স্নেহা মানেই ভিলেন। মানবেন?
হ্যাঁ, নেগেটিভে লোকে আমাকে ভাবেন। কিন্তু পজিটিভও করেছি। গ্রে ক্যারেক্টার করেছি। একটা কথা জোর দিয়ে বলব, আমার কোনও নেগেটিভ ক্যারেক্টার সেম নয়।
পর্দায় ভিলেন হয়ে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগের জীবনটা কেমন ছিল?
আমি অ্যাঙ্কারিং দিয়ে শুরু করেছি কেরিয়ার। তার পর খবর পড়েছিলাম এক বছর। তখন কলেজের ফাইনাল ইয়ার। সেন্ট জেভিয়ার্সে পড়তাম, সোশিওলজি নিয়ে। খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। কারণ বাংলা মাধ্যম থেকে ইংরেজি মাধ্যমে গিয়েছিলাম। ফলে সব এফর্ট তখন ওখানেই দিতে হয়েছিল। বাড়ি থেকে বলেছিল অ্যাঙ্কারিং করতে পার, সিরিয়াল নয়।
সেই সিরিয়াল, অর্থাত্ অভিনয়ই আপনার পেশা হল…
হুম। গ্র্যাজুয়েশনের পর সিম্বাসিসের পরীক্ষা দিয়ে রিটেন ক্র্যাক করেছিলাম। কিন্তু ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে মনে হয়েছিল আমি বাইরে থাকতে পারব না। যে দিন ফিরছি, সে দিন এয়ারপোর্টে বসেই ‘এখানে আকাশ নীল’-এর জন্য ফোন পেয়েছিলাম। তার পর ‘সুবর্ণলতা’ হিউজ সাকসেস।
আরও পড়ুন, ‘বাংলা সিনেমা দেখি না,বাঙালি হিসেবে বলাটা খুব লজ্জার’
তার পর থেকে নেগেটিভ রোলের অফারই আসে না কি?
আসে। কিন্তু আমি যেগুলো করেছি তার সবক’টা আলদা। ধরুন, ‘সুবর্ণলতা’, অশিক্ষিত মেয়ে সংসারের কূটকচালি করতে ভালবাসে। পিরিয়ডটাও ভাবতে হবে। আবার ‘সাত পাকে বাঁধা’র জুঁই পজেটিভ। তার পর ‘জলনূপুর’ নেগেটিভ। সেখানে ভূমির হিংসেটা অন্য জায়গায়। সে মডার্ন, শিক্ষিত মেয়ে। সেটাও মাইলস্টোন আমার কেরিয়ারে। তার পর অনেক নেগেটিভ অফার এলেও করিনি। শুধু ‘ভুতু’ করেছিলাম। দু’মাসের গল্প। কিন্তু অন্য ভাবে ট্রান্সফর্ম করা ছিল চরিত্রটা। এই তো সে দিনও পেট্রল পাম্পে একটা বাচ্চা আমাকে ‘ওঝা পিসি’ (ভুতু ধারাবাহিকে স্নেহার চরিত্রের নাম) বলে ডেকেছে।
আরও পড়ুন, ‘আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে রিজেক্ট করার সুযোগ অনেক বেশি’
পজিটিভ চরিত্রে কি দর্শক আপনাকে পছন্দ করেন না?
আপনাকে বলি, ‘বিকেলে ভোরের ফুল’-এ স্নেহাশিস চক্রবর্তী পজিটিভ ক্যারেক্টার দিয়েছিলেন আমাকে। অবাক হয়েছিলাম। সেই চরিত্র মানে ‘ভাল দিদি’ নিয়ে বাচ্চাদের খুব ভাল রেসপন্স ছিল। তখন একটা জিনিস বুঝলাম, দর্শকদের গ্রান্টেড হিসেবে নিতে পারি না আমরা। আমরা ভাবি, মানুষ এ রকম ভাবছেন। এ রকমই দেখতে পছন্দ করেন। যদি তাই হত, তা হলে পজিটিভ ক্যারেক্টার অত জনপ্রিয় হত না। মানুষকে বোকা ভাবলে মুশকিল।
বাড়ি থেকে বলেছিল অ্যাঙ্কারিং করতে পার, সিরিয়াল নয়, বললেন অভিনেত্রী।
পজিটিভ, নাকি নেগেটিভ— কোন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করা কঠিন?
গত ১২ বছরে শিখেছি নেগেটিভ করাটা কঠিন। পজিটিভে যদি তেমন স্ক্রিপ্ট রাইটার হন তা হলে তিনি নানা রকম লেয়ার, শেডস দেবেন। কিন্তু নেগেটিভে লেয়ারটা অটোম্যাটিক্যালি আসে। আর আমি যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি— লীনাদি, স্নেহাশিসদা, সাহানাদি, শর্বরীদি, এঁরা সবাই খুব ভাল লেখেন।
‘নকশিকাঁথা’য় তো সেই নেগেটিভ, নাকি?
‘নকশিকাঁথা’য় এখনও নেগেটিভ নয়। ভবিষ্যতে কী হবে জানি না। কারণ এখনও পর্যন্ত আমার চরিত্র অর্থাত্ রোহিনী যা করছে ঠিক করছে। কারণ বহু বছর ধরে যশের সঙ্গে কমিটেড সম্পর্ক রয়েছে। তার পর হঠাত্ দুর্গাপুজোয় গ্রামে গিয়ে দেখে ওখানকার একটা মেয়ের সঙ্গে যশের কেমিস্ট্রি তৈরি হয়েছে, জীবনের ডিসিশন পাল্টে যাচ্ছে, সেখানে রোহিনীর লজিক আছে। কঠিন কথা কঠিন করেই বলে সে। আর আমি এখন নাটকও করছি। ‘ফোর্থ বেল’-এর সঙ্গে ‘পি-এস ভালবাসা’।
আরও পড়ুন, পরকীয়া মানেই গুজগুজ নয়, সম্মানেরও হতে পারে, বললেন কৌশিক
স্নেহা ব্যক্তিগত জীবনে কি নেগেটিভ?
না! আমি খুব পজিটিভ। কিন্তু অ্যাজ আ পার্সন খুব উইক। মুখে বলি, লড়কে লেঙ্গে। কিন্তু আমি পারব না। আমার ফ্যামিলির সাপোর্ট সিস্টেমটা দরকার।
টানা টেলিভিশনে অভিনয় করতে করতে একঘেয়ে লাগে না?
আমি আজ যা হয়েছি টেলিভিশনের জন্য। আই লভ ডুয়িং দিস। তবে ভাল না লাগলে আমি কাজ করি না। ‘জলনূপুর’-এর পর এক বছর আমি কাজ করিনি।
কিন্তু শুধু এতে কি শিল্পীর খিদে মেটে?
দেখুন, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটা এত ছোট, সেখানে এত ট্যালেন্ট। সব রকম চরিত্র আমার কাছে আসবে এটা তো হতে পারে না। ফলে সব সময় নেগেটিভ ভাবলে, স্যাটিসফাই হচ্ছি না ভাবলে কি আমি পারফর্ম করতে পারব? টেলিভিশন অত সহজ নয়।
আরও পড়ুন, বিয়ের পরের জীবনটা এনজয় করছি, বলছেন শুভশ্রী
কেন বলছেন এ কথা?
টেলিভিশনকে প্রতি দিনের ভাত-ডাল ভেবে ফেলাটাই আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল। এটা তো ব্যবসা। অনেক কিছু নির্ভর করে টেলিভিশনের রেটিংয়ের ওপর। তবে হ্যাঁ, আমি টেলিভিশনে দাঁড়িয়ে সব সময় ভাল স্ক্রিপ্ট পেয়েছি। যেখানে প্রত্যেক দিন নতুন কিছু দেওয়ার থাকে। যদি মনে করা হয়, ধুর, এই তো স্ক্রিপ্ট, ডায়লগ বলে দেব, হয়ে যাবে! সেটা তো প্রত্যেকের পারসেপশনের উপর নির্ভর করে। আমি টেলিভিশনকে এভরিডে মিল ভাবতেই চাই না। টেলিভিশনের মতো ভাল প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড আর হতেই পারে না।
টেলিভিশন অত সহজ নয়, মত স্নেহার।
আপনাকে তো সিনেমায় একেবারেই দেখা যায় না। অফার পান না?
না। অফার পাই না। কিছু দিন আগেই ‘অসুখওয়ালা’ নামের একটা ছবি করলাম। কিন্তু তেমন ছবি আমাকে অফার করা হয় না। সবাই ধরে নেয় আমি ব্যস্ত। হ্যাঁ, আমি ব্যস্ত। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এই কথাটা বলতে পারাটা ভগবানের আশীর্বাদ। তার মানে এটা নয়, মাঝে সময় বের করে ভাল একটা ছবি করতে পারব না। সবাই দেখা বলে বলেন, খুব ভাল অভিনয় কর। কিন্তু কেউ ডাকেন না (উত্তেজিত)।
রেগে যাচ্ছেন?
না, না। রাগ হয় না। আমি এমনিতে ভীষণ রাগী। কিন্তু আমার রাগ দেখার জন্য ইন্ডাস্ট্রির কেউ বসে নেই। হ্যাঁ, খারাপ লাগে। সেটা পুরোটাই বাড়ির লোকের সঙ্গে শেয়ার করি। আমি বরং এ ভাবে ভাবি, আমি তো অনেককে চিনি না। অনেকে তো আমার কাজ দেখেননি। ফলে আমাকে নেবেন কেন? সত্যিই খারাপ লাগে, যখন ডিজার্ভ করেও পাই না।
আরও পড়ুন, একটা ফাঁকা ছেলে খুঁজে দিন, আই উইল লভ টু ডেট, বলছেন স্বস্তিকা
এ রকমও হয়েছে?
হ্যাঁ, হ্যাঁ হয়েছে আমার সঙ্গে। অ্যাওয়ার্ড শো-তে হয়েছে। এখন ভাবলে হাসি পাই। আমি জানতাম, আমি না অ্যাওয়ার্ড পেলেও যিনি পাচ্ছেন, তাঁর পাওয়ার কথা নয়। আর পাশ থেকে তখন বাকিরা এসে আহা রে করে। সেটা আরও বিরক্তিকর।
সিরিয়ালে আপনি এত জনপ্রিয়, কখনও প্রধান চরিত্র করতে ইচ্ছে করে না?
লিড হতে কার না ইচ্ছে করে?
কাউকে বলেছেন কখনও?
আমি বলি তো। ঝগড়া করি। আমি আর নেগেটিভ করব না, বলি লীনাদি, সাহাদিকে। ওঁরা রেসপেক্ট করেন। তবে লিড করতে চাই কখনও বলেনি। এই ধরুন, আপনাদের মাধ্যমে বললাম (হাসি)।
আপনি নিজেকে লিড করার উপযুক্ত বলে মনে করেন?
দেখুন, পারফরম্যান্স অনুযায়ী লিড করার যোগ্য আমি। লুক ওয়াইজ বলতে পারব না। তবে এখন ‘অন্দরমহল’ বা ‘আমলকী’র মতো গল্প হচ্ছে। ফলে আমি আশাবাদী।
(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy