Advertisement
E-Paper

হাতপাখার হাওয়ার সঙ্গে গৌরবের ভূরিভোজ! জামাইষষ্ঠীতে কি ‘ফাউ’ দেবলীনা? ধরা পড়ল নানা মুহূর্ত

জামাই অন্তপ্রাণ দেবযানী কুমার। দেবলীনা কুমার বললেন, “এই দিন তো আমার কোনও প্রয়োজনই নেই। আমি হলাম ফাউ।” জামাইষষ্ঠীর এমন নানা মুহূর্ত ধরা পড়ল আনন্দবাজার ডট কমের ক্যামেরায়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ ০৮:৫৭
Exclusive photoshoot of Gourab Chatterjee and Devlina Kumar’s Jamai Sashsthi

জামাইষষ্ঠীর ভূরিভোজে দেবযানী কুমার, গৌরব চট্টোপাধ্যায় ও দেবলীনা কুমার। নিজস্ব চিত্র।

জামাইষষ্ঠী হলে বৌষষ্ঠী নয় কেন? প্রতি বছর ঠিক এই সময়ে মাথাচাড়া দেয় এই বিতর্ক। সেই বিতর্কে ইতি নেই। জামাইষষ্ঠীতেও কোনও দাঁড়ি নেই। যতই বিতর্কের ঝড় উঠুক, এই দিনে হাতে মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে শ্বশুরবাড়ি না গেলে আর কিসের জামাই? এমন পুরনোপন্থী নাকি দেবলীনা কুমারও। নিজেরই দাবি অভিনেত্রীর। তাই জামাই ষষ্ঠীরদিন পঞ্চব্যঞ্জন দিয়ে গৌরবকে খাওয়ান দেবলীনার মা দেবযানী কুমার।

জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে গৌরবের জন্য গাঢ় বাদামি রঙের পাঞ্জাবি বেছে দিলেন পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়। পাঞ্জাবির সঙ্গে ধুতি পরতে নাকি সিদ্ধহস্ত গৌরব। তাই পোশাকশিল্পীর চোখে সেরা জামাই গৌরবই। ধুতি নিয়ে নাকি খুব খুঁতখুতে অভিনেতা। সেলাই করা ধুতি পরতে অপছন্দ করেন গৌরব। জামাইয়ের থেকে নাকি ধুতি পরার টিপ্‌স নেন শ্বশুর দেবাশিস কুমারও। এই কারণে জামাই অন্তপ্রাণ দেবযানী কুমার। খাবার টেবিলে উঠে এল এমন নানা কথা।

এই সব শুনে দেবলীনা কুমার বললেন, “এই দিন তো আমার কোনও প্রয়োজনই নেই। আমি হলাম ফাউ।” জামাইয়ের সঙ্গে রং মিলিয়ে শাশুড়ি দেবযানী কুমার পরেছেন জামদানি শাড়ি। শাড়ির পাড় নজরকাড়া। অন্য দিকে, দেবলীনার পরনে পিচ রঙের অর্গ্যানজ়া শাড়ি। খোঁচা দিয়ে অভিনেত্রী বলে উঠলেন, “শাশুড়ি-জামাইয়ের পোশাকের রংও এক। এখানেও আমি বেমানান।”

জামাই গৌরবের জন্য ছিল ‘ওয়েস্টইন’-এর বিশেষ থালি। থালিতে আয়োজন করা হয়েছিল পোস্তর বড়া, লুচি, কষা পাঁঠার মাংস, ফিশ ফ্রাই, গলদা চিংড়ি, ইলিশ-সহ আরও নানা পদ। নিয়ম মেনে সেই থালিতেই ছিল পাঁচ রকমের ভাজা ও মিষ্টি।

জামাইয়ের জন্য এত এলাহি আয়োজন! বৌষষ্ঠী হয় না বলে আক্ষেপ নেই দেবলীনার? প্রশ্ন করতেই অভিনেত্রীর স্পষ্ট জবাব, “আমি নকল নারীবাদে বিশ্বাস করি না। আমার কাছে নারীবাদ অনেক বড় বিষয়। বহু বছর ধরে জামাইষষ্ঠী চলে আসছে। জামাই তো দূরে থাকে। বৌ-রা বাড়িতেই থাকতেন। আমার জন্মদিনে শাশুড়িমা ভাল করে রেঁধে খাওয়ান। তাই আলাদা করে ছেলেদের জন্য হলে, আমার জন্য কেন নয়, এমন নারীবাদে আমি বিশ্বাস করি না। বোনফোঁটাও আমি মানি না। আমি খুবই সাবেকি ধরনের।”

গৌরব স্বভাবে অন্তর্মুখী। দেবলীনা বহির্মুখী। দু’জনের রসায়নের অন্যতম ভিত বন্ধুত্ব। ছবি তোলার সময়েও তাঁদের রসায়নের খুনসুটি ধরা পড়ল। আবার দেবলীনার চোখে রোদ এসে পড়লে আড়াল করলেন গৌরব।

গ্রীষ্মের দুপুরে তেল-ঝাল-মশলায় ভূরিভোজ। তাই এই দিন পোশাক যাতে হালকা থাকে, সেই দিকে নজর রেখেছেন পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়। হালকা ও সূক্ষ্ম সাজই এই দিনের জন্য বেছে নিয়েছেন। গরমের কথা মাথায় রেখেই দেবলীনা সেজেছেন বেগনি রঙের ক্রেপ শিফন শাড়িতে। সেই সঙ্গে হালকা গোলাপি রঙের ব্লাউজ় ও সামান্য প্রসাধনী, হালকা গয়না।

গৌরবও রং মিলিয়ে সেজেছেন বেগনি রঙের পাঞ্জাবি ও সাদা পাজামায়। পাঞ্জাবির নকশায় রয়েছে নাটকীয়তা। গ্রীষ্মের জন্যই এই সাজ বেছে নিয়েছেন তিনিও। সাজ নিয়ে কথা বলতে বলতেই পোশাকশিল্পী বললেন, “জামাইষষ্ঠীর এক মাস আগেই গৌরবের ফোন চলে আসে। ও-ই বলে দেয়, এই বার ও কেমন পাঞ্জাবি ও ধুতি পরতে চায়।” শাশুড়ির শাড়িও অভিষেকের থেকেই নেন গৌরব।

দেবলীনা ও গৌরব দু’জনেই নিজেদের চেহারার বিষয়ে সচেতন। জামাইষষ্ঠীতেও কি পরিমাণ বুঝে খাওয়াদাওয়া করেন? সেখানেও কি তেলমশলা এড়িয়ে চলেন তাঁরা? প্রশ্ন করতেই গৌরবের উত্তর, “একেবারেই না। এই দিন ডায়েট নিয়ে ভাবি না। একটা দিন কব্জি ডুবিয়ে খাই। একেবারে তেল-ঝাল খাবার খেতেই এই দিন পছন্দ করি। আসলে সপ্তাহে একটা দিন স্বাস্থ্যের চিন্তা না করেই খাই।”

একই বক্তব্য দেবলীনারও। দম্পতির দিনের অনেকটা সময় কাটে শরীরচর্চা কেন্দ্রে। তবে জামাইষষ্ঠীতে খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে নারাজ দেবলীনাও। এই দিন বাধা না মেনে খাওয়াদাওয়া করেন তিনিও। গৌরব-দেবলীনার সম্পর্কের রসায়নেও শরীরচর্চার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে জানান দেবযানী কুমার। গৌরবের সঙ্গে বিয়ের পরে নাকি অভিনেত্রী নিজের জীবনযাপন নিয়ে আরও সতর্ক হয়েছেন। সঠিক সময় ঘুমোনো থেকে ঘুম থেকে ওঠা, সব কিছুতেই নাকি এসেছে পরিবর্তন।

ছবি তুলতে তুলতেই দেবলীনা বলেন, “এই শাড়িটা কী আরামদায়ক! জামদানির সঙ্গে লেসের কাজ। কিন্তু শাড়িটা একেবারেই ভারী নয়। গরমের জন্য আদর্শ।” দেবলীনার সঙ্গে রং মিলিয়ে গৌরবের পরনে পাউডার গোলাপি রঙের পাঞ্জাবি ও ধুতি।

সময়ের অভাবে ক্রমাগত হারিয়ে যাচ্ছে পুরনো রীতি, উৎসব। বাঙালির ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চায় দেবলীনা ও গৌরবের পরিবার। তাই মেয়ে-জামাই যখন ছবি তুলতে ব্যস্ত, তখন দেবযানী কুমার বলেন, “নিয়ম মানার জন্য আসলে আমরা জামাইষষ্ঠী পালন করি না। আচার-রীতি নিয়ে আমরা সেই ভাবে ভাবি না। আসলে পুরনো রীতি, অনুষ্ঠানগুলো যাতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলতে থাকে, সেটাই আমাদের আসল লক্ষ্য।”


পোশাক: রয় ক্যালকাটা

রূপটান: অভিজিৎ পাল

চিত্রগ্রাহক: বিপ্লব হালদার ও শুভজিৎ

স্থান: ওয়েস্টিন

Jamai Sashthi Special Devlina Kumar Gourab Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy