ঝুলছে-তালা: রাজলক্ষ্মী সিনেমা হল। নিজস্ব চিত্র
ইন্দ্রনাথ জানার বয়স এখন আশি ছুঁইছুঁই। কাকদ্বীপের ওই বাসিন্দার কাছে সিনেমা দেখা ছিল নিত্যপ্রয়োজনীয় একটি কাজ। এখনও সময় পেলেই স্ত্রীকে নিয়ে হলমুখী হতেন তিনি।
কিন্তু প্রান্তিক মহকুমা শহর কাকদ্বীপে সাকুল্যে দু’টি সিনেমা হল ছিল। একটি এক বছর আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। টিমটিম করে চলছিল রাজলক্ষ্মী হলটি। নতুন কর ব্যবস্থার প্রাথমিক ধাক্কার জেরে সেটিও শুক্রবার থেকেই বন্ধ। সাময়িক ভাবে বন্ধ করা হয়েছে বলে মালিক পক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে। তাই ইন্দ্রনাথবাবু বা কলেজ পড়ুয়াদের কাছে নিজের শহরে সেলুলয়েড বিনোদন আপাতত অনিশ্চিত হয়ে গেল। ইন্দ্রনাথবাবুর কথায়, ‘‘হলে যেতাম। কিন্তু আগের চেয়ে অনেক কম। এখন সেই রুচির ছবি প্রায় আসেই না। তবে বাহুবলি টু দেখতে গিয়েছিলাম।’’
রাজলক্ষ্মী সিনেমা হলটি চলছিল ভালই। কিন্তু জিএসটি চালু হওয়ার পর থেকেই সমস্যা শুরু। মালিকদের একজন অমল দাস বলেন, ‘‘প্রচন্ড হ্যাপা। জিএসটি নম্বর জোগাড় করার জন্য ছুটে বেড়াচ্ছি। কীভাবে এই কর চালু হবে বোঝার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। এ সব হয়ে গেলে আবার হল চালু করে দেব।’’ তবে কতদিন পরে ফের হলটি চালু হবে বা টিকিটের দাম বাড়বে কি না সেগুলি এখনও বলতে পারছেন না তাঁরা।
প্রায় ৪০০ আসন রয়েছে এই হলটিতে। রয়েছে ড্রেস সার্কেল। এই ড্রেস সার্কেলেই ভিড় জমাত কলেজ পড়ুয়ারা। কাকদ্বীপ ছাড়া সাগর, নামখানা পাথরপ্রতিমায় কোনও সিনেমা হল নেই। একমাত্র রাজলক্ষ্মী ছিল ভরসা। তাই কলেজ পড়ুয়াদের থেকেও কিছুটা আয়ের মুখ দেখতেন হল মালিক। কাকদ্বীপ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সৌমিত্র পুরকাইত বলেন, ‘‘বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে যেতাম। মূলত বাংলা ছবিই চলে। ভাল হিন্দি ছবি এলেও দেখতে যেতাম। শুনলাম আপাতত বন্ধ। তবে আশা করছি, দ্রুত চালু হবে।’’ দর্শক না আসার জন্য এক বছর আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে হাসপাতাল পাড়ার অমর টকিজ। রাজলক্ষ্মী কবে চালু হবে আপাতত সে দিকে তাকিয়ে গাঁ-গঞ্জের রূপোলি পর্দার দর্শকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy