Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

‘সাফল্য সামলানোই বেশি কঠিন’

বহু বার ব্যর্থতার মুখোমুখি হয়ে এমনটাই মনে হয়েছে পরিচালক-অভিনেতা অনুরাগ কাশ্যপেরবহু বার ব্যর্থতার মুখোমুখি হয়ে এমনটাই মনে হয়েছে পরিচালক-অভিনেতা অনুরাগ কাশ্যপের

অনুরাগ।—ছবি: দেবর্ষি সরকার

অনুরাগ।—ছবি: দেবর্ষি সরকার

রূম্পা দাস
শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

মাঝ রাতে শহরে এসেছেন পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ। রাতে তেমন কিছু খাননি। স্বাভাবিক ভাবেই পরদিন সকালে তিনি বেশ ক্ষুধার্ত। সাক্ষাৎকারের শুরুতেই খোঁজ করলেন কোথায় ভাল মাছের ঝোল পাওয়া যাবে। দুপুরে বাঙালি খাবারই খেতে চান তিনি। তার মাঝেই শুরু হল আড্ডা।

প্র: আপনার নতুন শর্ট ফিল্ম ‘ফুল ফর লাভ’। ব্যক্তিগত জীবনে কত বার ভালবাসায় বোকা হয়েছেন?

উ: শুধু আমি কেন, যারা প্রেমে পড়ে, কেউই সোজা ভাবনাচিন্তা করে না। ভালবাসা সমস্ত অনুভূতির উপরে চেপে বসে। আর লোকে শুধুই বোকা হতে থাকে!

প্র: এই শর্ট ফিল্মে ঋতাভরীর (চক্রবর্তী) সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

উ: ও ভীষণ ভাল অভিনেত্রী! আর শতরূপা (সান্যাল) কিছু করতে বললে আমি ‘না’ বলতে পারি না।

প্র: পরিচালনা ও অভিনয় দুটোই করছেন। অভিনয়ের সময়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কতটা বদলে যায়?

উ: আমি শুধু তখনই অভিনয় করি, যখন আমাকে ব্ল্যাকমেল করা হয় (হেসে)! তবে যখন অভিনয় করি, নিজেকে পুরোপুরি ছেড়ে দিই। কোনও প্রশ্ন করি না। পরিচালকের কথা শুনে চলি।

শর্ট ফিল্মে অনুরাগ-ঋতাভরী

প্র: ‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’-এ কোল মাফিয়ার গল্প যে ভাবে দেখিয়েছেন, তা আগে হয়নি। এত ভিতরে ঢুকলেন কী ভাবে?

উ: আমি ওখান থেকেই এসেছি। ফলে জায়গাটা খুব ভাল করে চিনি। আমি শুধু সে সব জায়গারই গল্প বলতে চাই বা বলি, যে জায়গাটা আমার চেনা।

প্র: মুখ্য চরিত্রে নওয়াজ়উদ্দিন সিদ্দিকিকে ভাবলেন কী করে?

উ: আমি খুব ভাল কাস্টিং ডিরেক্টর (হেসে)। এমন সব মুখের খোঁজে থাকি, যাঁরা চরিত্র হয়ে উঠতে পারেন। যেমন পঙ্কজ ত্রিপাঠী, রাজকুমার রাও, ভিকি কৌশল... নওয়াজ় তো আছেই।

প্র: ‘সেক্রেড গেমস টু’ নিয়ে চাপ নেই?

উ: ২৬ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছি। ব্যান, সাফল্য, ব্যর্থতা... এত কিছুর মধ্য দিয়ে গিয়েছি যে, এখন আর কোনও চাপই অনুভূত হয় না।

প্র: আপনার অভিযোগ, সারা জীবন কম বাজেটের ছবি বানিয়ে আপনি ক্লান্ত। কখনও মনে হয়নি, এমন কমার্শিয়াল ছবি বানাবেন, যা অনেক বেশি সংখ্যক দর্শককে হলমুখী করবে?

উ: আমি জানি না, কী ভাবে কমার্শিয়াল ছবি বানাতে হয়। প্রত্যেকটা ছবি বানানোর সময়ে মনে হয় যে, এটা কমার্শিয়ালই বানালাম। দিনের শেষে দেখলাম কেউ সেটা দেখলই না (হেসে)! আমার বানানো কমার্শিয়াল কাজ ‘সেক্রেড গেমস’। এটা মানুষের কাছে পৌঁছেছে। অনলাইন ইজ় মাই প্ল্যাটফর্ম। সারা সপ্তাহের পরে সিনেমা হলে গিয়ে ছবি কেউ না-ই দেখতে পারেন। তাই দর্শককে এমন ভাবে দেখাতে হবে, যা তাঁরা নিজেদের সুবিধে মতো দেখবেন। ভারতীয় দর্শককে কিছু শর্ত দিয়েই তৈরি করা হয়। বড় স্টারদের দেখা, তাঁদেরই ছবি দেখতে যাওয়া... ইন্টারনেট সেই ধারণা ভেঙে দিয়েছে। দর্শক এখন বিষয় নিেয় আগ্রহী। যদি আমার ছবি তৈরির পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়, তখন ভাবব।

প্র: ব্যর্থতা সামলান কী করে?

উ: ব্যর্থতা সামলানো কোনও ব্যাপারই নয়। আমি এত বার ব্যর্থ হয়েছি! বরং সাফল্যকে সামলানোই বেশি কঠিন। সত্যিকারের সাফল্যও তো দুর্লভ।

প্র: বলিউড #মিটু আন্দোলনে বেশ সরব। এতে আদৌ কি কিছু বদলাচ্ছে?

উ: অবশ্যই। অন্তত মানুষ সচেতন হচ্ছে। কিছু মানুষ ভয় পাচ্ছে। এটাই হয়তো বদলে দেবে বাকিটা।

প্র: মেয়ে তো বড় হয়ে গেল...

উ: সত্যিই! আঠেরোয় পড়ল আলিয়া। আমি আর ওর জীবনে ইম্পর্ট্যান্ট কেউ নই (কাঁদোকাঁদো মুখে)। এত দিন ছুটি ওর সঙ্গেই কাটাতাম। মনে হচ্ছে না ও আমার সঙ্গে আর ছুটি কাটাবে (হেসে)।

প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী কে?

উ: ভাল কাজ আর অন্যের সাফল্যে খুব খুশি হই। হিংসেও হয়। যেমন ‘গাল্লি বয়’ নিয়ে হিংসে হচ্ছে। জ়োয়াকে (আখতার) হিংসে করছি। ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শোয়ে ছবিটা দেখতে যাব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE