শহরে ভূমি পেডনেকর। ছবি: সংগৃহীত।
না, একবারের জন্যও তিনি আরজি কর-কাণ্ডের কথা উচ্চারণ করেননি। কিন্তু এই ঘটনার জেরে নতুন করে নারীসুরক্ষা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তার জবাব দিয়েছেন ভূমি পেডনেকর। সোমবার কলকাতায় এসেছিলেন বলি অভিনেত্রী। সেখানেই লিঙ্গবৈষম্য, নারী নির্যাতন নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। জবাবে অভিনেত্রী বললেন, “যুগ যুগ ধরে চলে আসা অত্যাচারে জর্জরিত নারী। এক কথায় সেই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। কিন্তু মেয়েদের এ বার মুখ খুলতে হবে। মুখ বুজে সহ্য করার বদলে মুখ খুলতে হবে। তাঁদের সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে ঘটে যাওয়া অত্যাচারের কথা সমাজকে জানাতে হবে। তবে সমাজকে পাশে পাবেন তাঁরা।”
ভূমি যেন এ দিন শান্তির দূত! সাদা পোশাকে স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে তাঁর উপস্থিতি। তাঁর বক্তব্য জোরালো হলেও তাতে উগ্রতা ছিল না। নিজের জীবনের উদাহরণ দিলেন ভূমি। তাঁর কথায়, “দেশের প্রত্যেকটি পরিবারের মেয়েরা কোনও না কোনও ভাবে হেনস্থার শিকার হয়েছেন। আমিও আক্রান্ত হয়েছি। দিনের পর দিন সেই ঘটনা মনের মধ্যে পুষে রেখেছি। যার ছাপ এবং চাপ পড়েছে রোজের জীবনযাত্রার উপর, যা কাম্য নয়।” তাঁর মতে, একে হেনস্থার শিকার তার উপরে লোকলজ্জায় নীরব থাকা। মেয়েদের উপরে এ যেন সাঁড়াশি আক্রমণ! যার ভারে মেয়েরা জর্জরিত, ক্লান্ত। তবু তার সমাধান নেই।
সমস্যা যেমন আছে, তার সমাধানও রয়েছে। সেই পথের হদিস দিলেন ভূমি?
নায়িকার যুক্তি, “ঘর থেকেই বদল শুরু হোক। নারী যেমন পুরুষকে সম্মান করবেন, তেমনই পুরুষও সম্মান করতে শিখুন নারীকে। তবেই লিঙ্গবৈষম্য দূর হবে।” এ-ও জানান, প্রতি দিন খবরের কাগজ খুললেই প্রথম পাতায় জ্বলজ্বল করে ধর্ষণের ঘটনা। পড়তে পড়তে অবসন্ন তিনি। মন হয়ে ওঠে বিদ্রোহী। জানতে চায়, আর কত দিন এ ভাবে নারী অত্যাচারিত হবে? তাঁর দ্বিতীয় পরামর্শ, কর্মক্ষেত্রেও লিঙ্গসমতা ফেরাতে হবে। টেকনিশিয়ানদের থেকে শুরু করতে হবে। শেষ হবে পরিচালনার স্তরে। মেয়েরা যেমন বলবেন, তাঁদের বক্তব্যও শুনতে হবে। পোশাক থেকে আচরণ— মেয়েদের সব কিছু নিয়ে সারা ক্ষণ সমালোচনা চলে। ভূমির মতে, এটাও নারী হেনস্থার অন্যতম কারণ। পাশাপাশি তিনি শিশুদের বড় করে তোলার বিষয়টির উপরেও জোর দেন। “এখনকার শিশুরা যেন আগের তুলনায় অনেক বেশি অমানবিক। ওরা অনায়াসে কুকুরের লেজে বাজি বেঁধে জ্বালায়!” আফসোস অভিনেত্রীর। ভূমির আর্জি, শিশুদের মানবিক বিকাশ যথাযথ ভাবে হলে নারী নির্যাতনের মতো ঘটনা কমবে। আগামী প্রজন্মও মান এবং হুঁশ সম্পন্ন মানুষ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy