এই মুহূর্তে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে বাংলা রিয়্যালিটি শো ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর একটি বিশেষ পর্ব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা নৃত্যনাট্য ‘চণ্ডালিকা’য় সত্তর দশকের বিখ্যাত হিন্দি ছবি ‘আঁধি’র একটি গানের প্রয়োগ এবং তার উপস্থাপনা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন, বিরক্ত দর্শক থেকে টলিপাড়ার অন্দরের অনেকে। ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর এই বিশেষ পর্বে অভিনেত্রী দেবলীনা দত্তের উপস্থাপনা, এবং তাঁর পরবর্তী মন্তব্য নিয়ে তৈরি হয়েছে বিস্তর বিতর্ক। এই বিশেষ পর্বে অতিথি হয়ে গিয়েছিলেন নৃত্যশিল্পী অভিনেত্রী মমতা শঙ্কর। মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তীর পাশে বিচারকের আসনে ছিলেন অঙ্কুশ হাজরা, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, যিশু সেনগুপ্ত এবং কৌশানি মুখোপাধ্যায়। বিচারকদের একাংশ বাহবা দিলেও যিশু সেনগুপ্ত ওই দিনের শো নিয়ে তেমন কোনও মন্তব্য করেননি, ওই পর্বের সম্প্রচারণ অন্তত সে কথাই বলছে।
আরও পড়ুন:
এ বার দেবলীনার নাচের উপস্থাপনা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করলেন অভিনেতা যিশুর দিদি রাই সেনগুপ্ত। দেবলীনাকে রীতিমতো ‘অশিক্ষিত’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
এই নৃত্যনাট্যে গৌতম বুদ্ধের প্রিয় শিষ্য আনন্দের বেশে দেখা যায় দেবলীনাকে। একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ঠিক যেমন দেখতে হয় সে ভাবেই ক্যামেরার সামনে ধরা দেন দেবলীনা। মাথা ন্যাড়া, পরনে গেরুয়া বস্ত্র। পোশাক নয়,আপত্তি ওঠে নাচের প্রদর্শন নিয়ে। অভিনেত্রী ও তাঁর নৃত্যপ্রশিক্ষককে নিয়ে যখন সমালোচনা তুঙ্গে, সেই সময় আনন্দবাজার ডট কমের কাছে দেবলীনা প্রশ্ন তোলেন, আদৌ কি ‘চণ্ডালিকা’ নৃত্যনাট্য বা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে পড়াশোনা করে সমালোচকেরা প্রশ্ন তুলছেন? অভিনেত্রীর যুক্তি, “এর আগে আমি তিন বার চণ্ডালিকার ‘প্রকৃতি’করেছি। রবীন্দ্রনাথের এই লেখা আমার সবচেয়ে প্রিয়। ‘চণ্ডালিকা’ নিয়ে আমি অনেক পড়াশোনাও করেছি। তার ভিত্তিতে বলছি, প্রকৃতির আনন্দের প্রতি প্রেম ছিল বললে খুব কম বলা হবে। চণ্ডালিকার আনন্দের প্রতি যে পাগলের মতো ভালবাসা সেটাই নিজের লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।” আনন্দ ও প্রকৃতির সম্পর্কে যেভাবে ‘ফিউশন-এর ছোঁয়া দিয়েছেন নৃত্যপ্রশিক্ষকরা তাতেই পূর্ণ সমর্থন ছিল দেবলীনার। এবং এই ‘ফিউশন’ সঙ্গত ঠেকেছিল তাঁর কাছে বলেই জানান অভিনেত্রী। দেবলীনার মন্তব্যে যেন গর্জে উঠলেন রাই। সমাজমাধ্যমে দেবলীনার উদ্দেশে লেখেন, ‘‘ বলতে খারাপ লাগলেও দেবলীনা দত্ত তোর এই অদ্ভুত যুক্তি মানতে পারছি না। আমার মনে হয় তুই কিংবা তোর নৃত্য প্রশিক্ষকরা অন্তত ‘চন্ডালিকা’ পড়িসনি। তোর অনেক যুক্তি পড়ছি, কিন্তু আদতে তোর মধ্যে অশিক্ষা ছাড়া কিছু খুঁজে পাইনি। ভুলটা ভুলই। ঈশ্বর তোর মঙ্গল করুন।’’