Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

‘পার্টিতে গেলে সোসাইটি পিপলরা বলেন, হ্যান্ডসাম অন্ধ’

‘সাঁঝের বাতি’-র আর্যমান। অভিনয়ে রিজওয়ান রব্বানি শেখ। এই মুহূর্তে টেলিগল্পের একমাত্র দৃষ্টিহীন প্রোটাগনিস্ট এবং অলরাউন্ডার। কেমন সে অভিজ্ঞতা? শুনলেন মৌসুমী বিলকিস ‘সাঁঝের বাতি’-র আর্যমান। অভিনয়ে রিজওয়ান রব্বানি শেখ। এই মুহূর্তে টেলিগল্পের একমাত্র দৃষ্টিহীন প্রোটাগনিস্ট এবং অলরাউন্ডার। কেমন সে অভিজ্ঞতা? শুনলেন মৌসুমী বিলকিস

রিজওয়ান রব্বানি শেখ। নিজস্ব চিত্র।

রিজওয়ান রব্বানি শেখ। নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩:২২
Share: Save:

আর্যমান ও চারুর (দেবচন্দ্রিমা সিংহরায়) এই মুহূর্তের ক্রাইসিস কী?

ওদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বিয়ের পরের যাবতীয় পারিবারিক সমস্যা সামলাতে হচ্ছে।

আর্যমান ঠিক কী রকম?

আর্যমান সব কিছুতে ভাল। বিদেশ থেকে পড়াশোনা করে এসেছে। ফ্যামিলির মিষ্টির বিজনেস দেখে। নতুন নতুন মিষ্টির রেসিপি ইনোভেট করে, ইম্প্রোভাইজ করে। স্পোর্টসে ভাল, চেজ থেকে শুরু করে ইনডোর আউটডোর, সবক’টা গেমসে ভাল। মার্শাল আর্ট করে। হি ইজ ফিজিক্যালি ফিট অ্যান্ড অ্যাক্টিভ। হি ইজ ভার্সেটাইল, হি ইজ অলরাউন্ডার। কিন্তু বাস্কেটবল খেলতে গিয়ে সামহাউ ভায়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যেটা হয়, অপটিক নার্ভ ড্যামেজের জন্য দৃষ্টি হারায়। সে জন্য তার মা ছোটভাইকে দোষারোপ করে। কিন্তু আর্যমান ছোটভাইয়ের দোষ দেখে না। হি ইজ আ গুড হিউম্যান বিইং... ভাল দাদা, ভাল ছেলে... সব দিক থেকে ভাল। ফটোগ্রাফি করত। দৃষ্টি হারানোর পরেও ফটোগ্রাফি করে।

সেটা কী ভাবে?

একটা গ্যাজেট মাথায় লাগাতে হয়, সঙ্গে থাকে হেডফোন। গ্যাজেটটা ইমেজ ক্যাপচার করে সেন্সরের মাধ্যমে সাউন্ডে ট্রান্সফার করে। সেই সাউন্ড শুনে ছবি তুলতে হয়। এ জন্য আর্যমান বিদেশ থেকে অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছে।

আপনি কি বাস্তব জীবনেও অলরাউন্ডার?

আমি সারা ক্ষণ নিজেকে ইম্প্রোভাইজ করি। যখন যে চরিত্র করি ভাল করার চেষ্টা করি। ছবিও তুলি। বিকজ আমার সাবজেক্টও ছিল ফটোগ্রাফি। মিডিয়া সায়েন্স ছিল মাস্টার্সে। যখন ‘প্রতিদান’ বা ‘আঁচল’ করতাম তখন নিজে থেকেই গানবাজনা শিখেছিলাম... পিয়ানো বাজানো, কি-বোর্ড বাজানো। সেলফ্‌ টট। অনলাইন ভিডিয়ো দেখে, নেট সার্ফিং করে শিখেছিলাম। স্পোর্টসে বরাবরই ভাল ছিলাম। এখনও চ্যারিটি ম্যাচ হলে ক্রিকেট, ফুটবল খেলি। অভিনয় করার সময় সত্যি বাস্কেটবল খেলতে হয়েছে। হর্স রাইডিং জানি। এখনও কাজে লাগেনি সেটা অন্য ব্যাপার। তো শর্ট অব বলা যেতে পারে... আই ট্রায়েড টু বি অলরাউন্ডার (হাসি)।

দেবচন্দ্রিমা এবং রিজওয়ান

আগে কী কী কাজ করেছেন?

এর আগে করেছি ‘প্রতিদান’, ‘চোখের বালি’-তে বিহারির চরিত্রটা করেছি। ‘আঁচল’-এ কুশান রায় দিয়ে আমার অভিনয় শুরু।

আরও পড়ুন-‘শ্রীময়ী’-কে পিছনে ফেলে টিআরপি তালিকায় দ্বিতীয় ‘কৃষ্ণকলি’

দর্শক কী বলছেন?

কোনও পার্টিতে গেলে সোসাইটি পিপলরা, ‘আ...! হ্যান্ডসাম অন্ধ, সুন্দর অন্ধ, ব্লাইন্ড চাইল্ড’... এই সব বলে খুব ঠাট্টা করেন, মজা করেন। একটা ফিল্মের প্রিমিয়ারে গিয়েছিলাম। সেখানে এক জন বলছেন, ‘জান, আমার শাশুড়ি বলছে, ‘এত সুন্দর যদি অন্ধ হয় তাহলে আমি অন্ধকেই বিয়ে করবো।’’ উনিই বলেছেন তার ছোট্ট বাচ্চা নাকি আমার দৃশ্য এলেই টিভির সামনে বসে প’ড়ে আর টিভিতে চুমু খেতে শুরু করে। আমি বললাম, ‘বাহ! ছয় থেকে ষাট! এটা তো ভাল। দিস ইজ আ গুড রেসপন্স!’ যাঁরা টেলিভিশন দেখেন না, দেখার সময় নেই, তাঁরাও জানেন গল্পটা কী ভাবে এগোচ্ছে।

বিশেষ ভাবে সক্ষম এবং দৃষ্টিহীনদের কিছু বলবেন?

দৃষ্টি নেই তো কী হয়েছে? বাকি আছে আরও অনেক কিছু... তাঁরা তো হাঁটতে পারেন, গন্ধ নিতে পারেন, স্পর্শ বুঝতে পারেন, শব্দ শুনতে পান। অনেক বিখ্যাত মানুষ আছেন ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড। তাঁরা কিন্তু ওভারকাম করেছেন। সাঁতারু মাসুদুর রহমানের কথাই ভাবুন। লেটস নট থিঙ্ক সামওয়ান ইজ ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড। দে আর নট চ্যালেঞ্জড, দে চ্যালেঞ্জড লাইফ।

আরও পড়ুন-এক হচ্ছে চার হাত, আজই মিথিলার সঙ্গে বিয়ে সৃজিতের

প্রেম হচ্ছে?

না, ওটাই হচ্ছে না শুধু।

কেন?

(একটু ভেবে) সময় ম্যাটার করে। যতটা সময় দিতে হবে অত সময় আমার কাছে নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE