বছরশেষে ঋতাভরী চক্রবর্তীর বিয়ে। টলিপাড়ায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে তেমনই। পাত্র বলিউডের খ্যাতনামী চিত্রনাট্যকার সুমিত অরোরা। মাঝে প্রেমিককে নিয়ে বিদেশে বেড়াতেও গিয়েছিলেন। ফলে, গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে। এ দিকে শুটিংয়ে ব্যস্ত অভিনেত্রীর সদ্য একটি ভিডিয়ো ভাইরাল। লাল পাড় সাদা শাড়ি, কপালে বড় লাল টিপ। নায়িকা রান্নাঘরে ব্যস্ত। রাঁধতে রাঁধতে মজা করে ছড়াও কেটেছেন, “ডালে বড়ি...ঋতাভরী।”
বিয়ের জোরালো প্রস্তুতি চলছে? তাই কি অবসর পেলে ‘হবু কনে’ রান্নায় ব্যস্ত?
আনন্দবাজার ডট কম-এর প্রশ্ন শুনে অভিনেত্রী সাফ বললেন, “বিয়ের সঙ্গে রান্নার কী সম্পর্ক! আমি কি বরের কাছে গিয়ে শুধুই রান্নাবান্না করব?” তিনি আজ যা সবটাই নিজের চেষ্টায় হয়েছেন, জানিয়েছেন ঋতাভরী। বাড়ি, গাড়ি, বিলাসী জীবন, পেশাদুনিয়ায় প্রতিষ্ঠা— সব। তাই, শ্বশুরবাড়ি গিয়ে রান্নাবান্না নিয়ে থাকবেন, এমন কোনও ভাবনা তাঁর নেই। তার পরেই হাসতে হাসতে বললেন, “আমি ছোট থেকেই আত্মনির্ভর। রান্নাটা ছোটবেলা থেকেই করতে পারি। ফলে, এখনও সুযোগ পেলে রাঁধি।”
তখনই জানা যায়, এ বছর ঋতাভরী বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন না। তাঁর কথায়, “সব দিক দেখেশুনে, নিজেকে গুছিয়ে তার পর বিয়ে করব। যে কোনও কাজ গুছিয়ে করতে ভালবাসি। তাই তাড়াহুড়ো করে এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে চাই না।” পেশাদুনিয়ায় অভিনেত্রী নিজেকে প্রমাণিত করেছেন, প্রতিষ্ঠিতও করেছেন। দাম্পত্য যাতে সুখের হয় তার জন্যই কি এত কিছু? সুখী দাম্পত্য কে না চায়!
বিদেশে হবু দম্পতি সুমিত অরোরা, ঋতাভরী চক্রবর্তী। ছবি: ফেসবুক।
প্রশ্ন শুনে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছেন তিনিও। ঋতাভরী জানতে চেয়েছেন, “এর জন্য আলাদা করে কী করব? আলাদা করে তো কিছুই করার নেই।” বলতে বলতে নিজের ভিতরটা আরও একবার নিজেই যেন আতিপাঁতি খুঁজেছেন। নিজেকে দেখতে দেখতে স্বগতোক্তি করেছেন, “সম্পর্কের জন্য যতটা যা করা উচিত সবটাই করেছি।” এ প্রসঙ্গে উঠে এসেছে তাঁর মা-বাবার বিচ্ছেদের কথাও। অভিনেত্রী এ বিষয়েও কোনও রাখঢাক রাখেননি। তিনি বলেন, “আমার মায়ের দুটো জিনিস ছিল না— নিরাপত্তা আর পায়ের নীচের জমি। বদলে ছিলেন আমার দিদিমা-দাদু। তাঁরা প্রচণ্ড শক্ত ধাঁচের। ওঁদের জন্য আমার মা শক্ত হাতে হাল ধরতে পেরেছেন। আমাদের মানুষ করতে পেরেছেন। নিজের পেশাজীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছেন।” নিজের জীবন থেকে অভিনেত্রী উপলব্ধি করেছেন, পায়ের তলায় জমি না থাকার জন্য কত মেয়ে অত্যাচার সহ্য করে শ্বশুরবাড়িতে থেকে যেতে বাধ্য হন।
ছোট থেকে খুব অনুভূতিপ্রবণ ঋতাভরী। “মাকে অনেক কষ্ট পেতে, কষ্ট করতে দেখেছি। তাই প্রথম থেকে নিজেই নিজেকে গড়েছি। বিচ্ছেদ হলে বর আমায় খোরপোশ দেবে কি দেবে না— এ সব মাথাতেই আনি না। একজন নারীর নিরাপদে থাকার জন্য যা যা প্রয়োজন সব নিজে গুছিয়ে নিয়েছি। যদি প্রস্তুতির কথা বলেন তা হলে বলতে পারেন এটাই সেই প্রস্তুতি”, বলেন তিনি।
আরও পড়ুন:
ঋতাভরী মনে করেন, সব মানুষেরই ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। চারপাশে বিয়ে ভাঙার বহর দেখে নিজের দাম্পত্য তিনি নাকি বাড়তি কোনও স্বপ্নই দেখেন না। কিন্তু তেমন কিছু ঘটলেও কোনও ভাবেই তলিয়ে যেতে চান না তিনি। অভিনেত্রীর কথায়, “আমি কারও ছায়া হয়ে বাঁচতে পারব না।”