খুরপাতাল। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ধুমকেতু’র শুটিংয়ে হাজির দেব-শুভশ্রী। ব্যক্তিগত জীবনে প্রেম, ব্রেক আপ, চার বছরের লম্বা বিরতির পর ফের যুগলে অনস্ক্রিনে। নৈনিতাল থেকে বেশ কয়েক ফুট উঁচুতে এই খুরপাতালে হলুদ সোয়েটারের দেব আর পিচরঙা সালোয়ারের শুভশ্রী ঠিক চার বছর আগের চেনা মুডে। নেক্সট শট রেডি করছে ইউনিট। তার আগে রাস্তার ধারের এক উঁচু বেঞ্চিতে বসে পড়লেন খোকাবাবু। পাশে নায়িকা। এ বার রেকর্ডার অন…
চার বছর সময়টা কিন্তু অনেকটা।
দেব: কীসের জন্য?
শুভশ্রী: (চোখের এক্সপ্রেশনে প্রশ্ন)।
একসঙ্গে জুটি বাঁধার জন্য।
শুভশ্রী: ও! তাই বলুন। (রিল্যাক্সড মুডে)
দেব: কেন, তুই অন্য কিছু ভাবলি নাকি?
শুভশ্রী: না। তুই থাম। এতদিন অপশন ছিল না। তাই হয়ে ওঠেনি।
দেব: না না জানেন তো, চার বছর ধরে মেয়েটা খুব ফোন করত আমাকে। একসঙ্গে কাজ করবে বলে। তার পর ভেবে দেখলাম। করেই ফেলি। (মুখে দুষ্টুমির হাসি)
শুভশ্রী: হুম। কয়েকদিন পর থেকে ওই আমার সেই ফোনগুলোর বিল মেটাত (চোখে প্রশ্রয়)।
বোঝা যাচ্ছে ঝগড়াটা চার বছরে একটুও পাল্টায়নি।
দেব: আরে কিছুই পাল্টায়নি। আমি আগের মতোই এখনও চাই বছরে ওর চারটে করে ভাল ছবি হোক। গত দু’বছর ওর কাজ ছিল না। এই ছবিটা ওর কেরিয়ারের জন্য খুবই ভাল। আমি যখন ওকে প্রথম ফোন করি ও জানতে চেয়েছিল এটা কর্মাশিয়াল ছবি? আমি বলেছিলাম মোর দ্যান কর্মাশিয়াল। এটা আসলে নেক্সট জেনারেশন ফিল্ম।
শুভশ্রী: সত্যিই তাই। অফার পেয়ে আমি হ্যাঁ বলতে এক সেকেন্ডও সময় নিইনি। ছবিতে গল্পটাই সব। কৌশিকদার সঙ্গে এটা আমার প্রথম কাজ। আমি খুব এক্সাইটেড। খুব ইমোশনাল স্টোরি। কৌশিকদার পেন দিয়ে প্রতিটা অক্ষরে ইমোশন ঝরে ঝরে পড়েছে। অভিনয়ের জায়গাটা অনেক অনেক বেশি।
আপনার রাজি হওয়ার পিছনে কি প্রযোজক দেবের কোনও ভূমিকা ছিল?
শুভশ্রী: সেটা তো একটা কারণ বটেই। তবে সব ছবির প্রোমোশনেই দর্শকদের আমি বলি আপনারা ছবিটা দেখুন, তবে এ বার আমি মন থেকে বলছি।
এর আগের ছবিগুলোতে মন থেকে বলতেন না?
শুভশ্রী: মন থেকেই বলতাম। এই ছবিতে একদম আলাদা জিনিস দর্শকরা পাবেন।
কী সেটা? একটু শেয়ার করুন।
শুভশ্রী: আমার চরিত্রের নাম রূপা। পাহাড়ি মেয়ে। সাধারণ পরিবারে বড় হয়েছে। একটি ছেলের সঙ্গে প্রেম হয়। তারপর বিয়ে। এরপর ওর জীবনে টুইস্ট আসে।
দেব: ওয়ে হিরোইন। গল্পটা বলে দিস না।
শুভশ্রী: (বেদানা খেতে খেতে হিরোর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে) আসলে আমার চরিত্রে অনেক শেডস রয়েছে।
ছবিটার ইউএসপি কি?
দেব: দেখুন, কতটা নতুন হবে জানি না। এটুকু বলতে পারি দর্শক চমকে যাবে।
আপনার চরিত্রটা কেমন?
দেব: আমার চরিত্র মানে ভানুর গল্পের মধ্যে দিয়েই আপনারা দেখবেন বন্ধ হয়ে যাওয়া চা বাগানের শ্রমিকদের পরিবারের গল্প।
প্রযোজক হিসেবে নতুন ইনিংস কেমন লাগছে?
দেব: গত তিন বছর ধরে ছবিটা নিয়ে আমি আর কৌশিকদা সব প্রযোজকদের কাছে গিয়েছি। কেউ রাজি হননি। তার পর নিজেরা করার সিদ্ধান্ত নিই। দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার রানা সরকার এগিয়ে আসেন। সত্যিই কেরিয়ারে অনেক কিছু পেয়েছি আমি। এ বার ইন্ডাস্ট্রিকে কিছু দেবার সময় এসেছে। ছবিটা আমরা মন থেকে বানাচ্ছি। প্রযোজক হিসেবে বলব, আমার টাকার দরকার নেই। এটা আপনাদের জন্য।
প্রোডিউসার হিসেবে আপনি শুভশ্রীকে নেওয়ার জন্য জোর দিয়েছিলেন?
দেব: (হা হা) উল্টে ডিরেক্টর ইনসিস্ট করেছিলেন শুভকে নেওয়ার জন্য।
বন্ধু, প্রেমিক, অভিনেতা, প্রযোজক কোন দেবকে শুভশ্রীর পছন্দ?
শুভশ্রী: (একটুও না ভেবে এককথায় জবাব) অভিনেতা।
কেন?
শুভশ্রী: অভিনেতা হিসেবে ও অনেক উন্নতি করেছে। শুটিংয়ে একই রকম মজা হচ্ছে। প্র্যাঙ্কস্টার হিসেবে একই রকম আছে।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় মানেই জাতীয় পুরস্কার। আপনাদের এক্সপেক্টটেশন কতটা?
দেব: জাতীয় পুরস্কারের আশায় আমি ছবি করি না।
শুভশ্রী: না! ওটা ভেবে ছবি করা যায় না।
পুনশ্চ: শট রেডি। ডাক পড়েছে। আড্ডা অফ। শুটিং অন। বেঞ্চ থেকে নামতে গিয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন শুভশ্রী। দু’হাত দিয়ে আগলে নিলেন শুভর দেব। ব্যকগ্রাউন্ডে তখন বাজছে, ‘এই দু’পাশের পাহাড় জানে, আমার ভালবাসার মানে…।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy