তাঁর কাছের-দূরের মানুষেরা জানতেন, তিনিই পরিচালক। বাংলা বিনোদন দুনিয়াও তেমনই জানত। ‘সোয়েটার’, ‘হৃদপিণ্ড’-খ্যাত শিলাদিত্য মৌলিক দ্বিতীয় হিন্দি ছবি ‘চড়ক’ পরিচালনা করেছেন। প্রযোজক ‘দ্য কেরালা স্টোরি’-খ্যাত পরিচালক সুদীপ্ত সেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নাকি বদলে গিয়েছে। আনন্দবাজার ডট কমের কাছে শিলাদিত্যের অভিযোগ, “কান চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি নিয়ে গিয়েছেন প্রযোজক। সেই আমন্ত্রণপত্রে পরিচালক হিসাবে আমার নামই নেই! এটা নতুন নয়। বেশ কিছু দিন ধরেই নানা জায়গায় দেখছি, পরিচালক হিসাবে আমার নাম দেওয়া হচ্ছে না! সর্বত্র লেখা, সুদীপ্ত সেনের ছবি। যে স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য কেবল পরিচালক।” বিষয়টি জানতে তিনি প্রযোজকের সঙ্গে যোগাযোগও করেছিলেন। সুদীপ্তর পাল্টা যুক্তি, “তোমার নাম কেউ চিনবে না। সকলে আমায় চেনে। তাই প্রচারের স্বার্থে আমন্ত্রণপত্রে আমার নাম ব্যবহার করছি।”
শিলাদিত্যের দাবি, তিনি একা নন, বিষয়টি টলিউডের আরও অনেকেই খেয়াল করেছেন। তাঁরা জানতে চেয়েছেন পরিচালকের কাছে। অনেকে সরাসরি সমাজমাধ্যমে উষ্মা উগরে দিয়েছেন। পরিচালকের ক্ষোভ, “দিনের পর দিন পুরুলিয়া, ঝাড়খণ্ডে থেকে নিজেকে নিংড়ে দিয়ে শুটিং করলাম। সে সবই কি তা হলে মিথ্যে?” তাঁর আফসোস, এত দিন ধরে কাজ করছেন। এ ভাবে কেউ কোনও দিন তাঁকে অপমান করেননি!
কবে থেকে সুদীপ্ত শিলাদিত্যের নাম সরিয়ে সর্বত্র নিজের নাম ব্যবহার করছেন?
এই আমন্ত্রণ পত্রেই নাম নেই শিলাদিত্য মৌলিকের। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্নের জবাবে পরিচালকের দাবি, “বেশ কিছু দিন ব্যাপারটা লক্ষ করছি। দু-একবার দেখার পরেই যোগাযোগ করেছিলাম। তখন আমায় বলেছিলেন, ‘টিজ়ার, ট্রেলার সর্বত্র পরিচালক হিসাবে তোমারই তো নাম যাচ্ছে! কেবল আমন্ত্রণপত্রের ক্ষেত্রে আমার নাম ব্যবহার করেছি’। ক্রমশ প্রযোজকের এই প্রবণতা বেড়েছে। যা মোটেই ভাল লাগছে না।” শিলাদিত্যের অভিযোগ আরও। তিনি জানিয়েছেন, সুদীপ্ত ছবিটি নিয়ে ফ্রান্সে গিয়েছেন খুবই ভাল কথা। সেখানেও তিনি বাদ পড়েছেন। তাঁকে যাওয়ার জন্য একবারও অনুরোধ করেননি প্রযোজক। তার পরেই দেখছেন এই ঘটনা।
শিলাদিত্য কি তা হলে আইনি পথে হাঁটবেন? এখনও তেমন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি পরিচালক। জানিয়েছেন, তাঁর হয়ে বহু মানুষ প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাতেও নাকি প্রবল আপত্তি প্রযোজকের। তিনি ফোন করে পরিচালককে নির্দেশ দিচ্ছেন, “ওঁদের বলো, ওঁরা যেন পোস্ট নামিয়ে নেন।” শিলাদিত্যের কথায়, “প্রত্যেকে নিজের জায়গা থেকে মতামত জানাচ্ছেন। আমি কেন তাঁদের বলতে যাব!” পাশাপাশি এও কটাক্ষ তাঁর, কেবল এই নির্দেশ ছাড়া বাকি সময় সুদীপ্তকে ফোনেই পাওয়া যাচ্ছে না।