Advertisement
E-Paper

সমীক্ষা অনুসারে ক্রাইম সিরিজের প্রতি আকৃষ্ট দর্শকের ৮০ শতাংশই মহিলা, কিন্তু এর কারণ কী!

মহিলাদের উপর আক্রমণকারীদের মনে ঠিক কি ধরনের চিন্তার আনাগোনা ঘটে, কেমন করে তাদের হামলা থেকে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করা যেতে পারে, এমন সব বিষয়ের প্রাথমিক পাঠ নিতেই নাকি মহিলারা ক্রাইম সিরিজ দেখতে চান! আলোচনা করলেন দেবত্রী ঘোষ।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৬
What is the psychology behind women being obsessed with crime shows,podcasts

বেশির ভাগ মানুষই ‘অ্যাড্রেনালিন রাশ’ অনুভব করতে ভালবাসেন। এই ধরনের শো দৈনন্দিন চিন্তাভাবনা থেকে সাময়িক ভাবে বিচ্যুতি তৈরি করে। —এআই সহায়তায় গ্রাফিক আনন্দবাজার ডট কম।

জনপ্রিয় নায়িকা শারলিজ় থেরন ২০০৯ সালে পরিচালক ডেভিড ফিঞ্চার’কে একটি বই পড়তে দেন। বইটির নাম– ‘মাইন্ড হান্টার: ইনসাইড দ্য এফবিআই’জ় এলিট সিরিয়াল ক্রাইম ইউনিট’। জন ই ডগলাস এবং মার্ক ওলশ্যাকার-এর লেখা এই বই থেকেই পরে জন্ম নেয় জো পেনহলের বিখ্যাত অপরাধ কাহিনি ‘মাইন্ড হান্টার’, যা মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলারও বটে। ২০১৭ সালে নেটফ্লিক্সে যখন এর প্রথম সিজ়ন সম্প্রচারিত হয়, তার বেশির ভাগ পর্বই পরিচালনা করেছিলেন শো-এর অন্যতম প্রযোজক ডেভিড ফিঞ্চার নিজেই। অপরাধ জগতের কিছু হাড় হিম করা সত্য ঘটনা এবং এফবিআই-এর ১৯৭০ সালের ‘প্রোফাইল ডিটেলিং’-এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই ১০ এপিসোডের সিরিজ় রীতিমতো সাড়া ফেলে দেয় দর্শকের মধ্যে।

ক্রাইম কাহিনির সব শাখার সিরিজ় ও সিনেমারই বিশেষ দর্শক থাকেন, যাঁরা অপরাধ জগৎ, সিরিয়াল কিলিং বা থ্রিলার দেখতে ভালবাসেন। তাঁদের কাছে তো বটেই, ‘মাইন্ড হান্টার’ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অন্যান্য ধারার দর্শকের কাছেও। অপরাধ জগতের গভীর অনুসন্ধান ও বিশ্বাসযোগ্য অভিনয়ের সঙ্গে টানটান চিত্রনাট্য এই সিরিজকে ‘ক্রাইম ড্রামা’ হিসেবে বেশ জনপ্রিয় করে তোলে। আর এই জনপ্রিয়তা দেখেই পরিচালক ও প্রযোজক ২০১৯ সালে নিয়ে আসেন এর দ্বিতীয় সিজ়ন। থ্রিলার বা ক্রাইম-ড্রামা হিসেবে প্রথম না হলেও ‘মাইন্ড হান্টার’-এর ভূমিকা এই ধারায় যথেষ্ট যুগান্তকারী। এই সিরিজ়ের পরিচালনা ও গল্প বলার ধরন বুঝিয়ে দিয়েছিল, ‘ক্রাইম ড্রামা’ কী ভাবে সব ধরনের দর্শকের মনোযোগ ধরে রাখতে সক্ষম।

ভাল মানের ক্রাইম ড্রামা বা এই বিষয়ক পডকাস্ট সব রকম দর্শক ও শ্রোতার কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হলেও, বিভিন্ন সমীক্ষায় জানা গিয়েছে পুরুষের তুলনায় মহিলারা এ সবের দর্শক ও শ্রোতা হিসেবে সংখ্যায় ঢের বেশি। এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধতত্ত্ববিদ গেমা ফ্লিনের মতে, এর পিছনে আকর্ষণ ও ভীতি উভয়ের দ্বন্দ্ব কাজ করে। এই ধারার সিনেমা, সিরিজ, পডকাস্ট, এমনকি বই-ও মহিলাদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। কারণ, এই ধরনের বাস্তব অপরাধের ক্ষেত্রেও শিকার মূলত কম বয়সের মহিলারাই। এবং ভবিষ্যতে এর অনুপাত বাড়বে বই কমবে না বলেই তাঁর মত।

ভারতীয় দর্শকের হাতে নেটফ্লিক্স আসার কিছু দিনের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ও অন্যান্য দেশের নানা শাখার সিনেমা ও সিরিজ দর্শকের কাছে সহজলভ্য হয়ে ওঠে। আর তার কয়েক বছরের মধ্যেই হানা দেয় অতিমারি, যা অন্তত বছর দুয়েক-এর জন্য প্রায় সারা বিশ্বকেই ঘরে বন্দি করে ফেলে। সেই সময় ভারতের বিনোদন জগতে জাঁকিয়ে বসে আরও দু’টি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘অ্যামাজ়ন প্রাইম’ ও ‘ডিজ়নি হটস্টার’। আর এতেও দেখা মেলে দেশ-বিদেশের ক্রাইম ড্রামা, মার্ডার মিস্ট্রি আর সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের।

বিশ্বকে ‘কোভিড’ কব্জা করার আগেই নেটফ্লিক্সের আরও একটি সিরিজ বেশ জনপ্রিয়তা পায়। সেরা গ্যাম্বেল ও গ্রেগ বেরলান্তি পরিচালিত সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ‘ইউ’। প্রেম যদি অতিরিক্ত অনিয়ন্ত্রিত এক স্তরে গিয়ে পৌঁছোয়, তার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে, সেই নিয়ে গল্প। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া এই সিরিজ চলে পঞ্চম সিজ়ন পর্যন্ত! দর্শকেরা শুধুমাত্র এই সিরিজ় যে ‘বিঞ্জ ওয়াচ’ করেছেন তা-ই নয়, অনেকেই (বিশেষত মহিলারা) পরে জানিয়েছেন ছেলে, বন্ধু বা প্রেমিকের আচরণ তাঁদের জীবনে কত রকম বিপর্যয় ডেকে এনেছে। পরে শোয়ের নির্মাতারা জানান, ‘ইউ’-এর জনপ্রিয়তার মূল কারণ প্রধান চরিত্র জো গোল্ডবার্গের সঙ্গে অনেকেই বাস্তবে মিল খুঁজে পেয়েছেন তাঁদের প্রাক্তন প্রেমিক বা একপেশে প্রেমিকদের। এমনকি অনেকের মতে, এই শো দেখে, বেশ কিছু মহিলা এই ধরনের পুরুষের থেকে সাবধান হয়ে যাবেন, যা বাস্তব জীবনে বিশেষ ভাবে জরুরি।

ভারতীয় ওটিটি ও ক্রাইম ড্রামা/ থ্রিলার কিস্‌সা

নব্বইয়ের দশকে যখন কেবল টেলিভিশন-ই ভরসা ছিল, তখন ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ বা ‘করমচাঁদ’-এর মত গোয়েন্দা ধারাবাহিকের নিয়মিত দর্শক ছিলেন আট থেকে আশি, সকলেই। বলিউডেও এই ধারার বেশ কিছু ছবি বক্স-অফিসে সাফল্য পায়। যেমন, ‘গুপ্ত’, ‘বাজ়িগর’, ‘ডর’, ‘খিলাড়ি’ বা ‘মোহরা’।

What's the psychology behind women being obsessed with crime shows/podcasts

'সেক্রেড গেমস'-এ অপরাধ জগতের টান টান উত্তেজনা মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। ছবি: সংগৃহীত।

আবার অ্যামাজ়ন সংস্থা ভারতে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চালু করার পর তাদের যে হিন্দি সিরিজ় দর্শকদের এবং সমালোচকদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয়তা পায়, তার নাম ‘পাতাল লোক’। অবিনাশ অরুণ ও প্রসিত রায় পরিচালিত এই ‘নিও-নুয়া’ সিরিজটি প্রায় গোগ্রাসে দেখা শেষ করে দর্শক। এর পর অবশ্য এই সব প্ল্যাটফর্মে ভারতীয় ক্রাইম সিরিজ ও থ্রিলারের ঢল নামে রীতিমতো। অতিমারির কারণে অনেকেই তখন বাড়িতে বন্দি হয়ে নিজেদের অবসর সময় কাটাচ্ছেন বিভিন্ন সিরিজ় বা সিনেমা দেখে বা বই পড়ে। ফলে কোরিয়ান থ্রিলার থেকে আমেরিকান সিরিয়াল কিলিং-এর গায়ে কাঁটা দেওয়া কাহিনি, কিছুই পাতে পড়ে থাকেনি। আর সেই সিরিজ়গুলির টিআরপি-ও যথেষ্ট উঁচুর দিকে। আর এটা বলাই বাহুল্য যে ধারার শোয়ের টিআরপি উপরের দিকে থাকবে, সেই ধরনের ছবি বা সিরিজ় আরও বেশি করে প্রাধান্য পাবে ওটিটিতে। ফলে ‘দহাড়’, ‘বুরাড়ী মার্ডার কেস’, ‘জানেমন’, ‘সিগনাল’, ‘দিল্লি ক্রাইম’, ‘ছোটলোক’-এর মত শোয়ের আধিক্য দেখা যাচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। এবং এই প্রত্যেকটি শো-ই ‘ভিউয়ারশিপ’-এর দিক থেকে ‘ভাইরাল’ বললে ভুল হবে না।

অন্ধকার জগতের প্রতি টান! কারণ কী?

তলিয়ে ভাবতে বসলে, এই সব শো-এর প্রতি তুমুল আকর্ষণের অনেক কারণই খুঁজে পাওয়া যায়। প্রধান কারণ অবশ্য এই ধরনের শো-এ টানটান উত্তেজনা থাকে। আর বেশির ভাগ মানুষই ‘অ্যাড্রেনালিন রাশ’ অনুভব করতে ভালবাসেন, তবে তা চার দেওয়ালের নিরাপত্তায়। এই ধরনের শো দৈনন্দিন চিন্তাভাবনা থেকে সাময়িক ভাবে বিচ্যুতি তৈরি করে। অনেক বিনোদন সংস্থার কর্তাদের মতে, অতিমারির চিন্তা ও রোজকার টেনশন থেকে নিজের মনকে দূরে সরিয়ে নিতে এই ধরনের শোয়ের জুড়ি মেলা ভার। এ ছাড়া সিরিয়াল কিলিং বা থ্রিলারে অ্যাডভেঞ্চারের নেশা তো আছেই!

What's the psychology behind women being obsessed with crime shows/podcasts

যে ধারার শোয়ের টিআরপি উপরের দিকে থাকবে, সেই ধরনের ছবি বা সিরিজ় আরও বেশি করে প্রাধান্য পাবে ওটিটিতে। যেমন- ‘দহাড়’। ছবি: সংগৃহীত।

বেশির ভাগ দর্শকই মহিলা!!

বিভিন্ন সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে ক্রাইম–ড্রামা, সাইকোলজিকাল থ্রিলার বা ট্রু ক্রাইম পডকাস্ট— এই সব কিছুরই আশি শতাংশ দর্শক বা শ্রোতা কেবল মহিলা। কোনও বিশেষ দেশে নয়, বরং গোটা পৃথিবী জুড়ে একই হাওয়া। এই ঘটনা নতুন না হলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহিলা দর্শকের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে বলেই জানা গিয়েছে। মহিলারা এই ধরনের সিরিজ় বা ডকুমেন্টারির একচেটিয়া দর্শক। বিভিন্ন মনোবিজ্ঞানীর মতে, অনলাইন ডেটিং-এর যুগে এই সব শোয়ের মহিলা দর্শক সংখ্যা ক্রমশ বাড়তির দিকে। আর তার কারণ দৈনন্দিন বাস্তবের সঙ্গেই জুড়ে রয়েছে। কোনও অচেনা পুরুষের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে কী কী তথ্য তাঁদের কাছে থাকা জরুরি, বা কী সতর্কতা বজায় রাখা উচিত, তার একটা আন্দাজ পাওয়া যায় এই সব অপরাধ জগৎ কেন্দ্রিক সিরিজ় বা সিনেমা থেকে। তার কারণ বেশির ভাগ ‘সভ্য’ সমাজে আশি শতাংশ অপরাধের শিকার বিভিন্ন বয়সি মহিলাই। এই ধরনের শো থেকে তাঁরা এক ধরনের নিরাপত্তার ম্যানুয়াল তৈরি করেন বলেই দাবি মনস্তত্ত্ববিদদের। একজন অপরাধী, বিশেষ করে সে যখন পুরুষ, কোনও অপরাধ করার আগে তার মাথায় ঠিক কী কী ধরনের চিন্তাভাবনা ঘুরপাক খায়, এই সব শো মারফত সেটাই বোঝার চেষ্টা করেন মহিলারা।

এখন কথা হল, ‘অন স্ক্রিন’ যা হচ্ছে, তার সঙ্গে বাস্তবের আদৌ কোনও মিল আছে কি? উত্তর হল, আছে। শুধু তা-ই নয়, বেশ কিছু ক্রাইম ড্রামা সত্যি ঘটনার ওপর ভিত্তি করেই তো তৈরি! উদাহরণ, ‘দিল্লি ক্রাইম’-এর প্রথম সিজ়ন। ২০১২ সালে দিল্লিতে ঘটে যাওয়া ‘নির্ভয়া’-কাণ্ডের উপর ভিত্তি করেই ২০১৯-এর এই সিরিজ তৈরি হয়। এটা যতটা সত্যি, এর উল্টো ঘটনা অবশ্য অনেকটাই বাস্তব। ২০২২ সালে ঘটে যাওয়া ‘মেহরাউলি মার্ডার কেস’-এর মূল অভিযুক্ত আফতাব পুনাওয়ালা দিল্লি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারকে খুন করার পর তাঁর শরীর ৩৫ ভাগে ভাগ করে দক্ষিণ দিল্লির বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দেওয়ার বুদ্ধি তিনি পেয়েছিলেন ক্রাইম ড্রামা ‘ডেক্সটার’ দেখার পর। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকে যেমন ক্রাইম ড্রামা দেখে সাবধান হবেন, তেমনই অনেকে এই সব ড্রামা দেখে নতুন কায়দায় অপরাধ ঘটানোর উপায় খুঁজে পাবেন। তবে দ্বিতীয় সম্ভাবনা তুলনায় কম।

What's the psychology behind women being obsessed with crime shows/podcasts

ভারতে যে হিন্দি সিরিজ় দর্শকদের এবং সমালোচকদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয়তা পায়, তার নাম ‘পাতাল লোক’। ছবি: সংগৃহীত।

কিন্তু মহিলা দর্শক বেশি হওয়ার কারণ কী? ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মনস্তত্ত্বের অধ্যাপক অ্যামান্ডা ভিক্যারির মতে, এর মূল কারণ হল অপরাধীদের চিন্তন প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত হওয়া। আক্রমণকারীর ক্ষেত্রে কী কী বিষয় অনুঘটকের কাজ করতে পারে, তা জানার চেষ্টা করা, এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ যদি পালাতে বা বাঁচতে সক্ষম হয়ে থাকেন, তা হলে তা কী ভাবে ঘটেছে, সেটা জেনে নেওয়া।

ভারতের মতো দেশে, বেশির ভাগ অপরাধের শিকার মহিলারাই। সেখানে এই ধরনের সিরিজ়ে যখন তাঁরা অপরাধীদের কড়া শাস্তি পেতে দেখেন, কোথাও তারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারে, যেখানে বাস্তবে ন্যায়বিচার এই সমাজে বিরল ঘটনা। অর্থাৎ সমাজে মেয়েদের যে নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা বজায় থাকা উচিত, তা থাকে না বলেই অন স্ক্রিন আইনি পদক্ষেপ ক্ষণিকের জন্য হলেও মানসিক স্বস্তি এনে দেয়। এ ছাড়া ভিক্টিমের প্রতি সহানুভূতি-বোধ তো রয়েছেই।

What's the psychology behind women being obsessed with crime shows/podcasts

‘দিল্লি ক্রাইম’-এ দেখা গিয়েছে, মহিলা গোয়েন্দা বা পুলিশকে অপরাধীদের শাস্তি দিতে। ছবি: সংগৃহীত।

এ ছাড়া রয়েছে আরও একটি জরুরি বিষয়। বেশ কিছু ক্রাইম সিরিজ়, যেমন ‘দিল্লি ক্রাইম’, ‘মেয়র অফ ইস্ট টাউন’, ‘দ্য ফল’, ‘কোল্ড কেস’ বা ‘মর্দানি’-র মতো ছবিতে দেখা গিয়েছে, মহিলা গোয়েন্দা বা পুলিশকে অপরাধীদের শাস্তি দিতে। অনেক ক্ষেত্রে আবার আইনের উপর আস্থা না থাকায়, অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার ভার নিজের হাতেই তুলে নিয়েছেন মহিলারা। যেমন ‘লা মান্তে’। যেখানে আক্রমণকারীরা মূলত পুরুষ এবং ভিক্টিম অধিকাংশ ক্ষেত্রে মহিলা বা শিশু— সেখানে মহিলাদের হাতে অভিযুক্তের শাস্তি এক ধরনের ‘ক্যাথারসিস’-এর কাজ করে মহিলা দর্শকের কাছে।

২০২১ সালে বিবিসি’র সঞ্চালক চার্লি ওয়েবস্টারের একটি তথ্যচিত্র মুক্তি পায়। নাম, ‘নোহোয়্যার টু রান: আবিউজ়ড বাই আওয়ার কোচ’। কৈশোরে একটি রানিং ক্লাব-এ ভর্তি হন ওয়েবস্টার। সেখানে মাত্র ১৫ বছর বয়সে নিজের কোচের হাতেই যৌন নির্যাতনের শিকার হন। ২০২৪-এ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর সমীক্ষা অনুযায়ী প্রতি তিন জন মহিলার মধ্যে অন্তত এক জন যৌন বা শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের শিকার। ক্রাইম সিরিজ় বা তথ্যচিত্রের মাধ্যমে তাঁদের সেই না-বলা ব্যথা আরো বেশি করে প্রকাশ পায়। নিজের অতীতের মুখোমুখি দাঁড়ানোর সাহসও হয়তো খুঁজে পান তাঁরা। কোথাও হয়তো আশা করে থাকেন, এই ভাবেই তাঁদের প্রতি দিনের বেঁচে থাকার যুদ্ধ মানুষের নজরে পড়বে। আর এর প্রতিফলন হিসেবে বাস্তব সমাজে যদি কোনও দিন বদল আসে! তবে এই আশা কতখানি বাস্তবসম্মত, সে আলোচনা বরং অন্য দিনের জন্য তোলা থাক।

Web Series Dahaad Delhi Crime Sacred Games Patal Lok Female Psychology
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy