Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

লিয়েন্ডারের ল্যাবরেটরি

ছেলে ১৭টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু কোন ম্যাজিক ফর্মুলায় বেকবাগানের সেই ছেলে বিয়াল্লিশেও জেতেন ফ্লাশিং মেডোয়? সেই প্রেসক্রিপশন দিলেন তাঁর বাবা ডা. ভেস পেজ। সামনে সুপ্রিয় মুখোপাধ্যায়ছেলে ১৭টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু কোন ম্যাজিক ফর্মুলায় বেকবাগানের সেই ছেলে বিয়াল্লিশেও জেতেন ফ্লাশিং মেডোয়? সেই প্রেসক্রিপশন দিলেন তাঁর বাবা ডা. ভেস পেজ। সামনে সুপ্রিয় মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

ওই ঘটনার পর নয় নয় করে কতগুলো বছর কেটে গেল! এখনও ভাবলে শিউরে উঠি। একই সঙ্গে এখনও সে রকমই বিস্ময়ের ঘোর লাগে!

উইম্বলডনের প্লেয়ার্স বক্সে বসে সে দিন যেমন ঘোর লেগেছিল। দু’হাজার তিন-য়ে উইম্বলডনের একটা মিক্সড ডাবলস ম্যাচ। কিংবদন্তি মার্টিনা নাভ্রাতিলোভার পার্টনার লিয়েন্ডার। সেকেন্ড সেটে কোর্টে পড়ে গিয়েও একটা রিটার্ন ফেরাল সে। তার পর কয়েক সেকেন্ড কেটে গেলেও দেখি উঠছে না।

তখনও গ্যালারি হাততালি দিয়ে চলেছে। দুর্দান্ত অ্যাথলেটিজম রিটার্ন দেখে। কিন্তু আমি তো এক জন ডাক্তার। তার ওপর ওর বাবা। মনের ভেতর খচখচ করতে লাগল। কিন্তু কোর্টের ভেতর ঢোকার উপায় নেই। লিয়েন্ডারও দেখলাম টুর্নামেন্টের মেডিক্যাল স্টাফ কাউকে ডাকল না। ভাবলাম আমারই ভুল বুঝি! সত্যিই, মাটিতে পড়ে গিয়ে রিটার্নটা করেছে। কিন্তু ম্যাচের পরেই ভুল ভাঙল। বলা ভাল, ঠিক ভাবনাটাই সত্যি হল আমার। ম্যাচটা জিতে উঠে ও লকার রুমে ঢোকার আগে আমায় বলে গেল, ‘‘ড্যাডি, ওই রিটার্নটা করার সময় কয়েক সেকেন্ড ব্ল্যাক আউট হয়ে গিয়েছিল আমার। সকাল থেকেই মাথায় একটা অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে। গায়ে জ্বরও আছে। প্রথম সেটের পরে কয়েক মিনিটের ব্রেক নিয়ে লকার রুমে এসে টেম্পারেচার নিয়ে দেখলাম ১০৪ ডিগ্রি।

মার্টিনা তখন বলেছিল, চলো ওয়াকওভার দিয়ে দিই। এই শরীর নিয়ে কী ভাবে আরও একটা সেট খেলবে? কিন্তু আমি ওঁকে বললাম, সে কী করে হয়? আপনার টোয়েন্টি ফিফথ্ উইম্বলডন টাইটেল থেকে আমরা মাত্র দু’টো ম্যাচ দূরে আছি। আপনার এত বড় একটা অ্যাচিভমেন্ট আমার জন্য নষ্ট হয়ে যাবে? সেটা কিছুতেই হতে পারে না।

তার পরের ঘটনা তো একই সঙ্গে ইতিহাস আবার দুঃস্বপ্নও!

দিন কয়েক আগেই এক মার্টিনাকে (হিঙ্গিস) নিয়ে মিক্সড ডাবলসে ৪৬ বছরের ইতিহাস গড়ল লিয়েন্ডার। ২০০৩-এ সিনিয়র মার্টিনার উইম্বলডনে ইতিহাস গড়ার পিছনেও আমার ছেলে!

তার পরেই তো লিয়েন্ডারের ব্রেন টিউমার ধরা পড়েছিল। আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, কোর্টে ওর ব্ল্যাক আউট হয়ে যাওয়া, ধুম জ্বর, অসহ্য মাথার যন্ত্রণার আসল কারণ।

বাবা হয়েও এখনও আমার বিস্ময় কাটেনি, কী করে সে দিন তার পরেও ও খেলেছিল! ট্রফিটাও জিতেছিল শেষমেশ।

আবার এটাও ভাবি, এই জন্যই তো ও লিয়েন্ডার!

শৈশব-যন্ত্রণা

টেনিস মহলে অনেক বছর ধরে একটা কথা খুব চালু— লিয়েন্ডার হল আমার ল্যাবরেটরিতে তৈরি!

কথাটা যে একেবার ভুল তা অবশ্য বলব না। আবার পুরোপুরি সত্যিও নয়।

যেমন ওর টেনিস কেরিয়ারে বরাবরের অসমসাহস! অসম্ভব দম! কিছু একটা পেতে হবে মনস্থ করলে তার পেছনে শেষ সেকেন্ড পর্যন্ত মরণপণ দৌড়নো। আর সেই দৌড়ে বেশির ভাগ সময় সফল হওয়া—এই ব্যাপারগুলো তো কোনও ল্যাবরেটরিতে তৈরি হয় না! কারও ভেতর ইনজেক্ট করে ঢুকিয়ে দেওয়াও অসম্ভব।

লিয়েন্ডারকে খুব ছোট্ট বয়সেই খেলার জগতে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। বারো বছর বয়সে দেখেছিলাম, ও এক জন পুরোদস্তুর অ্যাথলিট। মানসিকতা, দম, সাহস— এগুলো একেবারে ওর নিজস্ব গুণাবলি। গত তিরি‌শ বছর ধরে ও নাগাড়ে লড়াই করাটাকে মন থেকে ভালবেসে এসেছে। নিজের সামনে ক্রমাগত নতুন নতুন লক্ষ্য তৈরি করে সেগুলোতে পৌঁছনোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। এগুলো শুধু এক জন স্পোর্টসম্যানই নয়, যে কোনও পেশাতেই চূড়ান্ত সফল মানুষের স্পেশ্যাল মানসিকতা। ল্যাবরেটরিতে স্কিল তৈরি করা যায়। মানসিকতা নয়। লিয়েন্ডার সেটা সঙ্গে নিয়েই পৃথিবীতে এসেছে।

আমার প্রথম স্ত্রী জেনিফার ১৯৭২-এ মিউনিখ অলিম্পিকের সময় লিয়েন্ডারকে ‘কনসিভ’ করে। ওই অলিম্পিকে আমরা দু’জনই ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছিলাম। আমি হকি টিমে। জেনিফার বাস্কেটবলে। এখন মনে হয়, ঈশ্বরেরই যেন বিধান— লিয়েন্ডারের গ্রেট স্পোর্টসম্যান হওয়াটা!

ভাবুন তো, ওর উৎপত্তি দুই অলিম্পিয়ানের মিলনে আর সেটাও কিনা অলিম্পিকেই!

একই সঙ্গে এত বছর বাদেও বলতে খুব খারাপ লাগছে— আমাদের তিন সন্তানকেই মা-বাবার মধ্যে ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের দরুন পারিবারিক ঝড়কে সামলাতে হয়েছে। এবং সেটাও দুর্ভাগ্যক্রমে ওদের শৈশবে! বলতে আমার কোনও দ্বিধা নেই, ওই ঘটনা অবশ্যই লিয়েন্ডারদের কষ্ট দিয়েছিল।

ওর মাইন্ড সেট-টাই ম্যাজিক্যাল

পারিবারিক সমস্যাকে ওর মন থেকে সরিয়ে রাখতে লিয়েন্ডারকে আরও বেশি করে খেলাধুলোর সঙ্গে জড়িয়ে দিয়েছিলাম। যখন ওর বারো
বছর বয়স— ফুটবল, হকি, রাগবি, ক্রিকেট, টেনিস— প্রতিটা খেলা সমান ভাল খেলত।

আর তার চেয়েও যেটা দেখে আমার ওই সময় বেশি অবাক লাগত—চার দিকের প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও কী ভাবে একটা বাচ্চা ছেলে নিজেকে ফাইটার করে তুলতে পারে! কী অদ্ভুত ব্যাপারটা!

আসলে তখন থেকেই দেখে আসছি, নিজের জীবনকে ছোট ছোট কম্পার্টমেন্টে ভাগ করে নিয়ে সেই বিশেষ মুহূর্তে বিশেষ একটা কম্পার্টমেন্টের দিকে একশো ভাগ ফোকাসড্ থাকার ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে লিয়েন্ডারের।

সবচেয়ে বড় কথা, সেই ছোট বয়স থেকে আজও খেলাধুলোই হল লিয়েন্ডারের কাছে পারিবারিক সমস্যা থেকে নিজেকে দূরে রাখার একমাত্র অবলম্বন। ব্যক্তিগত যাবতীয় সমস্যা থেকে বাঁচার রাস্তা।

সত্যি বলতে কী, লিয়েন্ডারেরও বেশ কিছু দিন ধরে পারিবারিক সমস্যা চলেছে। প্রায় নিয়মিত কোর্ট-কাছারি করতে হচ্ছে। তা সত্ত্বেও এক বার টেনিস কোর্টে ঢুকে পড়লে ওর মগজে, বডি ল্যাংগোয়েজে সে সবের বিন্দুমাত্র ছাপ থাকে না! আসলে ওর মাইন্ড সেট-টাই এ রকম ম্যাজিক্যাল!

জার্মান মেথ়ড

লিয়েন্ডারের জন্ম ১৯৭৩-এ। সত্তরের দশকে তখনকার পূর্ব জার্মানি এক অত্যাধুনিক স্পোর্টস প্রোগ্রাম আবিষ্কার করেছিল। পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছিল— পিক পারফরম্যান্স প্রোগ্রাম। ওদের মত ছিল, স্পোর্টস ট্রেনিং মানে কেবল ফিটনেস ট্রেনিং নয়। এক জন প্রকৃত বিশ্বমানের খেলোয়াড় হয়ে ওঠার জন্য সেই প্লেয়ারের লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্টও ফিটনেসের মতোই সমান জরুরি। যার জন্য তিন বছর বয়স থেকেই তাকে অ্যাথলিট করে তোলার কাজ শুরু করে দিতে হবে।

লিয়েন্ডারকে আমি ওই জার্মান মেথডে তৈরির চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি। ওকেও তিন বছর বয়সে খেলার মাঠে এনে ফেলেছিলাম। ওই বয়স থেকেই ওর বডি মুভমেন্ট, শরীরের ব্যালান্স একেবারে ক্রীড়াবিজ্ঞান মেনে নিখুঁত করে তোলার কাজ চলেছিল আমার।

৩৬৫ দিন বাড়িতে হাজার বার স্কিপিং করাতাম

চেন্নাইয়ে (তখনকার মাদ্রাজ) ব্রিটানিয়া অমৃতরাজ অ্যাকাডেমিতে যাওয়ার আগে লিয়েন্ডার সল্টলেক সাইতে ডাক্তার টন্ডনের কাছে ফিজিক্যাল ট্রেনিং করতে যেত। মাঝেমধ্যে ওই সময় পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফুটবল টিমের প্র্যাকটিসেও লিয়েন্ডারকে পাঠিয়েছি। সব কিছু একটাই টার্গেট নিয়ে। লিয়েন্ডার যাতে প্রচণ্ড কষ্টসহিষ্ণু হয়ে উঠতে পারে। ওর ভেতর যেন একটা সহজাত চূড়ান্ত সহনশীলতা তৈরি হয়।

অনেকেই জানেন, আবার বেশির ভাগই জানেন না— ওই সময় ডাক্তার টন্ডন, কী পিকেদা’র কাছে ট্রেনিং নিতে যাওয়ার আগে, আর ফিরে আসার পরে ৩৬৫ দিনই বাড়িতে হাজার বার স্কিপিং করাতাম আমি লিয়েন্ডারকে। একশো বার ডন-বৈঠক। যাতে পা আর হাতের পেশি বজ্রকঠিন থাকে ওর গোটা খেলোয়াড়জীবনে। এক-এক দিন লিয়েন্ডার পরিশ্রম, ক্লান্তি আর কষ্টে ভেঙে পড়ত আমার কাছে। আমার দুটো হাত ধরে হাউ-হাউ করে কেঁদে ফেলে কাতর অনুনয় করত, ড্যাডি আজ একটা দিন ছেড়ে দাও। এত বার স্কিপিং করতে পারছি না। ওঠ-বোস করতে পারছি না আর...।

ওকে দেখে তখন আমার ভেতরেও কষ্ট হত। কিন্তু এক দিনও রেহাই দিতাম না। বাড়ির প্রত্যেককে আমার স্পষ্ট নির্দেশ ছিল— যতক্ষণ না দিনের
পুরো ট্রেনিং লিয়েন্ডার শেষ করছে, ওকে খাবার টেবলে বসতে যেন না দেওয়া হয়। ট্রেনিং কমপ্লিট না করলে খাবে না সারা দিন। বাবা হয়েও এতটাই নির্মম থেকেছি ছোট লিয়েন্ডারের ওপর। একটাই স্বপ্নে— ও যেন সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন তৈরি হয়ে ওঠে।

বিয়াল্লিশ বছর বয়সেও এক মরসুমে ট্রিপল গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে যেটা ও প্রমাণ করেছে। পরের বছর নিজের সাত নম্বর অলিম্পিক খেলবে। মানে আড়াই দশকের ওপর টানা অলিম্পিকে নামছে। দেশকে অলিম্পিক মেডেল এনে দিয়েছে। এখানে একটা কথা অবশ্য বলে রাখি— ২০১৬ রিও অলিম্পিকে ওর পারফরম্যান্সের ওপরই লিয়েন্ডারের টেনিস খেলা থেকে অবসর নেওয়ার ব্যাপারটা নির্ভর করছে। আমাদের বাবা-ছেলের ভেতর অন্তত সে রকমই কথা হয়েছে।

অতটা ভিখারিপনা ঈশ্বর আমাকে দিয়ে করাননি

লিয়েন্ডার যখন জুনিয়র গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলছে তখনও ওর জন্য যথাযথ স্পনসর জোগাড় করতে আমার মাথা থেকে পা কালঘাম ছুটে গেছে! জুতোর সোল খুলে গেছে!

এমন হয়েছিল যে, মিডিয়ায় খবরই রটে গিয়েছিল— সেই সময় কলকাতার কোনও কর্পোরেট হাউসে আমাকে একটা ফাইল হাতে ঢুকতে দেখলেই নাকি সেই অফিসের মার্কেটিং বিভাগের লোকজনেরা চেয়ার ছেড়ে পালিয়ে যেতেন! কথাটা মোটেই সত্যি নয়। অতটা ভিখারিপনা অন্তত ঈশ্বর আমাকে দিয়ে করাননি!

আসল কাহিনিটা এখানে বলছি শুনুন। ১৯৯০-এ লিয়েন্ডারের যখন ষোলো বছর বয়স, তখনই ওর জুনিয়র টেনিসে ওয়ার্ল্ড র‌্যাঙ্কিং ওয়ান। নব্বই আর একানব্বই পরপর দু’বছর জুনিয়র উইম্বলডন আর জুনিয়র ইউএস ওপেন সিঙ্গলস চ্যাম্পিয়ন হল। ব্রিটানিয়া অ্যাকা়ডেমি ওর অতটা উন্নতি হবে আশা করেনি। ফলে যতটা দরকার ততটা সুযোগসুবিধে, স্পনসরশিপ দিতে পারছিল না। লিয়েন্ডারকে পেশাদার সার্কিটে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পুরোপুরি আমাদের ঘাড়ে এসে পড়েছিল।

তখন নরেশ কুমার আর আমি মিলে লিয়েন্ডারের জন্য যথাযথ স্পনসরশিপ জোগাড়ের চেষ্টায় নামলাম। লিন্টাস অ্যাডভারটাইজিং লিয়েন্ডারের একটা খুব সুন্দর ব্রোশিওর তৈরি করে দিয়েছিল। যেটা নিয়ে আমরা প্রধানত কলকাতার স্পনসরদের কাছে যেতাম। ব্রোশিওরে লিয়েন্ডারের জন্য কোচ, ট্রেনার, টেনিস সার্কিট জুড়ে খেলার জন্য ঘোরাঘুরি, থাকা, খাওয়া, টেনিস কিটস— প্রতিটা বিষয়ের খরচের আলাদা আলাদা হিসেব দেওয়া ছিল। আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে প্রতিটা বিভাগের জন্য পাঁচ লাখ টাকা করে আমরা হিসেব কষেছিলাম। কোম্পানিগুলোকে বলেছিলাম, আপনারা লিয়েন্ডারের এক জন টপ ক্লাস অ্যাথলিট হয়ে ওঠার দিকে লক্ষ রাখুন আর সেই বুঝে ওর স্পনসর হোন। তাতে আমরা কম করে কলকাতারই সাত-আটটা কোম্পানির সাহায্য পেয়েছিলাম।

মুশকিল হয়েছিল স্পনসরদের টাকাগুলো ডলারে ট্রান্সফার করাটা। সেই সময় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিধিনিষেধে বছরে মাত্র ৭৫০ ডলার পর্যন্ত ট্রান্সফার করা যেত টাকাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী। তিনি আমাদের বাঁচিয়েছিলেন। বছরে ৩৫ হাজার ডলার পর্যন্ত ট্রান্সফার করার অনুমতি দেন।

সম্রাট ও সুন্দরী

প্রথমেই আমি এই রটনাটা এখানেই থামিয়ে দিতে চাই যে, লিয়েন্ডার ‘লেডি কিলার’! বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক স্পোর্টসম্যানকে ঘিরে একটা ফ্যান-বলয় থাকে। সেই হাই প্রোফাইল স্পোর্টসম্যানের তুঙ্গস্পর্শী সাফল্য, নাম, যশ, অ্যাথলিটসুলভ পৌরুষ স্বাভাবিক ভাবেই মহিলা মহলে বাড়তি আগ্রহ তৈরি করে। তার মানেই এই নয় যে, সেই মেগা স্পোর্টসম্যান এক জন লেডি কিলার!

লিয়েন্ডার সিগারেট-মদ ছোঁয় না। খুব বেছে বেছে পার্টি করে। ম্যাচ বা স্পেশ্যাল জিম-টিম না থাকলে ৩৬৫ দিন রাত এগারোটার পর আর জেগে থাকে না। সারাক্ষণ নিজের ‘গোল’কে তাড়া করে চলেছে। নিজের কেরিয়ারের দিকে একশো ভাগ ফোকাসড্। লিয়েন্ডারের বোধহয় ইচ্ছে থাকলেও মেয়েদের পিছনে ছোটার ফুরসত নেই। এতটাই কঠিন আর টাইট শিডিউল ওর বছরভর।

দ্বিতীয় লিয়েন্ডার এখানে আসবে কি?

নিশ্চয়ই। আসতেই পারে। আমি বিশ্বাস করি, প্রত্যেক জেনারেশন তার আগেরটার চেয়ে বেশি ফিট, বেশি শক্তি‌শালী, বেশি ভাল হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে। যত দিন যাচ্ছে স্পোর্টস মেডিসিন, ট্রেনিং, কোচিংয়ের উন্নতি ঘটে চলেছে। তা হলে কেন আর একটা লিয়েন্ডার তৈরি হবে না? তবে তার মানসিকতা লিয়েন্ডারের মতো হতে হবে। হতেই হবে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE