জয়ার সাফ কথা, ক্যামেরার সামনে কাউকে তিনি তাঁর কাপড় ছিঁড়তে দেবেন না। ছবি: সংগৃহীত।
হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘গুড্ডি’ (১৯৭১) ছবি দিয়ে বলিউডে অভিনয় শুরু করেন জয়া বচ্চন। তবে, ক্যামেরার সামনে খুব যে সড়গড় ছিলেন, এমনটা নয়। কিছু কিছু বিষয়ে আপত্তিও ছিল তাঁর।
জয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ১৯৭২ সালে ‘এক নজ়র’ ছবির শুটিংয়ের একটি ঘটনার কথা। ছবির পরিচালক ছিলেন বিআর ইশারা।
ছবিতে জয়ার সহ-অভিনেতা ছিলেন অমিতাভ বচ্চন। ছবিতে একটি ধর্ষণের দৃশ্য ছিল। পঞ্চাশ বছরের পুরনো স্মৃতি হাতড়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘‘আমাকে বলা হয়েছিল, ওই দৃশ্যে আমার পোশাক ছেঁড়া হবে। আমি বলেছিলাম, এটা কখনওই করতে দেব না। পরিচালকের সঙ্গে এই নিয়ে আমার বিস্তর তর্কাতর্কি হয়। পরিচালক বাবুদা (বিআর ইশারা) আমাকে হুমকি দেন। আমিও বলি, তিনি যা খুশি করে নিতে পারেন।’’
জয়া আরও জানান, প্রযোজক তাঁকে শাসিয়েছিলেন যে, তিনি শিল্পীদের সংগঠনে অভিযোগ করবেন। তাতেও নিজের জায়গা থেকে সরেননি জয়া। স্পষ্ট বলেন, ‘‘যদি জোর করে আমায় এটা করতে বাধ্য করা হয়, তা হলে এমন খারাপ করে অভিনয় করব যে, ছবিটাই নষ্ট হয়ে যাবে।’’
নিজের যুক্তিতে শেষ অবধি অনড় ছিলেন অভিনেত্রী। এই অবস্থায় শুটিং বাতিল হয়ে যায়। দু’দিন স্থগিত হয়ে যায় কাজ।
এই সময় জয়াকে বোঝান অমিতাভ। তিনি বলেন, ‘‘তুমি এখানে কাজ করতে এসেছ। তোমার চরিত্রটা যদি এমন হয়, এ ভাবেই লেখা হয়, তোমায় এটাই করতে হবে। তুমি কী করে না বলো?’’
জয়ার তবু এক কথা। জানান, ক্যামেরার সামনে কাউকে তিনি তাঁর কাপড় ছিঁড়তে দেবেন না। শেষ অবধি অবশ্য সমঝোতা হয়। পরিচালক তাঁকে স্বাভাবিক ভাবে অভিনয় করতে বলেন। জানান, কী দাঁড়াল শেষ অবধি, সেটা তাঁরা দেখে নেবেন পরে।
জয়া বলেন আরও এক অভিজ্ঞতার কথা। বলেন, ‘‘যে বেচারা খলনায়ক ছবিতে আমায় ধর্ষণের দৃশ্যে অভিনয় করেছিল, তাকে জোরে আঘাত করেছিলাম। তার নাম ছিল সুধীর। ভয়-টয় পেয়ে সে বলে ওঠে, ‘‘আমি ওকে ধর্ষণ করতে চাই না।’’ বলতে বলতে হেসে ওঠেন বর্ষীয়সী অভিনেত্রী।
তিনি জানান, ক্যামেরার সামনে শরীর প্রদর্শন নিয়ে ছুতমার্গ ছিল তাঁর। জয়ার মতে, ছোট শহর থেকে এসেছিলেন তিনি, মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হয়েছিলেন— তাই হয়তো এগুলি তাঁর মনে গেঁথে গিয়েছিল। পুরুষশাসিত ইন্ডাস্ট্রিতে জয়ার এই দৃঢ় মানসিকতা অবশ্য নেটাগরিকদের বাহবা পেয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy