Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
TOLLYWOOD

রাস্তাঘাটে অ্যাকনলেজড হতে চাই, বলছেন ময়ূরপঙ্খীর সৌরদীপ

বিকেলের নরম আলো তখন পাতাদের ছায়ার আঁকিবুঁকিতে কাঁপছে। স্টুডিও ফ্লোরে দৃশ্য শেষ করার ব্যস্ততা। ‘ময়ূরপঙ্খী’র নায়ক সৌরদীপ ওরফে সৌম্য মুখোপাধ্যায়-এর মুখোমুখি হতে হতে জ্বলে উঠলো বিদ্যুৎ বাতি। আলাপে মৌসুমী বিলকিস।ব্যক্তি জীবনের সঙ্গে অভিনীত চরিত্র মিলে গেলে অভিনয় করে মজা নেই। সত্যি বলতে সৌরদীপের সঙ্গে আমার খুব মিল নেই। সেটা একটা স্বস্তির বিষয়। শুধু বলা যেতে পারে

সৌম্য মুখোপাধ্যায়। ছবি সৌজন্যে অভিনেতা

সৌম্য মুখোপাধ্যায়। ছবি সৌজন্যে অভিনেতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:০৮
Share: Save:

সৌরদীপ হয়ে উঠছেন নাকি আপনি তাঁরই মতো?

ব্যক্তি জীবনের সঙ্গে অভিনীত চরিত্র মিলে গেলে অভিনয় করে মজা নেই। সত্যি বলতে সৌরদীপের সঙ্গে আমার খুব মিল নেই। সেটা একটা স্বস্তির বিষয়। শুধু বলা যেতে পারে যে দুজনেই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়েছে। দুজনের বন্ধুবান্ধব, দুজনের পোশাক আশাক একরকম। তো এই ব্যাপারটা আমার চেনা। অন্য দিক থেকে দেখলে, আমি সৌরদীপের মতো শান্তশিষ্ট মানুষ নই। ও খুব ধৈর্য ধরে সবকিছু সমাধান করে, খুব ইনোসেন্ট, সম্পর্কের প্রতি কমিটেড। আমি ওর মতো পরিস্থিতিতে পড়লে কী করব জানি না।

আপনি সিঙ্গল?

না, সিঙ্গল নই। কিন্তু সৌরদীপের মতো আমি কমিটেড নই।

সৌম্যর রোম্যান্টিক লাইফ কেমন চলছে?

এই মুহূর্তে একটু প্রবলেম্যাটিক। তার মূল কারণ হচ্ছে সৌম্য কোনও অফ পাচ্ছে না। রোম্যান্টিক লাইফ চালাতে গেলে যে ন্যূনতম সময় লাগবে সেটা সৌম্য বের করতে পারছে না (সলজ্জ হাসি)। তো সৌম্য আশায় আছে যে রোম্যান্টিক লাইফ উইল বি ব্যাক অন ট্র্যাক যদি একটু ছুটি পায়, একটু ঘুরতে যেতে পারে। যেখানে সৌম্য ঘুরতে যাচ্ছে সেখানেই সৌরদীপ, না হয় জল থেকে লোকজনকে বাঁচাতে হচ্ছে (দীর্ঘ হাসি)।

ধারাবাহিক থেকে ছুটি পাচ্ছেন না?

ধারাবাহিক থেকে ছুটি পাচ্ছি। কিন্তু আমি মাসে তিরিশ দিনই কোনও না কোনও কাজ করি। এই তো ‘ভবিষ্যতের ভুত’-এ একটা চরিত্র করলাম, অনীক দত্ত’র পরের ফিল্মেও একটা খুব ইম্পর্ট্যান্ট চরিত্র করছি। সব মিলিয়ে ছুটি নেই। ‘ময়ূরপঙ্খী’-তে সুযোগ পাওয়ার আগেই এগুলোই আমার প্রায়ার কমিটমেন্ট ছিল। অনীক দত্ত’র মতো একজন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করলে অনেককিছু শেখা যায়। তাঁর ফিল্মের সহঅভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করতে পারাটাও দারুণ ব্যাপার। তাঁদের সবকিছুই শিক্ষণীয়। প্রতিদিনই আমি শিখছি।

আরও পড়ুন: বিরুষ্কার সঙ্গে হনিমুনে ছিলেন ইনিও!

মাসের প্রত্যেকদিন কাজ করে ক্লান্ত?

না না, এক্কেবারে না।

আপনার বান্ধবী কী বলছেন?

দ্যাট পার্সন ইজ মাই বিগেস্ট ক্রিটিক আফটার মাই মম। দ্যাট রিয়েলি হেল্পস মি। যখন বাড়ি ফিরি মা আমার কাজ নিয়ে বলেন, সমালোচনা করেন। এই দু’জনের সমালোচনা আমাকে অভিনয়ের ক্ষেত্রে খুব সাহায্য করে।

সৌরদীপের মতোই কি আপনার সম্পর্ক নন-কনভেনশনাল?

না, একেবারেই নয়। তিশাম ও সৌরদীপের সম্পর্ক এখন অবধি গতানুগতিক নয়। গল্পে সৌরদীপ ও তিশামের মধ্যে ঠিক প্রেমের সম্পর্ক নেই এখন পর্যন্ত। এই মুহূর্তে তাদের ডিফারেন্ট কাইণ্ড অফ রিলেশন বলা যায়। ‘এ দিল হ্যায় মুশকিল’ ফিল্মে ডায়ালগ ছিল না, ‘এক তরফা প্যার’? এই সম্পর্কটাও সেরকম। আমি এটা কোনও দিনই পারিনি, পারবও না। সৌরদীপ পনেরো মিনিটের আলাপে একজন জলে পড়ে যাওয়া মেয়েকে বাঁচাতে জলে ঝাঁপ দেয়। তার মানে এই নয়, মেয়েটির প্রেমে পড়ে সে জলে ঝাঁপ দিচ্ছে। তো সবার প্রতিই তার এরকম ফিলিং আছে।

আরও পড়ুন: তাপমাত্রা মাইনাস ৬০ ডিগ্রি! ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে আমেরিকা

জলে পড়ে যাওয়া মেয়েটিই তো তিশাম?

হ্যাঁ।

আপনি জলে ঝাঁপিয়ে অভিনয় করলেন?

আমার জলের মধ্যে দৌড় হচ্ছে সুইমিং পুল অবধি। কিন্তু এই দৃশ্যটা নদীতে শুট হয়েছে। সত্যি বলতে একটু ভয় করছিল। তবে সবরকম প্রিকশন ছিল। সাঁতার তো এটা নয় যে তুমি বেসিক বা অ্যাডভান্স কিছু জানো? জানো তো জানো, না জানলে না জানো। তো যেটুকু সুইমিং পুলে প্র্যাকটিস ছিল সেটুকুই কাজে লেগে গিয়েছে।

ফ্যানদের কাছ থেকে রেসপন্স পাচ্ছেন?

সম্প্রতি ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলেছি। সেখানে দেখলাম অনেকে ইনবক্স করেছেন। অনেকে আমার সম্পর্কে জানতে চাইছেন। অনেকে আবার আমি কোথায় থাকি সে বিষয়ে প্রবল আগ্রহী। কিছুদিন আগে আমার একটা ছোট্ট ইঞ্জুরি হয়েছিল। তো একজন আমার বাড়িতে এসেছেন ইঞ্জেকশন দিতে। হি টার্নড আউট টু বি মাই ফ্যান। আমাকে বেরোতে হত। আধ ঘন্টার মধ্যে স্টুডিওতে কল। তো তিনি আমার সঙ্গে গল্প করছেন।

সিরিয়ালের দৃশ্যে অভিনেত্রী সোহিনী গুহরায়ের সঙ্গে।

ভিডিও কল করে স্ত্রী, মেয়ে সবার সঙ্গে কথা বলিয়ে দিচ্ছেন। ‘ময়ূরপঙ্খী’ নিয়ে কথা বললেন তাঁরা। নিয়মিত দেখেন। আমার তো এদিকে ইঞ্জেকশনে ভয়। সেই ভয়টাও প্রকাশ করতে পারছি না। আমাকে ‘নায়ক’ হয়ে থাকতে হচ্ছে। লাস্ট পুজোর সময় ‘ময়ূরপঙ্খী’-র প্রোমো রিলিজ করেছিল। তার প্রতিক্রিয়া এমন হল যে বন্ধুদের সঙ্গে রাস্তায় হাঁটাহাঁটি, প্যান্ডেলে ঘোরাঘুরি কিছুই হয়নি। আর একবার কেবলের বিল নিতে এসে একজন আমার বাড়ির কাজের লোকের সঙ্গে ঝামেলা করছে। আমি ঘরে ছিলাম। শুনতে পেয়ে বেরিয়েছি। ছেলেটার সঙ্গে কথাও বলিনি। জল নিয়ে আবার ঘরে ঢুকে গেছি। তারপর দেখি ছেলেটার কথা বলার টোন বদলে গেছে। তো ছোটখাটো জায়গায় এই ট্রিকসগুলোও কাজ করে (হাসি)।

আরও পড়ুন: অফিসের জমানো ছুটি থেকে ৩২ কোটি টাকা! চর্চায় পদ্মবিভূষণ অনিল​

বান্ধবীর সঙ্গে বেরোলে এসব দেখে বিরক্ত হন না?

না না। যখন অভিনয়ে আসি তখন থেকেই ও জানত আমিও জানতাম যে আমার কাজ, আমার মুখ অ্যাকনলেজড হওয়ার জন্যই এসেছি। রোদ্দুর থাকলে সানগ্লাস পরে বেরোই। আদার ওয়াইজ আমি সানগ্লাস ছাড়াই বেরোই এবং আমি ওয়ান্ট টু বি রেকগনাইজড। দর্শকরা যদি আমার কাছে এসে কথা বলেন, সেলফি তোলেন, অটোগ্রাফ নিতে চান তো আমি মনে করি আমি লাকি। আই অলওয়েজ ওয়ার্কড হার্ড টু রিচ দিস পজিশন। আই লাভ ইট। আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু রান অ্যাওয়ে ফ্রম ইট। এক্কেবারে না। দ্যাট অ্যাডস টু দ্য ডে। দর্শকদের সঙ্গে তো সে ভাবে দেখাও হয় না, স্টুডিওতেই দিন কেটে যায়। তো এগুলো ভালো লাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE