‘ইটস হ্যাপেনিং’! আইবুড়ো নাম ঘুচিয়ে দিলীপ ঘোষ বিবাহিত। আক্ষরিক অর্থে ‘রাগী যুবক’ নানা সময়ে নানা বিস্ফোরক কথা বলেছেন। কখনও মঞ্চ থেকে বাংলার অভিনেতাদের ধমকে বলেছেন, ‘রগড়ে দেব’! কখনও কটাক্ষ করেছেন মহিলাদের। সেই দিলীপ ঘোষ ৬১-তে বিয়ে করে ‘সেলিব্রিটি’। যাঁর বাইরের খোলস নারকেলের খোলার মতোই শক্ত। অন্তরে যে প্রেম ছিল, টের পাননি কেউ! নিজের দলের নেত্রী রিঙ্কু মজুমদার সেই ‘দিলীপ ঘোষ’কে প্রকাশ্যে আনতেই সাড়া পড়ে গিয়েছে। রাজ্যবাসী তো বটেই, বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির বিয়ের খবরে উচ্ছ্বসিত বাংলা বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামীরাও।
আননন্দবাজার ডট কমের মাধ্যমে দিলীপ ঘোষের দাম্পত্য জীবনের সমৃদ্ধি কামনা করেছেন কাউন্সিলর-অভিনেত্রী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, রূপাঞ্জনা মিত্র, কাঞ্চনা মৈত্র।
এত রাগী মানুষের মনে এত প্রেম! কথা ফুরনোর আগেই অনন্যা বললেন, “রাজনীতির বাইরেও যে একজন ‘দিলীপ ঘোষ’-এর অস্তিত্ত্ব আছে, সেটাই বুঝলাম। এই দিলীপ ঘোষ অত্যন্ত মানবিক। দলের উর্ধ্বে উঠে যাঁর হাত ধরেছিলেন তাঁকেই জীবনসঙ্গিনী করলেন। ওঁদের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা।” এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অনন্যার আরও বক্তব্য, “রাজনীতিতে উনি আমার বিরোধী দলের। রাজনৈতিক মতভেদের কারণে অনেক সময়েই বিতণ্ডায় জড়িয়েছি। আজ সে সব কিচ্ছু না। আজ দিলীপদার জন্য শুধুই শুভকামনা।” তিনি দিলীপকে ধাক্কাপাড় ধুতি, পাঞ্জাবিতে বরবেশে দেখতে পছন্দ করবেন, এ কথাও জানাতে ভোলেননি।
অনন্যা না হয় বিরোধী দলের। অতীতে বিজেপিতে যোগদানের কারণে একটা সময় যথেষ্ট কাজ থেকে দেখেছেন দিলীপকে। তাঁরাও কি এই দিলীপ ঘোষকে জানতেন? সেই প্রসঙ্গ উঠে এলে রূপাঞ্জনা, কাঞ্চনা উভয়েই বললেন, “ব্যক্তি দিলীপ ঘোষ কিন্তু খুবই ভদ্র, বিনয়ী। কোনও দিন অসম্মান করে কোনও কথা বলেননি। আমরা ওঁকে যে ভাবে দেখতে অভ্যস্ত উনি কিন্তু ততটাও রুক্ষ নন।” সেই জায়গা থেকে কাঞ্চনার দাবি, “যতই তিনি শিল্পীদের ‘রগড়ে দেব’ বলে হুমকি দিন, অন্তরে যিনি এত সহানুভূতিশীল তাঁর থেকে বড় শিল্পী আর কে!” তাঁর মতে, পেশায় শিল্পী হলেই প্রকৃত শিল্পী হওয়া যায় না। যাঁর হৃদয় অনুভূতিপ্রবণ তিনিই প্রকৃত শিল্পী। রূপাঞ্জনাও অন্তর থেকে শুভকামনা জানিয়েছেন বিজেপি নেতাকে। তাঁর আশা, “এ বার হয়তো দিলীপদার রাগ একটু হলেও কমবে। ওঁকে সামলে নেবেন রিঙ্কুদি।”
আরও পড়ুন:
বিয়ে করে দিলীপ ঘোষ যতটা নন্দিত ততটাই নিন্দিতও! সমাজমাধ্যমে তাঁকে কটাক্ষের শিকারও হতে হচ্ছে। বিশেষ করে, ৬১ বছরে বিয়ের কারণে। পরিচালক-অভিনেতা শ্রীলেখা মিত্র কিন্তু সমর্থন জানিয়েছেন দিলীপের এই পদক্ষেপকে। বলেছেন, “কোথায় লেখা আছে, ৪০ পেরিয়ে গেলে আর বিয়ে করা যাবে না! দিলীপবাবুর যখন মনে হয়েছে তখন তিনি বিয়ে করেছেন। বয়স তো সংখ্যার বাইরে কিছুই না।”
সমাজমাধ্যমে এমনও মন্তব্য ঘুরছে, পরকীয়া বা একত্রবাস নয়— বিয়ে করে নজির গড়লেন দিলীপ। এ প্রসঙ্গে একমত অনন্যা, রূপাঞ্জনা, কাঞ্চনার। তাঁদের মতে, “অনেক পুরুষ বিবাহবিচ্ছিন্ন, পরিণতবয়স্ক এক সন্তানের মাকে বিয়ে করার সাহস দেখাতে পারেন না। দিলীপদা এই জায়গা থেকে নজির গড়লেন।” শ্রীলেখা বলেছেন, “দিলীপবাবু যদি পরকীয়া প্রেম বা একত্রবাসও করতেন তাতেই বা কী সমস্যা! ওঁর মনে হয়েছে বিয়ে করবেন, সেটাই করেছেন।”