Advertisement
E-Paper

আমি জানি, জীবনে ঠিক কী করতে চাই

ছবির আগে তাঁর প্রেম ছিল নাটক। আবার ক্যামেরার সামনেও তিনি সমান সাবলীল। থিয়েটার থেকে বড় পরদা— জয় সেনগুপ্তর বেশির ভাগ কাজেই ধরা পড়েছে সমাজচেতনার গল্প। সে রকমই এক সামাজিক গল্প নিয়ে এই সপ্তাহে মুক্তি পাচ্ছে ‘বিলু রাক্ষস’।

রূম্পা দাস

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ১১:২০
জয়

জয়

ছবির আগে তাঁর প্রেম ছিল নাটক। আবার ক্যামেরার সামনেও তিনি সমান সাবলীল। থিয়েটার থেকে বড় পরদা— জয় সেনগুপ্তর বেশির ভাগ কাজেই ধরা পড়েছে সমাজচেতনার গল্প। সে রকমই এক সামাজিক গল্প নিয়ে এই সপ্তাহে মুক্তি পাচ্ছে ‘বিলু রাক্ষস’। ইন্দ্রাশিস আচার্যের পরিচালনায় ‘বিলু...’তে তিনি অভিনয় করছেন নামভূমিকায়।

পুরনো আর নতুনের দ্বন্দ্ব

সাক্ষাৎকারের শুরুতেই জয় বলছিলেন, বিলু চরিত্রটা নাকি বেশ কঠিন। ব্যাখ্যাও দিলেন, ‘‘ভাল-সাহসী ছেলে কিংবা খারাপ-দুশ্চরিত্র ছেলে, আমরা সাধারণত এ রকম মোটা দাগেই চরিত্রকে বিচার করি। কিন্তু বিলু কোনও ব্র্যাকেটের মধ্যে পড়ে না। সে উত্তর কলকাতার ছেলে। যার বেড়ে ওঠার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে পুরনো শহর, নস্টালজিয়া, বনেদি বাড়ি আর নানা মূল্যবোধের গল্প। আবার সে আইটি সেক্টরে কাজ করে। ফলে পেশাগত দিক থেকে উঠে আসে শিল্পতালুকের জীবন। বিলু গান ভালবাসে। গানই তাঁকে প্রেমিকা খুঁজে দেয়। আবার গান হারানোর সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যায় সম্পর্কও। নতুন-পুরনো শহরের দ্বন্দ্ব, সম্পর্কের ভাঙা-গড়া, স্বপ্নযাপনের আনন্দ আর স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা— সব মিলিয়ে বিলু ভাল-খারাপের মেলবন্ধন। তাই ভাল-খারাপের মাঝামাঝি চরিত্র তো কঠিন হবেই।’’ পরিচালক ইন্দ্রাশিস আচার্যের সঙ্গে জয়ের বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল সিনেমার প্রতি ভাললাগা, ভাবনাচিন্তা থেকে। আইটি সেক্টরে কাজের পাশাপাশি ইন্দ্রাশিস বানিয়েছিলেন শর্ট ফিল্ম। ‘বিলু...’ ইন্দ্রাশিসের প্রথম পুরো দৈর্ঘ্যের ছবি।

দুই নায়িকার গপ্পো

ছবিতে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় আর কাঞ্চনা মৈত্র। কাঞ্চনার সঙ্গে আগে কাজ করেছেন জয়। বললেন, ‘‘কাঞ্চনা অভিনয়ের প্রতি ভীষণ যত্নশীল। ওঁর আলাদা স্ক্রিন পার্সোনালিটি আছে।’’ আর কনীনিকার প্রতিভা নিয়ে উচ্ছ্বসিত জয় বললেন, ‘‘ওঁর মধ্যে সহজাত অভিনয় প্রতিভা আছে। কনীনিকার সঙ্গে কাজ করলে নিজের কাজের মানটাও বেড়ে যায়। আর কাজটাও হয় চ্যালেঞ্জিং।’’

ছকভাঙা জীবন

হাবিব তনভীর, ব্যারি জন, লিলেট দুবের মতো নাট্যপ্রতিভার সঙ্গে কাজ করছেন জয়। এখনও চুটিয়ে নাটক করেন। ‘‘নাটকের মাধ্যমেই নিজের কথা আরও বেশি করে গুছিয়ে বলতে পারি,’’ অকপট জয়। আন্তর্জাতিক স্তরে নাটক ছাড়াও বিবিসি ফোরে কাজ করেছেন। আবার ‘দ্য মোস্ট বিউটিফুল হ্যান্ড ইন দিল্লি’র মতো টিভি সিরিজেও অভিনয় করেছেন।

ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়াদের কমিউনিকেশন নিয়ে পড়ান তিনি। গ্রামে-গঞ্জে থিয়েটার নিয়ে নানা কর্মশালায় ব্যস্ত থাকেন। এ ছাড়া হলিউডি ছবির হিন্দি ডাবিং তো রয়েছেই। তবু তাঁর প্রিয় চরিত্র ‘হাজার চুরাশির মা’র ব্রতী। ‘‘গোবিন্দ নিহালনির সঙ্গে কাজ করার স্বপ্ন ছিল। এ ছাড়া ছিল মহাশ্বেতা দেবীর লেখনী। আর ব্রতীর আইডিয়ালিজম আমাকে নাড়া দেয়। ও নিজের শ্রেণিকে ভেঙে বেরিয়ে গিয়েছিল। আমার মধ্যেও ব্রতীর মতোই আর্ট, কালচার, সমাজ নিয়ে আইডিয়ালিজম ভীষণ ভাবে আছে,’’ দরাজ গলায় বললেন অভিনেতা জয়।

পরদা আর বাস্তবের মিলমিশ

বিলু মধ্যবিত্তদের জীবন তুলে ধরে। তার মধ্যে মানসিক টানাপড়েন প্রবল। তাই বিলু নিজেই নিজের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে রাক্ষস হয়ে ওঠে। ‘‘এই ছবিটা আসলে একটা সময়ের জার্নি। সেখানে বিলু বর্তমানে আছে। অতীতে ঘুরে-ফিরে নস্টালজিয়ায় রয়েছে। আবার ফ্যান্টাসিতেও বিচরণ করছে সে।’’ আর বিলুর সঙ্গে জয়ের মিল কতখানি? ‘‘কিছুটা তো অবশ্যই। সবার মধ্যেই রাক্ষস আর আক্ষেপ লুকিয়ে থাকে। আমার মধ্যেও আছে। কিন্তু বিলু জীবনে কখনও ব্যালান্স খুঁজে পায়নি। তবে আমি জানি, জীবনে ঠিক কী করতে চাই। কল্পনা, সৃজনশীলতা আর কমিউনিকেশন— এই দুনিয়াতেই খুশি থাকতে চাই,’’ হাসতে হাসতে বললেন জয়।

Joy Sengupta Celebrity Interview Actor Bollywood Tollywood জয় সেনগুপ্ত
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy