কিছু দিন আগে ছবিশিকারিদের কড়া ভাষায় তাঁর জিমের বাইরে দাঁড়াতে বারণ করেছিলেন অভিনেত্রী জাহ্নবী কপূর। এক সাক্ষাৎকারে নায়িকা বলেছিলেন, “জিমের পোশাকে আমার ছবি উঠুক চাই না। অস্বস্তিকর লাগে দেখতে।” সম্প্রতি, অভিনেত্রী অহনা দত্ত জানিয়েছেন, জিমের পোশাক পরে রাস্তায় বেরোলে সাধারণের তির্যক দৃষ্টি অস্বস্তিতে ফেলে তাঁকে। এই ঘটনায় টলিপাড়া কী বলছে?
একটি ভিডিয়োর মাধ্যমে ছোটপর্দার মিশকা জানান, গত কয়েক দিনে তাঁকে ঠিক কী পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। প্রতি দিন একটি নির্দিষ্ট টোটোয় চেপে জিমে যান অভিনেত্রী। আর জিমের পোশাকে অহনাকে দেখে পথচলতি অনেকেই তির্যক দৃষ্টিতে তাকান। অভিনেত্রী ওই ভিডিয়োয় আরও বলেন, “গাড়ি ছাড়া এমনি ‘পাবলিক ট্রান্সপোর্ট’-এ গেলে তাঁর এখন ভয় লাগে। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন।” এই ঘটনা শোনার পরেই উঠছে নানা প্রশ্ন।
পেশার দায়ে ইদানীং সব অভিনেতাই স্বাস্থ্যসচেতন। নিত্যদিন সমাজমাধ্যমে তাঁদের জিমের ভিডিয়ো, ছবি দেখতে পাওয়া যায়। সেই ভিডিয়ো, ছবির জন্য অনেককে কটাক্ষের সম্মুখীনও হতে হয়। এ প্রসঙ্গে কী মত টলিপাড়ার অভিনেত্রীদের? এখন জিমের পোশাক পরেও ভাবতে হচ্ছে মহিলাদের! এ প্রসঙ্গে পুরুষদের মতামতই বা কী?
অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রের মতে, এই ধরনের পরিস্থিতিকে দু’ভাবে দেখা যায়। তিনি বলেন, “যে যা খুশি পরতে পারে। এখন তো এই স্বাধীনতার কথাই বলা হয়। ফলে অনেকে সেই স্বাধীনতার অপব্যবহার করে ফেলেন। যার ফলে যাঁরা সেই আওতায় পড়ছেন না, তাঁদেরও অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। আবার আমি যদি যোগভ্যাসের কোনও ছবি পোস্ট করি, সে ক্ষেত্রে মানুষের চোখ যাবে সেই ক্লিভেজে। এই বিষয়টির মধ্যে আসলে অনেকগুলো দিক রয়েছে।”
আরও পড়ুন:
তবে এই যুগে দাঁড়িয়েও পোশাক পরে অস্বস্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে, এটা কোনও ভাবেই কাম্য নয়, মত অভিনেতা ইন্দ্রজিৎ বসুর। যদিও অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত বললেন, “যে পোশাকই পরি না কেন, যদি আমি আত্মবিশ্বাসী হই, তা হলে সাধারণ মানুষ যে ভাবেই দেখুক না কেন, তাতে গুরুত্ব দিতে মোটেই রাজি নই।”
বহু বছর ধরে এই ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন অভিনেতা সুদীপ মুখোপাধ্যায়। ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে অসম্মান কারও প্রাপ্য নয়। অভিনেতা বলেন, “আমরা স্বাধীন মানুষ। স্বাধীনতা মানে কিন্তু উচ্ছৃঙ্খলতা নয়। মানুষ হিসাবে আমাদের দায় বর্তায়। আমাদের মধ্যে নিয়ম বেশি, মানবিকতা কম। এখনও মেয়েদের অনেক বেশি পণ্য হিসাবে দেখা হয়। এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে অন্যের খারাপ লাগে।”
এ ক্ষেত্রে সমাজমাধ্যমের বাড়বাড়ন্তকেও কিছুটা দায়ী করেছেন সুদীপ। ইদানীং সমাজমাধ্যমে নিজেদের মতামত দিতে গিয়ে অনেক সময় ব্যক্তি-আক্রমণও করে বসেন কেউ কেউ। যার ফল ভোগ করতে হয় কিছু লোককে। তাই প্রত্যেকের মতে, শালীন এবং অশালীনের সংজ্ঞা প্রত্যেকের কাছে ভিন্ন। কিন্তু এই যুগে দাঁড়িয়ে পোশাকের নিরিখে মানুষকে বিচার করা কোনও ভাবেই কাম্য নয়।