দিলজিৎ দোসাঞ্জের আগামী ছবি ‘সর্দারজি ৩’ নিয়ে উত্তাল দেশ, বিনোদন দুনিয়া। গত সোমবার ছবির প্রথম ঝলক মুক্তি পাওয়ার পরই গায়ক-নায়কের সমস্ত কাজ নিষিদ্ধ করার আবেদন জানায় ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ (এফডব্লিউআইসিই)। সংগঠনের সভাপতির দাবি, দিলজিৎ জাতীয় অনুভূতিকে অসম্মান করেছেন।
এর পরেই দিলজিতের একটি সাক্ষাৎকার ভাইরাল। সেখানে বিনোদন দুনিয়াকে দেশ-সীমা-জাতির ঊর্ধ্বে রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন ‘সর্দারজি ৩’-এর নায়ক। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “আমি বিশ্বের একটি অংশ। গোটা বিশ্ব আমার মাতৃভূমি।”
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান বন্ধ। এ দিকে, ছবিতে দিলজিতের বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় পাক-অভিনেত্রী হানিয়া আমির। দিলজিতের সমাজমাধ্যম ভেসে যাচ্ছে কটাক্ষে। পাক নায়িকার সঙ্গে অভিনয় করার জন্য তাঁকে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করার দাবিও উঠেছে দেশে, বলিউডে। এমন পরিস্থিতিতে নায়ক-গায়কের সাক্ষাৎকার নতুন করে চর্চিত।
সম্প্রতি, গ্র্যামি সম্মান মঞ্চে যোগ দিয়েছিলেন দিলজিৎ। সেখানে সভাপতি পানোস এ পানায় দিলজিতের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। ‘সর্দারজি ৩’ বিতর্ক নিয়ে তিনি সরাসরি কিছু না বললেও বিশ্বের বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। দিলজিতের কথায়, “বিশ্বের দেশগুলি পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত। এই বিষয়ের উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, একমাত্র সঙ্গীত বা সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান সমস্ত জাতির মানুষের মনে ভালবাসা ছড়িয়ে দিতে পারে।” একই সঙ্গে দিলজিৎ গর্বিত এবং ধন্য যে তিনি এই দুনিয়ার প্রতিনিধি।
আরও পড়ুন:
পাশাপাশি তাঁর তিনি বলেন, “এ বার সীমান্ত-জাতির ঊর্ধ্বে উঠে সব কিছু বিচার করার সময় এসেছে। মাতৃভূমির প্রতি আমাদের আরও যত্নশীল, আরও মনোযোগী হতে হবে। কারণ, আমি মনে করি গোটা বিশ্বই আমার মাতৃভূমি। আমি তার অংশ।” সাবধানী দিলজিৎ জানিয়ে দিতে ভোলেননি তাঁর বক্তব্য সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। রাজনীতি তাঁর বিষয় নয়। তাই এ বিষয়ে ভুল বক্তব্য পেশ করে নতুন জটিলতা সৃষ্টি করতে চান না। দিলজিতের দাবি, তাঁর কাছে প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। তিনি জীবন উপভোগ করতে ভালবাসেন।
তাঁর আসন্ন ছবি নিয়ে যখন উত্তাল গোটা দেশ এবং দেশের বিনোদন দুনিয়া তখন দিলজিতের এই বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভিজছে কই?
প্রসঙ্গত, সোমবার দিলজিৎ প্রসঙ্গে ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ (এফডব্লিউআইসিই)-এর সভাপতি বি এন তিওয়ারি আরও বলেন, “পাকিস্তানি অভিনেতার সঙ্গে কাজ করে দিলজিৎ ভারতীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন। তিনি জাতির অনুভূতিকে অসম্মান করেছেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগকে অপমান করেছেন। নিজের দেশের শিল্পীদের থেকেও তিনি পাকিস্তানি প্রতিভার প্রতি বেশি আগ্রহী। যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং একেবারেই কাঙ্ক্ষিত নয়।”