Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Cinema

শিল্পীরা সব সময়েই কাঁটাতারের ঊর্ধ্বে

এ দেশে তাঁর প্রথম ছবির শুটিং সেরে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার আগে আলাপচারিতায় অভিনেতা মোশারফ করিম। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আমাদের দল ‘নাট্যকেন্দ্র’। ১৯৯১ সালে কলকাতায় এসে ‘বিচ্ছু’ নাটকটি মঞ্চস্থ করেছিলাম অ্যাকাডেমিতে। - "মোশারফ করিম"

মোশারফ করিম

মোশারফ করিম

সায়নী ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

প্র: এ দেশে এটিই তো আপনার প্রথম কাজ। ব্রাত্য বসু তাঁর ছবির জন্য কী ভাবে খুঁজে পেলেন আপনাকে?

উ: ছবি, নাটকে আমার অভিনয় উনি আগেই দেখেছিলেন। তার পরে ‘কমলা রকেট’-এ দেখেই বোধহয় ‘ডিকশনারি’ ছবির জন্য ব্রাত্যদা আমাকে মনোনীত করেন। বাংলাদেশের এক পরিচালকের মাধ্যমে আমাকে যোগাযোগ করেছিলেন উনি, সেই সময়ে আমি মালয়েশিয়ায় ছিলাম। তার পরে তো দেখা-সাক্ষাৎ হল।

প্র: এই ‘কমলা রকেট’ ছবির জন্যই আপনি জাতীয় পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন না?

উ: দুঃখিত, তবে এই প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাই না।

প্র: বেশ। আপনার শুরুটা কি থিয়েটার থেকেই?

উ: হ্যাঁ। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আমাদের দল ‘নাট্যকেন্দ্র’। ১৯৯১ সালে কলকাতায় এসে ‘বিচ্ছু’ নাটকটি মঞ্চস্থ করেছিলাম অ্যাকাডেমিতে। পনেরো বছর ধরে থিয়েটার করেছি টানা। তার পরে শুরু করলাম টেলিভিশন নাটক। সেখানে প্রথম যে কাজটা ক্লিক করল, সেটা হল ‘ক্যারাম’। মোস্তাফা সরয়ার ফারুকী নির্দেশিত সেই টেলি-ছবিতে আমার বিপরীতে নায়িকা ছিলেন তিশা।

প্র: নুসরত ইমরোজ় তিশার সঙ্গে আপনার জুটি তো বেশ জনপ্রিয়...

উ: হ্যাঁ, তিশার সঙ্গে অনেক কাজ করেছি বটে। আরও অনেকের সঙ্গেই করেছি। তাই আলাদা করে জুটি বাঁধার বিষয়ে মাথা ঘামাই না আমি।

প্র: এ দেশে প্রথম বার কাজ করছেন। কতটা আলাদা মনে হচ্ছে?

উ: পরিবেশটা আমার কাছে নতুন, মানুষজনও। তবে এঁরা সেটা বুঝতে দেননি। ‘ডিকশনারি’ ছবির টিমের সকলেই খুব আন্তরিক। কাজের প্রতি এবং আমার প্রতিও। আর ব্রাত্যদা পরিচালক হিসেবে খুব পার্টিকুলার। ‘টু দ্য পয়েন্ট’ কাজ করেন সব সময়ে। ছবিতে আবেগের দৃশ্যগুলোয় পরিমিতবোধ ওঁর কাছ থেকে শেখার মতো।

প্র: আবীর চট্টোপাধ্যায়-নুসরত জাহানের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কী রকম?

উ: ওঁদের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করিনি। ছবিতে আমার চরিত্রটির সঙ্গে ওঁদের যোগাযোগ হবে টেলিফোনের মাধ্যমে। ব্রাত্যদার স্ত্রী পৌলমী বসুর সঙ্গে কাজ করলাম, আমার স্ত্রীয়ের চরিত্রে রয়েছেন। দারুণ অভিনেত্রী।

প্র: এ দেশে ফের কাজ করতে চাইবেন?

উ: নিশ্চয়ই। ভাল গল্প, ভাল চরিত্রের প্রস্তাব পেলে কেন নয়? তবে নিজে থেকে কাজ চাওয়ার বিষয়টা আমার দ্বারা হবে না! যদি কারও ভাল লাগে, আমাকে তাঁরা নিশ্চয়ই ডেকে নেবেন।

প্র: দেব বাংলাদেশে ছবি করছেন। জয়া আহসান এখানে খুবই জনপ্রিয়। এই আদান প্রদানের ফলে ইন্ডাস্ট্রি কতটা উপকৃত হচ্ছে বলে মনে হয় আপনার?

উ: এই আদান-প্রদান তো বহুদিনের। আসলে ভারতের মানুষ আমাদের বেশির ভাগ কাজই দেখেন ইউটিউবে। কারণ আমাদের দেশের কোনও চ্যানেল এখানে দেখানো হয় না। তবে অনেক ভারতীয় চ্যানেলই বাংলাদেশে দেখানো হয়। ফলে অনেক ভারতীয় অভিনেতাকেই বাংলাদেশের মানুষ চেনেন, ভালবাসেন। আমাদের চ্যানেলগুলিও যদি এখানে দেখানো হত, তা হলে হয়তো দর্শকের আগ্রহ এবং আমাদের গ্রহণযোগ্যতা দুই-ই তৈরি হতে পারত।

প্র: টলিউডের এক অভিনেত্রী সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন, সে দেশের জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে তাঁর অভিনীত ছবি জিতলেও তিনি সে দেশের নাগরিক না হওয়ায় কোনও স্বীকৃতি পাননি। অথচ বাংলাদেশের শিল্পীরা এখানে পুরস্কৃত হয়ে থাকেন...

উ: পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু প্রোটোকল মানতে হয়। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, একজন শিল্পীর অভিনয় ভাল হলে তাঁর পুরস্কার পাওয়া উচিত। তাঁরা কাঁটাতারের ঊর্ধ্বে। হয় অভিনয় করতে দেবেন না। আর যদি দেন, তা হলে স্বীকৃতিটাও তাঁর প্রাপ্য।

প্র: এখানকার ছবি দেখেন?

উ: খুব বেশি দেখার সময় পাই না। টেলিভিশন তো দেখাই হয় না, তবে ছবি দেখার চেষ্টা করি। নেটফ্লিক্স বা ইউটিউবে। সত্যজিৎ রায়, তপন সিংহ, মৃণাল সেনের ক্লাসিক ছবিগুলি আমার খুবই পছন্দের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cinema Bangladesh Mosharraf Karim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE