Advertisement
E-Paper

‘জীবনে যা চেয়েছি, তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি’

আমেরিকা থেকে সোজা কলকাতায় কুমার শানু। এখান থেকে পাড়ি দেবেন মুম্বই। সফর মাঝে আড্ডা আনন্দ প্লাসের সঙ্গেআমেরিকা থেকে সোজা কলকাতায় কুমার শানু। এখান থেকে পাড়ি দেবেন মুম্বই। সফর মাঝে আড্ডা আনন্দ প্লাসের সঙ্গে

অন্তরা মজুমদার

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০০:০০
কুমার শানু। ছবি:  দেশকল্যাণ চৌধুরী

কুমার শানু। ছবি:  দেশকল্যাণ চৌধুরী

প্র: মেয়ের কাছে গিয়েছিলেন?

উ: লস অ্যাঞ্জেলেসেই ছিলাম পরিবারের সঙ্গে। মেয়েদের (শ্যানন আর অ্যানাবেল) একটু গাইড করতে হয় মাঝেমাঝে। ওদের কয়েকটা চুক্তি সই করার ব্যাপার ছিল। সঙ্গে এক জন অভিভাবক থাকলে ভাল।

প্র: শ্যাননের কাজে আপনি খুশি?

উ: খুশির চেয়েও বেশি। সাধারণত নামকরা বাবা-মায়েরা ইন্ডাস্ট্রিতে ছেলেমেয়েদের পরিচয় করিয়ে দেয়। কিন্তু শ্যানন আমাকে পরিচয় করিয়ে দিল পু বেয়ারের সঙ্গে। জাস্টিন বিবারকে যিিন সেলেব্রিটি বানিয়েছেন। সামনের মাসেই বেয়ারের সঙ্গে প্রজেক্ট শুরু করব। শ্যানন আর আমার ডুয়েটও খুব হিট।

প্র: ছেলে জান কুমার শানুও আপনার গানের রিমেক করে সামনে এলেন...

উ: ও যে ভাবে ‘দিল মেরা চুরায়া কিউঁ’কে ইম্প্রোভাইজ করেছে, সেটা আমার খুব ভাল লেগেছে। আর ক’দিন পরে ছেলে বলিউড কাঁপালে, আর মেয়ে হলিউড... আমার খুশির শেষ থাকবে না!

প্র: কেরিয়ারে আপনার কাছ থেকে ওঁরা কতটা সাহায্য পাচ্ছেন?

উ: হলিউডে আমার তো কোনও সাহায্যের ব্যাপারই নেই। শ্যাননের ক্ষেত্রে আমি শুধু টাকার সমস্যাটাই মেটাতে পারি। জান ফোন করে জিজ্ঞেস করে, ‘বাবা, এই গানটা কেমন করে গাইব।’ যতটা পারি বলি। মিউজিক প্রো়ডিউসারদেরও ফোন করে বলি, জানকে দিয়ে গাওয়ান। আসলে বলিউডে এখন প্রত্যেকের নিজস্ব লবি তৈরি হয়েছে। তা ভেঙে ঢোকা খুব মুশকিল। আমি বলে দিলে হয়তো ওরা বলল, ‘হ্যাঁ, পাঠিয়ে দিন।’ কিন্তু শেষ কথাটা প্রতিভাই বলে।

প্র: আপনাদের সময়টা কি তুলনামূলক ভাবে সহজ ছিল?

উ: বেশি কঠিন ছিল। এখন তো সব চালাকি দিয়ে চলে। আমাদের সময় গান এবং গায়কি অনেক শক্ত ছিল। প্রতিযোগিতাও ছিল ভয়ানক। এখন সঙ্গীত পরিচালকদের বাড়িতে গাড়ি-টিভি পাঠিয়ে গান গায় লোকে! অবশ্য অরিজিৎ সিংহ বা কেকে-রাও আছে... তবে একই ট্র্যাকে সবাই চলছে। কারও গান আলাদা করে মনে থাকছে না।

প্র: অনেক দিন পর টলিউডে প্লেব্যাক করলেন। ‘কিশোরকুমার জুনিয়র’-এ প্রায় সব গানই আপনার গাওয়া...

উ: প্রসেনজিতের জন্য অনেক গেয়েছি আমি, সেই ‘বিয়ের ফুল’ থেকে। সব গানই মুম্বইয়ে রেকর্ড করা হয়েছে। বাকি কাজ কলকাতায় হবে।

প্র: ছবিটা কণ্ঠীশিল্পীদের নিয়ে। আপনার শুরুটাও এক জন কণ্ঠীশিল্পী হিসেবে। ফিরে তাকান কখনও?

উ: অনেক কণ্ঠীশিল্পী কিন্তু ফাংশন ইত্যাদি করে বাড়ি-গাড়িও করে নিয়েছেন। লোকে বলে, কণ্ঠীশিল্পীদের আর শোনা যায় না। কথাটা ঠিক নয়। অনেকেই গাইছেন এখনও। তার মধ্যে থেকেই হয়তো কেউ বেরিয়ে এলেন। যেমন আমি এসেছি।

প্র: এমন কোনও গান আছে, যার জন্য ভেবেছিলেন অ্যাওয়ার্ড পাবেন, কিন্তু পেলেন না...

উ: অনেক গান রয়েছে। ‘আঁখো কী গুস্তাখিয়াঁ, ‘হম দিল দে চুকে সনম’, ‘তুঝে দেখা তো ইয়ে জানা সনম’... ভাল ভাল গান সব। তবে আমিই আমার শত্রু ছিলাম! আমার একটা গানের সঙ্গে আর একটা গানের মধ্যে তখন লড়াই হতো!

প্র: অতীত নিয়ে কোনও আক্ষেপ...

উ: আক্ষেপ নেই। একটা জিনিসই খারাপ লাগে। এক দল লোক একটা সময়ে আমাকে ওম্যানাইজ়ার বলত। আমার নাকি অনেক গার্লফ্রেন্ড ছিল! তাদের জিজ্ঞেস করতে চাই, ক’টা গার্লফ্রেন্ড তারা দেখেছে আমার। এক জনই ছিল। আমি যদি ওম্যানাইজ়ার হতাম, ১৯ বছর ধরে সালোনিকে (স্ত্রী) নিয়ে ঘর করতে পারতাম না।

প্র: বলিউডে এখন আর গান না...

উ: তাতে খারাপ কী! প্রত্যেক শিল্পীর একটা সময়ের পর কেরিয়ার থামানো উচিত। তবেই তো তার জায়গায় আর এক জন আসতে পারে। কিশোরদা মারা যাওয়ার পরেও প্রশ্ন উঠেছিল, এ বার কে? আমার মৃত্যুর পরেও নিশ্চয়ই আর এক জন কেউ আসবে। তবে জীবনে যা চেয়েছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি।

প্র: সিঁথির পুরনো বাড়িতে আর যান?

উ: নাহ। ওগুলো ভাইদের দিয়ে দিয়েছি। গেলেই নানা রকম সমস্যার কথা শুনতে পাই। ও সব আর ভাল লাগে না। তাই যাই না। এমনিতেও রাজনীতি আমার ভাল লাগে না।

প্র: তা হলে রাজনীতিতে কেন?

উ: আমার দুটো গানের স্কুল রয়েছে। ক্যানিংয়ে আর দিল্লিতে। ভেবেছিলাম, কংগ্রেস-বিজেপি যে সরকারই আসুক, যোগ দেব। উদ্দেশ্যটা ছিল, আমার স্কুলের যাতে কিছু সাহায্য হয়। অনেক অনাথ বাচ্চার দেখাশোনা করতে হয় তো! তবে কোনও লাভ হয়নি। কোনও নেতা-মন্ত্রীর পিছনে আমি দৌড়ই না।

প্র: তা হলে দল ছাড়ছেন না কেন?

উ: ধরলামই কখন, যে ছাড়ব!

প্র: পরিবার বিদেশে থাকে। আপনি মুম্বইয়ে একা। নিঃসঙ্গ লাগে না?

উ: কিছু তো করার নেই। দশ-পনেরো বছর পর পুরোপুরি আমেরিকায় শিফট হয়ে যাব।

Kumar Sanu Indian playback singer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy