Advertisement
E-Paper

‘হঠাৎ এক দিন মা আমাকে মারধর করা বন্ধ করে দিল’, মা-কে লেখা চিঠি নিয়ে কী বললেন জয়া-শাশ্বত?

মা-কে লেখা চিঠিতে এক পাঠক লিখেছেন, তাঁর মা পরমা সুন্দরী। তাই তাঁর দিকে না তাকিয়ে স্কুলের ছেলে বন্ধুরা কেবল মায়ের দিকেই তাকিয়ে থাকত। সেই সব চিঠি পড়তেই পড়তেই নানা কথা বললেন দুই তারকা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৫ ১৮:৫৩
চিঠি পড়তে গিয়ে আবেগে ভাসলেন জয়া আহসান ও শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।

চিঠি পড়তে গিয়ে আবেগে ভাসলেন জয়া আহসান ও শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

চিঠি। ছোট্ট এই জিনিসটার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে তিরতির জলের মতো এক বুক অপেক্ষা। চিঠি মানেই দূরের এক জনের হাতের ছোঁয়া পাওয়া। মনের নাগাল পাওয়া। একগুচ্ছ চিঠি পড়তে পড়তে এমনই কিছু অনুভব উঠে আসছিল জয়া আহসান ও শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের কথায়। আনন্দবাজার ডট কমের স্টুডিয়োয় এই একান্ত আলাপচারিতায় হাজির হয়েছিলেন দুই তারকা। এখন তাঁরা ব্যস্ত ‘ডিয়ার মা’ ছবির প্রচার নিয়ে। তার অংশ হিসেবেই বেশ কিছু চিঠি এসেছে পাঠকদের কাছ থেকে। সেই সব চিঠি পড়তেই পড়তেই ওঁরা পাড়ি দিলেন স্মৃতির সরণিতে। মুহূর্তে ফিরে গেলেন ছোটবেলায়। মায়ের হাতের মার থেকে স্কুল পালিয়ে সিনেমা, অতীত খুঁড়ে আনা একের পর এক ধূসর ছবি যেন দুই তারকার চোখের সামনে জীবন্ত। পাঠকদের পাঠানো ‘মা-কে লেখা চিঠি’ যেন টাইম মেশিনের মতো হয়ে উঠল তাঁদের কাছে।

প্রথম চিঠিটা পড়ার ঠিক আগেই শাশ্বত বললেন, “বহু বছর পরে চিঠি পড়ব।” শুনেই জয়া বললেন, “একটা সময়ে আমরা অপেক্ষা করে থাকতাম, কখন চিঠি আসবে। চিঠি মানেই তো কারও হাতে লেখা কালি। কিছু চিঠিতে আবার সুগন্ধী মাখানো থাকত।”

স্টুডিয়োয় উপস্থিত অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীও। আড্ডা, আবেগ, রসিকতার মাঝেই পরিচালক প্রশ্ন ছুড়ে দেন দুই তারকার দিকে, “আজ নিজের মাকে চিঠি লিখলে, ঠিক কী কী বলতে?” শাশ্বত বলেন, “মাকে কোনও দিন চিঠি লিখিনি। তবে আজ লিখলে একটা বিষয় জানতে চাইতাম। আমার মনে আছে, মা আমাকে একটা ঘটনার পরে আর মারেননি। বাবার দেওয়া কাচের বালা ভেঙে গিয়েছিল আমার পিঠে। ওই জন্যই বোধহয় আর মারেননি মা।”

জয়া ছোট থেকেই নাকি মাকে চিঠি লিখতেন। এখনও ফ্রিজ ম্যাগনেটে কাগজে রোজকার ‘টু-ডু’ লিস্ট লিখে আসেন। অভিনেত্রী বলেন, “আসলে মায়ের সঙ্গে আমার রসায়ন সম্পূর্ণ অন্য রকম। বাবা খুব সংসারী মানুষ ছিলেন না। আর মায়ের সঙ্গে একটা দূরত্ব বজায় থাকত। কোনও দিনই মাকে জড়িয়ে ধরিনি সেই ভাবে। তবে এখন মনে হয়, মা আর আমি একটাই মানুষ। একটাই সত্তা। অবয়ব দুটো খালি আলাদা। একটা কথা মাকে কখনও আলাদা করে বলিনি। আজ চিঠি লিখলে বলব, ‘মা, তোমাকে খুব ভালবাসি’।”

স্মৃতিকাতরতার ক্রম-আলাপনের জেরে স্টুডিয়োর পরিবেশ তখন বেশ ভারী। সেই আবহ খানিকটা হালকা করতে পরিচালক পরামর্শ দেন “বুঝলে, চিঠিগুলো একটু ক্রিস্‌পি ভাবে পড়তে হবে।” পর্দার বাইরেও রসবোধের জন্য পরিচিত শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। যে কোনও বিষয়কে অনায়াসে রসিকতার পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন তিনি। অনিরুদ্ধের ছোড়া সহজ ‘বল’টা তিনিও ছাড়ার পাত্র নন। অনিরুদ্ধের পরামর্শ শুনেই শাশ্বতের উত্তর, “খাবারের বাইরে তুমি যেতে পারবে না! ক্রিস্‌পি? ‘ক্রিস্‌পি ফ্রায়েড লেটার’ যেন।” শাশ্বতের কথা শুনেই হাসির রেশ খানিকটা উষ্ণতা ছড়াল স্টুডিয়োর বরফ-শীতল পরিবেশে।

চিঠি লেখার কলমের কালির রঙেও নাকি থাকত রকমফের। কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে বাংলাদেশের অভিনেত্রী বললেন, “হ্যাঁ, মনের অবস্থা অনুযায়ী কালির রং ব্যবহার করা হত।” মা-কে লেখা চিঠিতে এক পাঠিকা লিখেছেন, তাঁর মা পরমা সুন্দরী। তাই তাঁর দিকে না তাকিয়ে স্কুলের পুরুষ বন্ধুরা কেবল মায়ের দিকেই তাকিয়ে থাকত। “এই একই অভিজ্ঞতা রয়েছে আমারও। আমার মা-ও এত সুন্দরী, সমস্ত মনোযোগ তাঁর দিকেই সকলের থাকে”, বলে উঠলেন জয়া।

জয়ার কাছে চিঠি খুব রোম্যান্টিক একটা ব্যাপার। চিঠি পড়তে পড়তে মজা করে নিজেই বললেন, “একটা সময়ে প্রায়ই লেটার বক্স খুলে দেখে নিতাম কোনও চিঠি এসেছে কি না।” ছোটবেলায় ফিরে গেলেন শাশ্বতও। শৈশবে স্কুল পালিয়ে ছবি দেখার অভিজ্ঞতা তাঁর এক বারই। হাসতে হাসতেই শাশ্বত বলেন, “মনে আছে স্কুলের ব্যাগে জামা নিয়ে গিয়েছিলাম। তার পরে ‘স্যামসন অ্যান্ড ডিলাইলা’ দেখতে গিয়েছিলাম।” চিঠি পড়া পর্বের মাঝেই উঠে এল শাশ্বত-কন্যা হিয়ার কথা। অভিনেতা বললেন, “মেয়ের জন্মের পরে এক জন আমাকে বলেছিলেন, ‘ওর নাম মহাশ্বেতা রাখুন’। শাশ্বত ও মহুয়া— এই দুই নাম মিলিয়ে নামকরণের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এই নামের মধ্যে এমনই একটা ভার রয়েছে যে, একটা বাচ্চার নাম মহাশ্বেতা হতে পারে, কল্পনাতেই আসেনি। তাই ওর নাম রাখা হয় হিয়া।”

এই বছরের শুরুতে শাশ্বত তাঁর মাকে হারিয়েছেন। মেয়ের কথা বলতে গিয়ে অভিনেতা বললেন, “মায়েরা আমাদের কী ভাবে বড় করেছেন, সেটা বোঝা যায় আমাদের সন্তান হলে। আমাদের মধ্যেও তখন ওই বৈশিষ্ট্যগুলো দেখা যায়।” সহমত জয়াও। চিঠিপর্বের আড্ডার মধ্যেই খাওয়াদাওয়া। খেতে খেতেই জয়া বললেন তাঁর অন্য আর একটি ছবি ‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’র কথা। চিঠিপর্ব সেরে বাড়ি ফিরেই সেই ছবির সংলাপ নিয়ে বসবেন। সংলাপ মুখস্থ না হলে, অভিনয় ঠিক হয় না। নিজেই জানান জয়া।

Dear Maa Jaya Ahsan Saswata Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy