সাংবাদিকদের মুখোমুখি ডিরেক্টর্স গিল্ড। নিজস্ব চিত্র।
মাস দু’য়েক আগের ঘটনা। পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের উপর থেকে সাসপেনসনের নির্দেশ উঠতেই কাজে ফিরতে চেয়েছিলেন তিনি। বাদ সেধেছিল ফেডারেশন, টেকনিশিয়ানেরা। তাঁরা পরিচালকের সেটে অনুপস্থিত ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মধ্যস্থতার পরেও নানা টালবাহানায় কাজ থেকে দূরেই ছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, এ ভাবেই নাকি পরিচালক-টেকনিশিয়ানদের মধ্যে বিভেদ টানার চেষ্টা হয়েছিল। সে সময় পরিচালকেরা জানিয়েছিলেন, তাঁরা আলাদা নন। সোমবার টেকনিসিয়ান্স স্টুডিয়োয় তারই প্রমাণ রাখল ডিরেক্টর্স গিল্ড। এ দিন সংবাদমাধ্যমের সামনে কেশসজ্জা শিল্পীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ জানালেন সংগঠনের সভাপতি সুব্রত সেন, সম্পাদক সুদেষ্ণা রায়, পরিচালক ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী-সহ সমস্ত পরিচালক। স্মরণ করিয়ে দিলেন, রাহুলের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের কথা। দাবি, এই ঘটনা একদিনের নয়। দীর্ঘ দিন ধরে ঘটে চলেছে।
সুদেষ্ণা কথা শুরু করেন কেশসজ্জা শিল্পীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বর্ণনায়। দাবি করেন, বেশ কিছু দিন ধরেই অভিযোগকারিণী ফোনে তাঁকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান। সুদেষ্ণার আফসোস, “তখনই পদক্ষেপ করলে এই ঘটনা ঘটত না।” তখনই সুব্রত বলেন, “পরিস্থিতি যা দাঁড়াচ্ছে তাতে শীঘ্রই আমাদের হয়তো আলু, পটল বেচতে হবে।”উদাহরণ হিসেবে জানান, ইতিমধ্যেই অনেক টেকনিশিয়ান, পরিচালক, অভিনেতা কাজ না পেয়ে বাজারে সব্জি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
পরিচালক ইন্দ্রনীলের কথায়, “এ ভাবে কাজ কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। একই ভাবে, কোনও ট্রেড ইউনিয়ন আইন প্রণেতা হতে পারে না। সেটা গিল্ড হোক বা ফেডারেশন।” এই জায়গা থেকে তাঁর আবেদন, ওই কেশসজ্জা শিল্পী সুস্থ হয়ে কাজে ফিরতে চাইলে তাঁকে যেন সহযোগিতা করা হয়। যদিও অভিযোগকারিণী কতটা সহযোগিতা পাবেন সে বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। এ দিনের বৈঠকে উইমেন্স ফোরামের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন পোশাক পরিকল্পক সাবর্ণি দাস, অভিনেতা অনন্যা সেন। তাঁরা জানান, বিনোদন দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত সর্বস্তরের নারী এবং শিশুর নিরাপত্তার কথা ভেবে এই কমিটি গঠনের ভাবনা মাথায় এসেছে।
অভিযোগকারিণী কাজে ফেরার অবস্থায় ফিরলে তখনও কি তাঁর পাশে থাকবে গিল্ড? তিনি কাজ না পেলে আইনি সহযোগিতা করবেন পরিচালকেরা?
প্রশ্ন রাখতেই সমস্বরে দাবি, একা কেশসজ্জা শিল্পী নন, যখনই বিনোদন দুনিয়ার কেউ বিপদে পড়বেন গিল্ড তাঁদের পাশে থাকবেন। এই বৈঠক থেকেই বার্তা দেওয়া হয় ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসকেও। ৬০ শতাংশ যৌন হেনস্থার অভিযোগ পরিচালকদের বিরুদ্ধে, সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে এমন বক্তব্য রাখেন তিনি। প্রতিবাদ জানিয়ে ইতিমধ্যেই তাঁকে আইনি নোটিস পাঠান পরিচালকেরা। এ দিন তাঁরা জানান, সেই নোটিসের কোনও জবাব এখনও আসেনি। আইনি পথে আর যা যা করা যায় এ বার সে সবই করবেন তাঁরা। এ-ও শোনা যাচ্ছে, কেশসজ্জা শিল্পী নাকি পুরোটাই ‘নাটক’ করেছেন। আদৌ গায়ে কেরোসিন ঢালেননি। সেই প্রসঙ্গ তুলতেই সুদেষ্ণা বলেন, “অভিযুক্তেরা কোণঠাসা। তাই নজর ঘোরাতে ভুয়ো বক্তব্য ছড়াচ্ছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy