Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জয়ার আগমনি

পুজোর রং লেগেছে তাঁর সাজে-সৌন্দর্যে, ছবিতেও। আনন্দ প্লাসের সঙ্গে আলাপচারিতায় জয়া আহসানপুজোর রং লেগেছে তাঁর সাজে-সৌন্দর্যে, ছবিতেও। আনন্দ প্লাসের সঙ্গে আলাপচারিতায় জয়া আহসান

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ০০:১২
Share: Save:

এই পুজো তাঁরই। এ পার বাংলায় ‘এক যে ছিল রাজা’ এবং ও পার বাংলায় ‘দেবী’ মুক্তি পাচ্ছে পুজোয়। দু’টি ছবির প্রচারে ব্যস্ত অভিনেত্রী জয়া আহসান। তবে ‘কাজহীন পুজো’ কাটানোরই ইচ্ছে তাঁর। সে সুযোগ আর পাচ্ছেন কই! ‘‘পুজোতে ‘এক যে ছিল রাজা’র প্রচারের কাজ থাকতে পারে। তা ছাড়া পুজো পরিক্রমা, ফিতে কাটা... এ সব তো আছেই। কলকাতার মানুষের কাছে পুরনো হলেও আমি তো বছর দুয়েক ধরে এখানকার ঠাকুর দেখছি। মুগ্ধ হয়ে প্রতিটি মণ্ডপ, সেখানকার প্রতিমা দেখি। চোখ দুটো যেন জুড়িয়ে যায়,’’ জয়ার কণ্ঠে শারদীয়ার মিঠে আমেজ।

সাক্ষাৎকারের মাঝেই তাঁর জন্য এল রেড ভেলভেট কেক। তাঁর শাড়ির রঙের সঙ্গে ম্যাচিং। খাবেন কী খাবেন না করতে করতেই এক টুকরো মুখে দিলেন। পুজোর শুটে ডেজ়ার্ট কি আর উপেক্ষা করা যায়!

বাংলাদেশেও কি দুর্গাপুজোর এতটাই জাঁকজমক? জয়া বললেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ দুর্গাপুজো উদ‌্‌যাপন করছেন। কলকাতার মতো এত বেশি সংখ্যায় না হলেও কয়েকটা পুজো খুব বড় করে হয়। যেমন বনানীর পুজো, ঢাকেশ্বরীর পুজো। ইদের মতোই দুর্গাপুজোতেও এখন তিন-চার দিন ধরে টিভিতে অনুষ্ঠান হয়।’’ পুজোকে কেন্দ্র করে কলকাতায় বাংলা ছবির ঢালাও প্রচারের কৌশল শিখে নিয়েছেন জয়াও। ‘‘এই আইডিয়া আমি এখান থেকেই চুরি করেছি। বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ বয়ন শিল্পের প্রধান কেন্দ্র। ওখানে খুব বড় একটা পুজো হয়। ইচ্ছে আছে, পুজোয় ‘দেবী’র কাস্ট নিয়ে ওখানে যাওয়ার,’’ হাসতে হাসতে বললেন অভিনেত্রী।

বাংলাদেশে প্যান্ডেল হপিংয়ের সুযোগ নেই জয়ার। কলকাতায় বরং সেই অবকাশ অনেক বেশি। তবে পুজো বলতেই তিনি ফিরে যান ছোটবেলার দিনগুলোয়। ‘‘আমাদের পারিবারিক বন্ধুর বাড়ির পুজোয় খুব মজা করতাম। দু’-তিন দিন ধরে হুল্লোড়। আর কখন লুচি-লাবড়া খাব, সেই অপেক্ষা করে থাকতাম।’’ ভারতেশ্বরী হোমসের পুজোর স্মৃতিও তাঁর কাছে অমলিন। ‘‘তখন ক্লাস টু বা থ্রিতে পড়ি। ক্লাস এইট-নাইনের দিদিদের ‘চ্যালা’ হতাম আমরা। চ্যালা হয়েই সে কী আনন্দ! ক্লাস সিক্স পর্যন্ত আমি খুব ছোটখাটো চেহারার ছিলাম। টেবিলের উপরে আমাকে বসিয়ে রাখা হতো। ডাকা হতো ‘ফ্লাওয়ার ভাস’ বলে। সকলে সালোয়ার-কামিজ পরলেও আমার হাফ প্যান্ট পরায় বাধা ছিল না। আর ছোট বলে সব জায়গায় যাওয়ার অনুমতিও ছিল। সকাল থেকেই দেখতাম মাসিরা ফলারের জোগাড় করছে, ভোগ রান্না হচ্ছে। যাদের চ্যালা হতাম, তাদের হুকুমে রাতের বেলা প্রতিমার সামনের ফল-নাড়ু চুরি করে আনতাম। দিদিরা এত দুষ্টু ছিল, বলত একটা আঙুল ভেঙে রেখে আসবি, যেন মনে হয়, ঠাকুর এসে খেয়ে গিয়েছে,’’ জয়ার মুখে স্মিত হাসি।

পুরনো যা কিছু, তার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ অনুভব করেন জয়া। ‘এক যে ছিল রাজা’র শুটিংও তাঁর কাছে টাইমমেশিনে চড়ে এক অভিনব জার্নি। ‘‘পিরিয়ড ড্রামা আমার খুব পছন্দের জঁর। ইতিহাস নিয়ে আমার খুব আগ্রহ। জানি না, কেন অ্যাকাউন্টস নিয়ে পড়লাম। কখনও মনে হয়, ভুল সময়ে জন্মেছি আমি। মা-বাবার ব্যবহার করা পারফিউমের শিশির তলানিটুকু পড়ে আছে। সেটাও আমি যত্ন করে রেখে দিয়েছি।’’

ভাওয়াল সন্ন্যাসীর গল্প জয়ার কাছে রূপকথার মতোই। ‘‘ঢাকার অদূরেই গাজিপুরে ভাওয়ালগড়, শালবনেই এখন বেশির ভাগ ছবির শুটিং হয়। এই ছবির পরে যখন ওই জায়গাগুলোয় গিয়েছি, গল্প আর সত্যি যেন আমার কাছে মিলেমিশে গিয়েছে,’’ বললেন তিনি। এই ছবির ডিকশন ঠিক করার কাজেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন জয়া, ‘‘যাক, সৃজিত মুখোপাধ্যায় স্বীকার করেছেন সেই কথা।’’ হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘না, ও সেটা করেও অবশ্য। আসলে শিল্পী হিসেবে এটা আমার কর্তব্য। ময়মনসিংহের ভাষা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে, গবেষণা করে ছবির সংলাপের জন্য এই টোনালিটি ঠিক করা হয়েছে, যাতে সব ধরনের দর্শক তা বুঝতে পারেন।’’

ছবি: দেবর্ষি সরকার

স্টাইলিস্ট: অঙ্কিতা বন্দ্যোপাধ্যায়

শাড়ি: সুন্দরী ক্রিয়েশনস

ব্লাউজ়: ভি কাট; জুয়েলারি: প্রিটিওস

লোকেশন সৌজন্য: ইয়াওয়াৎচা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Durga puja 2018 Jaya Ehsan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE