পল্লবীর মৃত্যুরহস্যে নতুন জট পাকাচ্ছে-খুলছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
সাগ্নিক নিজের যে আয়ের হিসাব পুলিশকে দিয়েছিল, তার তুলনায় সাগ্নিকের আয় অনেকটাই বেশি। সূত্র অনুযায়ী, এমন তথ্যই উঠে এসেছে তদন্তকারী দলের হাতে। এই কারণেই সাগ্নিকের আয়ের উৎস খতিয়ে দেখা শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি সাগ্নিকের কোনও বেআইনি আয়ের উৎস ছিল কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সাগ্নিক যে কলসেন্টার চালাতেন বলে জানা গিয়েছে, তার নথিও ভাল ভাবে পরখ করছেন তদন্তকারীরা। সূত্র অনুযায়ী, কল সেন্টারের সব কর্মীকে বেতন হিসেবে নগদ টাকা দিতেন সাগ্নিক। তাই এই কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও সূত্রের খবর।
প্রয়াত অভিনেত্রী পল্লবী দে এবং তাঁর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক চক্রবর্তী কম বয়সেই এত বিলাসবহুল জীবনযাপন করার টাকা কোথা থেকে পেতেন? সেই সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করেন তদন্তকারীরা। সূত্র মতে, পল্লবীর আয়ের হিসাবও খতিয়ে দেখা হবে। ইতিমধ্যেই পল্লবীর পরিবারের কাছ থেকে আয় সংক্রান্ত সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
পল্লবী মৃত্যুরহস্যের প্রথম থেকেই যে নাম বারবার উঠে এসেছে, তিনি পল্লবীর বান্ধবী ঐন্দ্রিলা সরকার। পল্লবীর পরিবারের দাবি ছিল, গোপনে সাগ্নিকের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন ঐন্দ্রিলা। আর সেই কারণেই মরতে হয়েছে পল্লবীকে। তবে সূত্রের খবর, ঐন্দ্রিলার সঙ্গে পল্লবীর সেরকম কোনও ঝামেলার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে পল্লবীর মৃত্যুতে ঐন্দ্রিলার সরাসরি যোগ ছিল কি না, তা এখনও তদন্তসাপেক্ষ।
ঐন্দ্রিলা দাবি করেছিলেন, মাস দুয়েক আগে শহরের এক পার্টিতে সাগ্নিক নাকি তাঁকে যৌন হেনস্থার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি থানায় অভিযোগ জানাবেন বলেও ভেবেছিলেন। কিন্তু পল্লবী কান্নাকাটি করার পর পল্লবীর কথা ভেবেই তিনি থানায় অভিযোগ করেননি বলেও দাবি করেন ঐন্দ্রিলা।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার ১৫ মে পল্লবীর গরফার ফ্ল্যাটে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। অভিনেত্রীর গলায় জড়ানো ছিল বিছানার চাদর। মেয়ে যে এই ভাবে আত্মহত্যা করতে পারেন, তা বিশ্বাস করতে চাননি পল্লবীর বাবা নীলু। তিনি রবিবারই জানিয়েছিলেন, পল্লবী এমন পদক্ষেপ করতে পারেন না। ওঁকে নিশ্চয়ই কেউ খুন করেছে। পরে পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক, ঐন্দ্রিলা-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান তিনি। এর পরই দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের শেষে সাগ্নিককে গ্রেফতার করে গরফা থানার পুলিশ। এই মুহূর্তে জেল হেফাজতে রয়েছেন সাগ্নিক। আলিপুর আদালত তাঁকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
যতই দিন এগোচ্ছে, পল্লবীর মৃত্যুরহস্যে ততই নতুন জট পাকাচ্ছে-খুলছে। উঠে আসছে নতুন নতুন চরিত্র এবং একাধিক দাবিও। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পল্লবী আত্মহত্যা করেছেন বলে উঠে এলেও তাঁর মৃত্যু ঠিক কী কারণে, তা খুঁজতে তৎপর পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy