Advertisement
E-Paper

বাসি রুটির বিদেশি প্ল্যাটার

‘জুড়ুয়া’র সঙ্গে ‘জুড়ুয়া টু’র তুলনা আনার প্রয়োজনই ছিল না, যদি না দ্বিতীয় ছবিটা প্রথমটার রিবুট হতো। সলমন খানের কমিক টাইমিং, অভিনয়, যৌবনের চেহারার দিক দিয়ে দেখতে গেলে বরুণ কম নন কোনও অংশেই।

রূম্পা দাস

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০৯:০০
ছবির একটি দৃশ্য

ছবির একটি দৃশ্য

জুড়ুয়া টু

পরিচালনা: ডেভিড ধবন

অভিনয়: বরুণ ধবন, জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ, তাপসী পান্নু

৫/১০

কুড়ি বছর সময়টা নেহাত কম নয়। আর এই কুড়িটা বছর পরে নয়া মোড়কে পুরনো গল্পকেই পরিবেশন করেছেন পরিচালক। সমস্যা ছিল না সেখানেও। কিন্তু কিছু জিনিসের বদল হয় না। আর ঠিক সেই জায়গাতেই মহা ভুল করে গোল খেয়েছেন ডেভিড ধবন।

‘জুড়ুয়া টু’তে শুধু পাল্টে গিয়েছে সময় আর চরিত্রের মুখগুলো। জন্মের পরেই চার্লসের কারসাজিতে যথারীতি বিচ্ছেদ হয় যমজ ভাই রাজা আর প্রেমের (বরুণ ধবন)। শান্তশিষ্ট, দুর্বল প্রেম রয়ে যায় বাবা-মায়ের কাছে। অনাথ রাজা হয়ে ওঠে মুম্বাইয়া টপোরি। মারদাঙ্গা, নাচগান, মেয়ে পটানোয় ওস্তাদ সে। রাজা আর প্রেম একদম বিপরীত মেরুর। তবে দু’জনে আলাদা হয়েও একবারে এক। একজন মার খেলে অন্য জনের ব্যথা লাগে। একজন স্টেজ কাঁপিয়ে পিয়ানো বাজালে আর একজনের আঙুল নিশপিশ করে বিমানের মহিলা সহযাত্রীর সর্বাঙ্গে ঘুরতে থাকে। প্রেম লন্ডন আর রাজা মুম্বইয়ে থাকলেও ছবির স্বার্থে এক জায়গায় আসতেই হয়। অ্যালেক্সকে (ভিভিয়ান বাথেনা) মারধর করে রাজা পাপ্পু পাসপোর্টের (জনি লিভার) তৈরি নকল পাসপোর্ট নিয়ে পাড়ি দেয় লন্ডন। সঙ্গী হয় নন্দু (রচপাল যাদব)। মাঝপথে দুই নায়কের নিজের নিজের নায়িকা আলিশ্কা (জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ) আর সামারার (তাপসী পান্নু) সঙ্গে দেখা। তার পর হাজার ছুতোনাতায় প্রেম, রাজাকে প্রেম ও প্রেমকে রাজা বলে নায়িকাদের ভ্রান্তি,
দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন এবং সর্বোপরি রাজা-প্রেমের ভাই-ভাই মিলন।

‘জুড়ুয়া’র সঙ্গে ‘জুড়ুয়া টু’র তুলনা আনার প্রয়োজনই ছিল না, যদি না দ্বিতীয় ছবিটা প্রথমটার রিবুট হতো। সলমন খানের কমিক টাইমিং, অভিনয়, যৌবনের চেহারার দিক দিয়ে দেখতে গেলে বরুণ কম নন কোনও অংশেই। কিন্তু সলমনের যে এক্স ফ্যাক্টর আছে, তা রপ্ত করতে বরুণের কিছু সময় তো অবশ্যই লাগবে। অনেক দাপুটে অভিনেতা তাঁদের সূক্ষ্ম অভিনয়ে ডেভিডের অরিজিন্যাল ‘জুড়ুয়া’কে হাসির ফোয়ারা বানিয়ে তুলেছিলেন। ‘জুড়ুয়া টু’র মূল সমস্যাটা এখানেই। বরুণ-রচপালের বন্ধুত্বের জুটি সলমন-শক্তি কপূরের জুটির আশপাশ দিয়েও যায় না। আগের ছবিতে রাজার জন্য হন্যে হয়ে ঘোরা দুই পুলিশের চরিত্রে ছিলেন অনুপম খের এবং সতীশ কৌশিক। রিবুটে উর্দিধারী পবন মলহোত্র এবং একজন অতিকায় চেহারার মহিলা পুলিশের কেমিস্ট্রি জমলই না। জনি লিভারের ঘরানার কমেডি ছবিতে থাকলেও মিনিট পাঁচেকের বেশি জনিকে দেখানো হয়নি। এ ধরনের ছবিতে নায়িকাদের খুব একটা কিছু করারও থাকে না। জ্যাকলিন, তাপসীর ক্ষেত্রেও তার বদল হয়নি।

অরিজিন্যালের মতো সমস্ত অভিনতাদের মিলিত প্রয়াস ‘জুড়ুয়া টু’তে নেই। ফলে বরুণকে একাই তাঁর যমজ চরিত্রের চার কাঁধে চেপে ছবিটা টেনে নিয়ে যেতে হয়েছে। গোবিন্দার মতো মঞ্চ কাঁপিয়ে দেওয়া নাচ বরুণ জানেন। অভিনেতা ও কমেডিয়ান হিসেবেও তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না। মোদ্দা কথা, এই ছবিতে বরুণই একমাত্র দর্শনীয়।

সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধার কার্ড-বিতর্ক, কথায় কথায় গুগুল চেক করা প্রজন্ম বা মুংফলির সঙ্গে বাহুবলীকে তুলনা করার সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন সাজিদ-ফারহাদ। তবে ছবির দুর্বলতম অংশ হল গান। তাই ফিরিয়ে আনতে হয়েছে পুরনো হিট ‘উঁচি হ্যায় বিল্ডিং’ বা ‘চলতি হ্যায় কেয়া’র টু পয়েন্ট ও-র ভার্সান।

গোটা হল প্রায় হাউসফুল থাকলেও অরিজিন্যাল রাজা-প্রেমের প্রতি দর্শকদের ভালবাসা বোঝা যায় ছবিশেষে সলমনের এন্ট্রিতে। হাততালি আর সিটিতে ফেটে পড়া হল সেই মুহূর্তেই স্পষ্ট বলে দেয় সলমনই বিগ বস।

‘জুড়ুয়া টু’ অনেকটা বাসি রুটি দিয়ে তৈরি নাচোসের মতো। পাতি চায়ের গ্লাসে বাসি রুটি ডুবিয়ে খাওয়ার মজাই আলাদা। ডেভিড সেটা প্রায় নষ্টই করেছেন পশ্চিমী সালসা দিয়ে নাচোস পরিবেশন করতে গিয়ে।

Judwaa 2 Varun Dhawan David Dhawan জুড়ুয়া টু
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy