Advertisement
E-Paper

ব্লাউজের বোতাম খুললে আর ব্রা দেখালেই সাহসী হয় না: স্বস্তিকা

বিস্ফোরক স্বস্তিকা।পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের 'শাহজাহান রিজেন্সি' নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রেম, প্রাক্তন প্রেমিক আর নিজের উত্তরণের কথা বললেন তিনি। বিস্ফোরক স্বস্তিকা।পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের 'শাহজাহান রিজেন্সি' নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রেম, প্রাক্তন প্রেমিক আর নিজের উত্তরণের কথা বললেন তিনি।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ ১৩:৩৭
'শাহজাহান রিজেন্সি'তে কমলিনীর চরিত্রে দেখা যাবে স্বস্তিকাকে।

'শাহজাহান রিজেন্সি'তে কমলিনীর চরিত্রে দেখা যাবে স্বস্তিকাকে।

ভোলাপচুয়াস চরিত্র মানেই স্বস্তিকা?

আসলে ছবিটা দেখলে বিষয়টা বোঝা যাবে।আমি কোনওদিন নিজেকে রিপিট করব না। এটা আগেও বলেছি।'শাহজাহান রিজেন্সি'-র চিত্রনাট্যটা যখন সৃজিত পড়ে শোনায়, খুব ভাল লেগেছিল। কমলিনীর চরিত্র শুনে মনে হয়েছিল সারা জীবনে একজন অভিনেত্রী এমন চরিত্র আর নাও পেতে পারে!অদ্ভুত একটা জৌলুস আছে। আর আছে বেদনা।অভিনয়ের দিক থেকে খুব শক্ত চরিত্র।

কমলিনী কি 'শাহজাহান রিজেন্সি'-তে শুধুই একজন হস্টেস?

আমরা ভাবি একজন হস্টেস কেবল দেহ বিক্রিই করে। একজন হস্টেস তার ক্লায়েন্টকে সেক্সুয়ালি এন্টারটেন করা ছাড়া আর কী করবে? এটা ভুল।ছবিতে কমলিনীর কাছে লোকে মগজের জন্য আসে।কমলিনীর ক্ষেত্রে সেক্সুয়াল অরগ্যাজমের সঙ্গে সঙ্গে ইন্টেলেকচুয়াল অরগ্যাজম খুব গুরুত্বপূর্ণ। লোকে সে জন্যও আসে ওর কাছে। ওর অসম্ভব পড়াশোনা আছে। নেরুদা থেকে স্টকমার্কেটের বিষয়, খেলোয়াড়দের নাম...যে কোনোও আলোচনায় কমলিনী মেধার উজ্জ্বল মুখ। ওর ইমোশনাল গ্রাফটা পুরো পয়েন্টেড।কখনও পাঁচ তো কখনোও নব্বই। ভীষণ ডিগনিফায়েড চরিত্র।

মানে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের মনের মাধুরী মিশেছে এই চরিত্রে...

আমি তো আগেই বললাম। চিত্রনাট্য খুব জোরালো। এত লেয়ারড চরিত্র। কিছু রেখে দিলাম। কিছু ঢেকে রাখলাম এমন চরিত্র নয়। সৃজিত মুখোপাধ্যায় না হয়ে অন্য কোনোও পরিচালক এই চরিত্রটা দিলেও আমি কাজটা করতাম। কাজটা করার পর নিজেরই এত ভাল লেগেছে! টেকনিশিয়ানদের মধ্যে অনেকে এই ছবিটা দেখে বেশ কয়েক জন বলেছে কমলিনীর জন্য তাঁদের কষ্ট হয়েছে। এমন সব দৃশ্য আছে... পারফরমার হিসেবে আমি তৃপ্ত!

একটা কথা বলুন এরকম একজন বিদুষী সুন্দরী মহিলার এত করুণ পরিণতি...

এটা দেখার জন্য ছবিটা দেখতে হবে। আমি সৃজিত, ওর ইউনিটের লোক সকলেই ভাবতাম এরকম একজন মহিলার পরিণতি এত মর্মান্তিক কেন হবে? আসলে এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে চাই। আমরা সব সময় বলি যারা আত্মহত্যা করে তারা কাপুরুষ। ভীতু। এ সব বড় বড় ডায়লগ বলে কোনও লাভ নেই। মানুষ এমন এক মানসিক পরিস্থিতিতে পৌঁছয়, এমন যন্ত্রণা পায়, যে সেই মুহূর্তে সুইসাইড করে। কেউ এক মাস ধরে প্ল্যান করে মরে না। আর যারা প্ল্যান করে তারা কোনওদিন মরে না। আমি এই বিষয়টা নিয়ে পড়াশুনা করেছি বলেই বলছি, যারা গায়ে আগুন দিয়ে মৃত্যু চায় তারা আগুন লাগার পর মুহূর্তেই কিন্তু দরজা খুলে বেরোতে চায়। আবার বাঁচতে চায়। কে বলবে? এই মুহূর্তের বদলে সব শেষ হয়ে যায়! রিগ্রেট করার সময় ও পায় না। কমলিনীও জীবনে লড়াই করতে করতে একদিন তো ক্লান্ত হবে?

আরও পড়ুন: ‘সবাই দেখা হলে বলেন, খুব ভাল অভিনয় কর, কিন্তু কেউ ডাকেন না’



আপনি জীবনে প্রচুর যন্ত্রণা লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে গেছেন...

হ্যাঁ তবে আমার পরিবার আমায় রক্ষা করেছে। আর গুটিকয়েক বন্ধু আছে আমার যাদের কাছ থেকে মাঝে মাঝে হোয়াটস্অ্যাপ পাই, 'তুই ঠিক আছিস?' আর কী? আজ একটু বাবার কথা বলি। যখন অভিনেত্রী হব ঠিক করলাম আমার বাবা সন্তু মুখোপাধ্যায় একটা কথাই বলেছিল ‘‘নাচতে নেমেছ যদি ঘোমটা টানার থাকে তবে নাচতে নেবই না।’’ বুঝতেই পারছেন কতখানি সাপোর্ট এটা।

শুনেছিলাম কোনও এক খবরের কাগজে লঁজারির শুটের ছবি নিয়েও আপনার বাবার উৎসাহ ছিল?

এখন কলকাতা শহরে লঁজারি শুট হচ্ছে। অনেকেই বডি নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করছেন কিন্ত আমি ২০০৮-এ যখন লঁজারি শুট করেছিলাম আমার মনে আছে সেটা ছাপার পর মায়ের কাছে সকালে সেদিন প্রচুর ফোন এসেছিল। সবাই বলেছিল, ‘‘আজকের কাগজ সন্তু যেন না দেখে।’’ মা স্বভাবতই বুঝতে পারছিল না কী ভাবে রিঅ্যাক্ট করবে। কিন্তু বাবা বলেছিল ‘‘ছবির অরিজিনাল নিয়ে ছবি বাঁধিয়ে রাখবে। এই জোর বাবার কাছ থেকেই পাওয়া।’’

মা চলে যাওয়ার পর কী স্বস্তিকা পরিণত হলেন?

একদম তাই। বাবার দায়িত্ব। মেয়ের অভিভাবকও তো আমি। আগে সব মায়ের ওপর ফেলে চলে যেতাম। এখন তা সম্ভব নয়। অন্তত দিনের শেষে আমার বাবা আর মেয়ে তো বলবে তাদের কাছে আমি একজন 'কমপ্লিট ডটার আর মাদার'।


স্বস্তিকা আসলে অভিনেতা অনির্বাণের পরম ভক্ত।

আর নিজের সংসার?

সংসারের আগে প্রেম। আমার না বাকি সব ঠিক আছে। ওই প্রেমের জায়গাটা ঘাঁটা। এখন একটা মানসিক জায়গায় চলে এসেছি যে জানি আমার প্রেম হবে না। আসলে অভিনেত্রীদের জীবনে অনেক জ্বালা!

যেমন?

সে যদি খুব নম্র হয় যে যা বলছে সব শুনবে, লোকে ভাববে সে খুব 'ইজিলি অ্যাভেলেবল'। আবার অভিনেত্রী যদি ভাবে সে নিজের মতো করে জীবন তৈরি করবে। সাফ কথা বলবে। সেটাও সমস্যা। আমি যে ধরনের ছবি করেছি সেগুলো শুধু আমি পিঠ দেখিয়েছি বা ব্লাউজের বোতাম খুলেছি, ব্রা পরে দাঁড়িয়েছি বলেই সাংঘাতিক সাহস দেখিয়েছি তা নয়। চরিত্রগুলো করার মধ্যেও এক ধরনের সাহসিকতা আছে। সেখানে আমি চরিত্র হিসেবে বলছি, ' আমার স্বামী যদি আমার শরীরের খিদে না মেটাতে পারে আমি অন্য পুরুষের কাছে যাব'। একটা চরিত্রর এই কথা সমাজের সঙ্গে মেলে না। আমার সমস্ত ছবি আমি আমার বাবাকে দেখিয়েছি এবং বাবা কোনওদিন বলেনি এই দৃশ্য কেন করলি? ওকে কেন চুমু খেলি? প্যান্টি কেন দেখা গেল? তার পরে যদি মানুষের মনে হয় ওর প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে ও আবার অভিনয় করছে কেন? সেটা তাদের সমস্যা। আমার বাবার কথা আমার কাছে শেষ কথা।

আরও পড়ুন: ক্যানসারে আক্রান্ত রাকেশ রোশন, জানালেন ছেলে হৃতিক

এই প্রাক্তন প্রেমিকের প্রসঙ্গ এল যখন একটা প্রশ্ন আসছে। 'শাহজাহান রিজেন্সি'-তে সৃজিত আর পরম দুই প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গেই আপনি কাজ করলেন?

এত পুরনো দুটো বিষয়। একটা পোস্ট দেখবেন রিটুইট করেছি। 'প্রথমে অনেক যায় আসে পরে কিছুই যায় আসে না। এভাবেই আমরা বড় হই।'
তো দশ বছর আগের সম্পর্ক নিয়ে কী হবে? পরম সেটে ঢুকলেই 'কুছ কুছ হোতা হ্যায়' এর শাহরুখ- কাজল হয়ে যাব নাকি আমরা?'রেমেনেসিং আওয়ার ওল্ড মেমরিজ'। চল্লিশ ছুঁই ছুঁইতে এসে এই প্যানপ্যানি চলে না।

আর সৃজিত?

সৃজিত খুব রুথলেস ছবির জন্য। ওর সঙ্গে যদি কারও খুনোখুনি হয় চরিত্রের প্রয়োজনে ও তাকে নেবেই। আর আমার প্রাক্তন প্রেমিক ছবি করলে এরকম চরিত্র পেলেও করব না? এত বোকা নই আমি।

'শাহজাহান রিজেন্সি'র একটি দৃশ্যে পরমব্রত এবং স্বস্তিকা।

পরমের সঙ্গে ব্রেক আপের পরেও আপনি 'ভূতের ভবিষ্যত' করেছেন...

সদ্য ব্রেক আপ হয়েছে তখন। তো? ভাবুন আমার কেরিয়ারে 'ভূতের ভবিষ্যত' নেই! প্রফেশনালিজম দেখালেও মানুষ খুশি নয়। না দেখালেও সমালোচনা করবে। মানুষকে খুশি করা যাবে না। প্রেমিককেও খুশি করা যাবে না। ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে থেকেও সে আমাকে বলবে তুমি কেন ওর সঙ্গে কাজ করবে? কেন ওকে চুমু খাবে? যে বলছে সে খুব ভাল করে জানে সেটে আমায় ক্যামেরাম্যান বলছে 'ডান দিকে ঘুরে দু ইঞ্চি ঝুঁকে ব্লাউজটা খোলো' সেখানে আরও চল্লিশটা লোক আছে। এগুলো মাথায় রেখেই একজন অভিনেত্রীকে এই কাজ করতে হয়। তাকেই যত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। তারচেয়ে এরকম কাউকে জীবনে রাখলামই না যে এই প্রশ্ন করতে পারে। আমার বাবা তো আর এগুলো করে না।

বেশ। ছবির কথায় আসি।অনির্বাণ আর আপনি ইতিমধ্যেই বেশ আদরে মেখে আছেন এই ছবিতে...

আমি ওর ফ্যান। সব নাটক দেখেছি। যীশু যখন করতে পারল না ডেটের জন্য তখন চরিত্র নির্বাচন হচ্ছে দেখে আমি সৃজিতকে বলেইছিলাম প্লিজ আমার এই উপকারটা করো এই চরিত্রে অনির্বাণকে নাও। আমার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ কর।ও খুবই 'ইনহিবিটেড'। প্রথমে দিদি বলছিল। বললাম 'এ ক'দিন ক্যামেরার সামনে দিদি বললে প্রেম করব কী করে?' ও পিসি বলতে শুরু করল। যাই হোক কাজ করে খুব ভাল লেগেছে।
আনন্দে ভরপুর স্বস্তিকা।
পাড়ি দিলেন প্যারিস।
কমলিনী রইল প্রকাশের অপেক্ষায়...

(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)

Celebrity Interview Swastika Mukherjee Shahjahan Regency Tollywood Celebrities শাহজাহান রিজেন্সি স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy