা ওঁর সৃষ্টিতে ভরপুর ছিল। যে কারণে, ওঁর একের পর এক গান আমরা শুনেছি।”

Bhupen Hazarika Silajit Majumder Legend
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy