পেশায় অভিনেত্রী তিনি, পর্দায় বলিষ্ঠ চরিত্রগুলি ফুটিয়ে তুলতে পারদর্শী। কঙ্গনা রনৌতের গুণমুগ্ধ আসমুদ্র হিমাচল। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেই পরিচয় ছাপিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন বিশেষ রাজনৈতিক মতাদর্শের বাহক। গত লোকসভা নির্বাচনে হিমাচল-কন্যা কঙ্গনা বিজেপির টিকিটে জিতে এসেছেন মন্ডি কেন্দ্র থেকে। এখন তিনি সাংসদ। নানা ভাবে দলীয় বক্তব্যের সমর্থনে গলা তোলেন। এমনকি এক সময় কঙ্গনা দাবি করেছিলেন, ভারতের আসল স্বাধীনতা এসেছে ২০১৪ সালে, নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর। পঞ্জাবের কৃষক আন্দোলনের বিরুদ্ধে মুখ খুলেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন অভিনেত্রী। এ বার বিতর্কের পাশাপাশি নিজেকে কি করে তুললেন হাস্যাস্পদ?
২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গিহানায় ২৬ নিরপরাধ পর্যটকের মৃত্যুর পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন। ৬ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরও সমাজমাধ্যমে নিজের বক্তব্য জানিয়েছিলেন। পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসবাদে পূর্ণ, জঘন্য দেশ’ বলে দাগিয়ে দিয়েছিলেন। এমনকি পৃথিবীর মানচিত্র থেকে পাকিস্তানকে মুছে দেওয়া উচিত বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। কিন্তু গত রবিবার অভিনেত্রী ইনস্টাগ্রামে একটি রিল পোস্ট করেন। দেখা যায়, রাজস্থানের কোনও প্রাসাদে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। সবুজ বাগানে সবুজ-গোলাপি রেশমি শাড়িতে মোহময়ী লাগছিল তাঁকে। তাঁরই সঙ্গে তাল মিলিয়ে নেচে ওঠে ময়ূর, কিশোরীর মতো লাফালাফি করে গাছ থেকে ফল পাড়তেও দেখা যায় সাংসদকে।

কঙ্গনার ভাগ করে নেওয়া এই রিল ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন:
কঙ্গনা লেখেন, “বেঁচে থাকার জন্য কেবল একটি জিনিসই প্রয়োজন। তা হল জীবন। আশা রাখি, আমরা শুধু বেঁচে থাকার জন্যই বাঁচব না। জীবনটাকে উপভোগ করব।’’ আর এখানেই একটি ভুল করে বসেন নায়িকা। এই রিলে তিনি জুড়ে দেন পাকিস্তানি গায়ক জ়ায়েন জ়োহেবের গান, ‘রানঝেয়া ওয়ে’। ২০২২ সালে মুক্তি পেয়েছিল এই পাকিস্তানি গান।
২০১৬ সালে জম্মু-কাশ্মীরের উরিতে জঙ্গিহানার পর ভারতে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় পাকিস্তানি শিল্পীদের। প্রায় ৯ বছর পর সম্প্রতি তাঁদের নিয়ে ফের কাজ করার কথা শুরু হচ্ছিল ভারতে। কিন্তু তারই মধ্যে ঘটে যায় পহেলগাঁও কাণ্ড। ফলে ফের পাকিস্তানি শিল্পীদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর দাবি ওঠে। বন্ধ হয়ে যায় ফাওয়াদ খানের আসন্ন ছবি ‘আবির গুলাল’-এর মুক্তি। এমনকি পাকিস্তানি তারকাদের অভিনীত ছবিগুলির পোস্টার থেকে তাঁদের ছবি সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও এসেছে। সরকারি মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত কোনও রকম গান বাজানো বন্ধ করা নির্দেশও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কঙ্গনার মতো স্পষ্টবক্তা অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদের রিলে পাকিস্তানি গান ব্যবহার করায় নতুন করে উস্কে উঠেছে বিতর্ক। পাকিস্তানি নেটাগরিকেরা তুলোধনা করেছেন কঙ্গনাকে। একই ভাবে, এ পারে নায়িকার অনুরাগীরা ছুড়ে দিয়েছেন কটু মন্তব্য। তবে নায়িকার অমনোযোগিতায় হাসির রোলও তুলেছেন অনেক ভারতীয়।