Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Tollywood on Kamduni verdict

কামদুনি আন্দোলনে ছিলেন খ্যাতনামী অনেকেই! হাই কোর্টে রায়ের পর কী বলছেন কৌশিক, সুদেষ্ণারা?

কামদুনিতে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার ১০ বছর পর রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। টলিউড এই রায়কে কী ভাবে দেখছে? জানল আনন্দবাজার অনলাইন।

(বাঁদিক থেকে) কৌশিক সেন, রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদেষ্ণা রায় এবং চন্দন সেন।

(বাঁদিক থেকে) কৌশিক সেন, রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদেষ্ণা রায় এবং চন্দন সেন। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৪২
Share: Save:

কামদুনির ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। কেউ এই রায়কে ইতিবাচক ভাবে দেখছেন। কেই আবার পুরোপুরি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে পারছেন না। একটা সময়ে কামদুনি আন্দোলন সাংস্কৃতিক জগতের উপরেও গভীর প্রভাব ফেলেছিল। আদালতের রায়কে কী ভাবে দেখছে টলিপাড়া?

কামদুনি আন্দোলনের সঙ্গে শুরু থেকেই ছিলেন অভিনেতা চন্দন সেন। শুক্রবার আদালত যে রায় দিয়েছে, তাতে তিনি খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘যে বছর ২১ জুলাইয়ের সভা হল না, সেই বছর ২০ জুলাই কামদুনির জন্য মিছিলের আহ্বান করেছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। সেখানে আমিও ছিলাম। আজ ওই দিনটা কিছুটা হলেও সার্থক হল।’’ একই সঙ্গে তাঁর গলায় কিছুটা হতাশাও ধরা পড়েছে। চন্দন বলছেন, ‘‘যারা সরাসরি এই ঘটনায় যুক্ত ছিল, তাদের মধ্যে প্রধান ব্যক্তিটি কিন্তু আজও বারাসত এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। ব্যারাকপুর থেকে কাকদ্বীপ— অজস্র নির্যাতিতা রয়েছেন, তাঁরা কোনও বিচারই পাননি।’’ চন্দনের মতে, রাজ্যে যে ‘তাণ্ডব’ চলছে তার নেপথ্যে অপরাধীদের শাস্তি না-পাওয়াটাও একাংশে দায়ী। চন্দনের কথায়, ‘‘সুজ়েট (জর্ডন)-কে দিয়ে এ রাজ্যে যা শুরু হয়েছিল, আজকে কামদুনির রায় দেখলে সুজ়েট নিশ্চয়ই খুশি হতেন।’’

কামদুনির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন অভিনেতা কৌশিক সেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা তখন ওখানে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। মিটিং-মিছিলও করেছি। এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অনেককেই চিনি। মৌসুমীর কথা তো বলতেই হয়।’’ কলকাতা হাইকোর্টের এই রায় প্রসঙ্গে কৌশিক বলছেন, ‘‘একটু হলেও খারাপ লাগছে। কারণ, আদালত প্রমাণের ভিত্তিতে রায় দেয়। পুলিশ বা প্রশাসন সেই প্রমাণ কতটা সঠিক ভাবে আদালতের হাতে তুলে দিয়েছে, সেটাই বড় প্রশ্ন। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিটাই তো বদলে গিয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আসলে খবরের ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছে কামদুনি। দীর্ঘ মামলার কী পরিস্থিতি বা সেই পরিবারটা ঠিক ভাবে লড়াই করতে পারছে কি না, আমরা তো তার কোনও খবরই রাখি না। সমাজকে দোষ দেওয়ার তুলনায় আমি তো নিজেকে আগে দোষ দিতে চাই। কারণ নিয়মিত খবর রাখতে পারিনি। আমি লজ্জিত।’’

পরিচালক সুদেষ্ণা রায়ও আদালতের রায় নিয়ে হতাশ। তিনি বলছেন, ‘‘এত দিন পর এ রকম একটা রায় সত্যিই অবাক করার মতো! সমাজ বদলাচ্ছে। তাই ফাঁসির সাজাকে অনেক সময় যাবজ্জীবনে পরিবর্তন করলে অনেকে তা মেনে নেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমি আশ্চর্য হয়েছি।’’ সুদেষ্ণার প্রতিবাদ স্পষ্ট। তাঁর মতে, এর পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরও জোরালো হবে।

তবে হাইকোর্টের এই রায়কে ইতিবাচক দিক থেকে দেখতে চাইছেন না অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট বললেন, ‘‘ফাঁসির আসামি বেকসুর খালাস পাচ্ছে, এটা তো চিন্তার বিষয়। এই রায় নিঃসন্দেহে মহিলাদের সুরক্ষাকে আরও একটু পিছিয়ে দিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE