দিতিপ্রিয়া রায়-জীতু কমলের ঝঞ্ঝাট যে মিটছেই না! ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’-এর নায়িকা আর নায়কের মনোমালিন্যের চোটে ধারাবাহিক নাকি প্রায় বন্ধের পথে! এ-ও শোনা গিয়েছে, দিতিপ্রিয়া নাকি ‘রাণী রাসমণি’ ধারাবাহিকের সময়ে বাংলাদেশের নায়ক গাজী আব্দুন নূরের সঙ্গেও একই সমস্যায় জড়িয়েছিলেন।
জীতু-দিতিপ্রিয়ার দ্বিতীয় বার মনোমালিন্য প্রকাশ্যে আসতেই বাংলাদেশের অভিনেতাকে প্রশ্ন করেছিল আনন্দবাজার ডট কম — ছোটপর্দায় ‘রাণী রাসমণি’ দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে স্বামী ‘রাজা রাজচন্দ্র’ ওরফে নূরের সম্পর্ক কেমন ছিল? ওঁর সঙ্গেও কি নায়িকার সমস্যা হয়েছিল? বিশেষ করে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে।
নূর সাফ জবাব দিয়েছেন, “কোনও দিন দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে কোনও সমস্যা বাধেনি। তা ছাড়া, দিতিপ্রিয়া তখন খুবই ছোট। ফলে, ওর সঙ্গে কী ঝামেলা হবে? এমনকি প্রেমের দৃশ্যেও না।”
শুটিংয়ের ফাঁকে গাজ়ী আব্দুন নূর আর দিতিপ্রিয়া রায়।
সেই জায়গা থেকে তাঁর দাবি, “জীতুদার সঙ্গে আমার খুবই ভাল সম্পর্ক। দিতিপ্রিয়াকেও চিনি। ফলে, ওঁদের এই মনোমালিন্য দুঃখ দিচ্ছে।” তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছেন, দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্যের কথা রটানোয়। নূরের যুক্তি, “এই ধরনের কথা দিতিপ্রিয়া বলবে না। আমার বিশ্বাস, জীতুদাও বলেননি। তা হলে ছড়াল কে?” তিনি আঙুল তুলেছেন অভিনেতাদের অনুরাগী বা তৃতীয় ব্যক্তির দিকে। বলেছেন, “অভিনয় দুনিয়ায় থাকার সুবাদে জানি, একজনকে খারাপ বলা হলে অনেক সময় অন্য জনের অনুরাগীরা এই ধরনের মিথ্যে কথা ছড়ান। এটা কাম্য নয়।”
জীতু-দিতিপ্রিয়ার কেজো সম্পর্কে নাকি ছায়া ফেলেছেন নায়িকার মা। তাঁকে ঘিরে অস্বস্তি ধারাবাহিকের নায়কের। তিনি তাই নাকি নায়িকার সঙ্গে প্রায় কথাই বলেন না! এমনও শোনা গিয়েছে, ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয়ের সময়েও দিতিপ্রিয়ার মা উপস্থিত থাকেন। ফলে, অস্বস্তিতে ভোগেন বাকিরা। এই প্রসঙ্গে অন্য একটি ঘটনার উদাহরণ দিয়েছেন বাংলাদেশের অভিনেতা। বলেছেন, “আমার দেশে ‘যৈবতী কন্যার মন’ ছবিতে নায়িকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের শুটিং চলছে। আচমকা মা আর দিদি উপস্থিত। পরিচালকও আমার মাতৃসমা। তিনি জানতে চাইলেন, আমার কোনও সমস্যা হবে কি না। বলেছিলাম, সমস্যার কী আছে! আমি তো অভিনয় করছি। সত্যি তো নয়।”
অর্থাৎ, অভিনয়ের সময়ে পরিবারের কারও উপস্থিতি নূরের মনে কোনও প্রভাব ফেলে না।
নূর আরও জানিয়েছেন, ‘রাণী রাসমণি’র সময়ে দিতিপ্রিয়া খুবই ছোট। ফলে, দিতিপ্রিয়ার মা প্রায় সারা ক্ষণ মেয়ের সঙ্গে থাকতেন। সেটাই খুব স্বাভাবিক। ফলে, নূরের বেশির ভাগ কথা হত নায়িকার মায়ের সঙ্গে। “আমি বলতাম, কাকিমা, আমি তো একা একা আপনাদের দেশে আছি। নিজের ছেলে মনে করে আগলে রাখবেন! উনিও সে কথার মর্যাদা দিয়েছিলেন। ভালমন্দ রান্না, এদিক-ওদিক নিয়ে যাওয়া— ছেলের মতো ভালবেসেই করতেন।”
তাই দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে যত না কথা হত নায়কের, তার তিন গুণ বেশি কথা হত দিতিপ্রিয়ার মায়ের সঙ্গে। তাঁর মতে, “কম কথার আরও একটি কারণ, বয়সের ফারাক। দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে আমার কিছুই মিলত না। গান শোনা, কথা বলা, পোশাক, খাওয়া-দাওয়া— সব দিক থেকে আমরা উল্টো। আমি বড়। তাই যতটা সম্ভব মানিয়ে চলার চেষ্টা করতাম।” তবে ওই বয়স থেকেই দিতিপ্রিয়া অনেক ‘ম্যাচিওর’,এ কথাও জানাতে ভোলেননি।
আরও পড়ুন:
নূর এখন বাংলাদেশে। অনেক বছর কলকাতায় আসা হয়নি তাঁর। ‘রাণী রাসমণি’র প্রসঙ্গ উঠতে ফিরে গিয়েছেন অতীতে। জানিয়েছেন, শুধু দিতিপ্রিয়া নয়, ধারাবাহিকের কোনও অভিনেতা-অভিনেত্রীর সঙ্গেই তাঁর মনোমালিন্য হয়নি। শুটিংয়ের ওই দিনগুলোয় তিনি একা কলকাতায়। প্রত্যেকে তাঁকে খুব যত্ন করতেন, ভালবাসতেন। বাড়তি দেখাশোনাও করতেন নূরের।